বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: একেলা গোরী জল্কে চলে গঙ্গাতীর
রাগ : জৌনপুরী, তাল :
দাদ্রা
একেলা গোরী জল্কে চলে গঙ্গাতীর
অঙ্গে ঢুলিয়া পড়ে লালসে অলস সমীর॥
কাঁকনে কলসে বাজে
কত কথা পথ মাঝে
আঁচল চুমিছে শিশির॥
তটিনীতে চলে কি গো
সোনার বরণ মায়া-মৃগ,
নয়নে আবেশ মদির॥
-
ভাবার্থ:
কবি এই গানে,কোনো এক অপরূপা গৌরবর্ণার (ফর্সা, ভিন্নার্থে সুন্দরী),যৌবন-রূপ-লাবণ্যকে রূপকতার মধ্য দিয়ে তুলে ধরেছেন। গানের স্থায়ীতে প্রথমেই উঠে এসেছে রূপকতার মধ্য দিয়ে সেই অপরূপা রূপ বর্ণনা। এই গৌরবর্ণা একাকী গঙ্গায় চলেছে জল আনার জন্য। আর তার অপরূপ দেহসৌন্দর্যে মোহিত হয়ে,অলস বাতাসও যেন কাম-লালসায় অঙ্গে ঢলে পড়ছে।
অন্তরাতে পাই অপরূপার গঙ্গা তীরে যাওয়ার একটি চিত্ররূপ। অপরূপার চলার ছন্দে,কাঁকনের আঘাতে তার কাঁখের কলসিতে ফুটে উঠছে যেন বাঙ্ময়ধ্বনি। আর,যেন তার লুটিয়ে পড়া যৌবনসম আঁচলের চুম্বনস্পর্শ আবেশিত করে চলেছে পথ-শিশিরকে।
দ্বিতীয় অন্তরাতে,কবি এই অপরূপাকে এক অপার্থিব স্বর্ণময়ী মায়ামৃগের সাথে তুলনা করেছেন। যে মায়ামৃগ রূপের ছটায় মোহিত করে, যার মোহনীয়া নয়নে রয়েছে মদির আহ্বান; সে শুধু প্রবল আকর্ষণে কাছে টানে, কিন্তু ধরা দেয় না। কবির কাছে এই অপরূপা তেমনি মোহনীয়া, কিন্তু অধরা।
গানটির সুরাঙ্গে রয়েছে একটি লীলায়িত কামনামদির ভঙ্গিমা। ফলে বাণী ও সুরের মেলবন্ধনে বিকশিত হয়ে উঠেছে শৃঙ্গারধর্মী রস।
-
রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে
কিছু জানা যায় না। ১৩৩৯ বঙ্গাব্দের আষাঢ় (জুলাই ১৯৩২) মাসে প্রকাশিত '
সুর-সাকী' গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৩
বৎসর ১ মাস।
- গ্রন্থ:
- সুর-সাকী
- প্রথম সংস্করণ [আষাঢ় ১৩৩৯ বঙ্গাব্দ। জুলাই ১৯৩২)]
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, চতুর্থ খণ্ড। বাংলা একাডেমী,
ঢাকা। [জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮, মে ২০১১। সুর-সাকী। ৪০। জৌনপুরী-দাদরা। পৃষ্ঠা: ২৪৫-২৪৬]
- নজরুল-সঙ্গীত
সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। রাগ: জৌনপুরী, তাল: দাদরা
। গান সংখ্যা ৯২৩। পৃষ্ঠা: ২৮৪]
- রেকর্ড: টুইন। সেপ্টেম্বর ১৯৩২ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৩৯)। এফটি ২২১৮। শিল্পী: মিস ঊষারাণী
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রেম
- সুরাঙ্গ: রাগাশ্রয়ী