বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: ওগো আমিনা তোমার দুলালে আনিয়া আমি ভয়ে ভয়ে মরি
ওগো আমিনা তোমার দুলালে আনিয়া আমি ভয়ে ভয়ে মরি
এ নহে মানুষ বুঝি ফেরেশ্তা
আসিয়াছে রূপ ধরি'॥
সে নিশীথে যখন বক্ষে ঘুমায়
চাঁদ এসে তারে চুমু খেয়ে যায়
দিনে যবে মেষ চারণে সে যায় মেঘ
চলে ছায়া করি',
সাথে সাথে তার মেঘ চলে ছায়া করি'॥
মনে হয় যেন লুকাইয়া রাতে তোমার
শিশুর পায়
কত ফেরেশ্তা হুর-পরী এসে সালাম
করিয়া যায়।
সে চলে যায় যবে মরুর উপরে
বস্রা গোলাপ ফোটে থরে থরে
তার চরণ ঘিরিয়া কাঁদে ফুলবনে
অলিকুল গুঞ্জরি'॥
- ভাবসন্ধান: আরবের রীতি ও ঐতিহ্য অনুসারে, হজরত মুহম্মদ (সাঃ)-এর জন্মের
পর তাঁকে নিকটস্থ বেদুইন পল্লীর হালিমা নামক এক ধাত্রীর কাছে পাঠানো হয়। শিশু
মুহম্মদ সাঃ-এর প্রতিপালনের সময়, হালিমা কিছু অলৌকিক ঘটনার মুখোমুখী হন। সে সকল
ঘটনাই তিনি নবির মা হালিমার কাছে উপস্থাপন করেছেন। কবি এই গানটিতে হালিমার নবি
সম্পর্কে অতিরঞ্জিত কথন হলেও, এই গানের ভিতর দিয়ে নবির প্রশংসাসূচক মহিমাকে উপস্থাপন করার চেষ্টা
করা হয়েছে।
নবির সাথে ঘটা অলৌকিক দৃশ্য দেখে হালিমা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে রয়েছেন। তাঁর কাছে মনে হয়েছে
শিশু মুহম্মদ (সাঃ) মানুষরূপে জন্মগ্রহণকারী হয়তো ফেরেশ্তা। তিনি যখন হালিমার
বুকে ঘুমান, তখন চাঁদ এসে তাঁর মুখচুম্বন করে। তিনি যখন মেষ চারণে মাঠে যান,
তখন তাঁকে ছায়া দেওয়ার জন্য মেঘ সাথে সাথে চলে। রাতের অন্ধকারে ফেরেশ্তা ও হুর-পরীরা
তাঁর পায়ে সালাম করে যায়। তিনি যখন মরুভূমির তপ্ত ধূলার উপর দিয়ে হেঁটে যান,
তখন বস্রা গোলাপ ফোটে থরে থরে। তাঁর চরণ ঘিরে কাঁদে ফুলবনের গুঞ্জরিত ভ্রমরেরা।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে
কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৪৪) মাসে
এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির
প্রথম রেকর্ড করা হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ২ মাস।
-
গ্রন্থ:
- নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট।
তৃতীয় সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ১৯৭০। গান ৮৬১]
-
রেকর্ডসূত্র:
এইচএমভি [আগষ্ট ১৯৩৭ (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৪৪)। এন ৯৯৩৯। শিল্পী: পরীবাণু। সুর
কমল দাশগুপ্ত]