শুন     নলিনী, খোলো গো আঁখি-
‌‌        ঘুম     এখনো ভাঙিল না কি!
        দেখো, তোমারি দুয়ার-’পরে
        সখী,   এসেছে তোমারি রবি॥
        শুনি    প্রভাতের গাথা মোর
        দেখো ভেঙেছে ঘুমের ঘোর,
   জগত উঠেছে নয়ন মেলিয়া নূতন জীবন লভি।
তবে  তুমি কি সজনী জাগিবে নাকো,
                আমি যে তোমারি কবি॥
‌‌    প্রতিদিন আসি, প্রতিদিন হাসি,
‌‌‌    ‌        প্রতিদিন গান গাহি-
‌‌    প্রতিদিন প্রাতে শুনিয়া সে গান
            ধীরে ধীরে উঠ চাহি॥
    আজিও এসেছি, চেয়ে দেখো দেখি
            আর তো রজনী নাহি।
    আজিও এসেছি, উঠ উঠ সখী,
            আর তো রজনী নাহি।
    সখী,     শিশিরে মুখানি মাজি
    সখী,     লোহিত বসনে সাজি
দেখো  বিমল সরসী-আরশির ’পরে অপরূপ রূপরাশি।
            থেকে থেকে ধীরে হেলিয়া পড়িয়া
            নিজ মুখছায়া আধেক হেরিয়া
ললিত অধরে উঠিবে ফুটিয়া শরমের মৃদু হাসি॥

• পাণ্ডুলিপির পাঠ: রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায় নি।
• তথ্যানুসন্ধান
  • ক. রচনাকাল ও স্থান: ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে রবীন্দ্রনাথকে বিলেতে ব্যরিষ্টারি পড়ার জন্য, পারিবারিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ইংরেজি ভাষা এবং ইংরেজদের আদব-কায়দা শেখার জন্য, রবীন্দ্রনাথকে বোম্বাইয়ের তরখড় পরিবরের পাঠানো হয়। এই পরিবারে মেয়ে আন্না তড়খড় (ডা: আত্মারাম পাণ্ডুরামের কন্যা), রবীন্দ্রনাথকে বিলেতের উপযোগী করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আন্না রবীন্দরনাথের কাছে একটি কাব্যিক নাম চেয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁর নাম দিয়েছিলেন 'নলিনী'। রবীন্দরনাথ তাঁর আত্মজীবনীমূলক 'ছেলেবেলা' গ্রন্থে লিখেছেন- 'কবির কাছ থেকে একটা ডাক নাম চাইলেন, দিলেম জুগিয়ে- সেটা ভালো লাগল তাঁর কানে। ইচ্ছে করেছিলেম সেই নামটি আমার কবিতার ছন্দে জড়িয়ে দিতে। বেঁধর দিলুম সেটাকে কাব্যের গাঁথুনিতে; শনলেন সেটা ভোর বেলাকার ভৈরবীর সুরে; বললেন, 'কবি তোমার গান শুনলে আমি বোধ হয় আমার মরণদিনের থেকেও প্রাণ পেয়ে জেগে উঠতে পারি। এই সময়ের রচিত গানের ভিতরে- 'নলিনী' শব্দের বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ব্যবহার এই গানেই পাওয়া যায়। রবীন্দ্রনাথ ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বোম্বাইয়ে ছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ১৭ বৎসর ৪-৫ মাস।
     
  • খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
    • গ্রন্থ:
      • কাব্যগ্রন্থ
        • অষ্টম খণ্ড [মজুমদার লাইব্রেরি, ১৩১০। গান। ললিত-খেমটা। পৃষ্ঠা: ৩-৪]  [নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
        • দশমখণ্ড [ইন্ডিয়ান প্রেস ১৩২৩ বঙ্গাব্দ), বিবিধ সঙ্গীত। পৃষ্ঠা: ১১৯-১২০] [নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
      • কাব্যগ্রন্থাবলী [আদি ব্রাহ্মসমাজ প্রেস, ১৩০৩। কৈশোরক । প্রভাতী। পৃষ্ঠা: ১] [নমুনা]
      • গান
        • প্রথম সংস্করণ [সিটি বুক সোসাইটি, ১৩১৫ বঙ্গাব্দ। গান। ললিত-একতালা। পৃষ্ঠা: ১-২][নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
        • দ্বিতীয় সংস্করণ [ ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৩১৬ বঙ্গাব্দ। ললিত -একতালা। পৃষ্ঠা: ১৭২, ১৭৩। [নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
        • ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস, ১৩২১ বঙ্গাব্দ। পৃষ্ঠা: ৯৬-৯৭।[নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
      • গানের বহি ও বাল্মীকি প্রতিভা [আদি-ব্রহ্মসমাজ যন্ত্র, ১৩০০ বঙ্গাব্দ।  ললিত-তাল খেমটা। পৃষ্ঠা: ১৬৮-১৬৯ ।[নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
      • গীতবিতান
        • প্রথম খণ্ড (প্রথম সংস্করণ) [বিশ্বভারতী, মাঘ ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ। কৈশোরক (১৩০৩ বঙ্গাব্দ) থেকে গৃহীত হয়েছিল। প্রথম গান। পৃষ্ঠা : ১-২] [নমুনা: প্রথমাংশ , দ্বিতীয়াংশ]
        • অখণ্ড সংস্করণ, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী ১৩৮০)। প্রেম ও প্রকৃতি ৯।
      • রবিচ্ছায়া [সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র, ১২৯২। বিবিধ ৪২। ললিত-খেমটা। পৃষ্ঠা: ৩৮-৩৯। [নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
      • রবীন্দ্রগ্রন্থাবলী (হিতবাদী ১৩১১)। ললিত খেমটা। গান সংখ্যা ১৬৭। পৃষ্ঠা: ১০০৩। [নমুনা
      • শৈশবসঙ্গীত 
        • প্রথম সংস্করণ। (আদি ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র ১২৯১)। শিরোনাম: প্রভাতী। পৃষ্ঠা: ৯৬-৯৭। [নমুনা: প্রথমাংশ,  শেষাংশ]
        • রবীন্দ্ররচনাবলী। অচলিত সংগ্রহ, প্রথম খণ্ড। বিশ্বভারতী। মাঘ ১৩৯২, ১৯০৭ শক। প্রভাতী। ৪৯১-৪৯২
      • স্বরবিতানবিংশ (২০) খণ্ডের চতুর্থ গান, পৃষ্ঠা ১৯-২২। [নমুনা]
        [তথ্য]
  • গ. সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলী:
    • স্বরলিপিকার: ইন্দিরাদেবী চৌধুরানী
    • বিষয়াঙ্গ: প্রেম ও প্রকৃতি
    • সুরাঙ্গ: রাগাশ্রয়ী
    • রাগ: ললিত
    • তাল: খেমটা
    • গ্রহস্বর: সা
    • লয়: মধ্য