বিষয়: 
		রবীন্দ্রসঙ্গীত। 
		গান সংখ্যা:
		শিরোনাম: 
		
সুরের গুরু, দাও গো সুরের দীক্ষা
		পাঠ 
ও পাঠভেদ:
       সুরের গুরু, দাও গো সুরের দীক্ষা—
মোরা  সুরের কাঙাল, এই আমাদের ভিক্ষা॥
       মন্দাকিনীর ধারা,    উষার শুকতারা,
       কনকচাঁপা কানে কানে যে সুর পেল শিক্ষা॥
       তোমার সুরে ভরিয়ে নিয়ে চিত্ত
       যাব যেথায় বেসুর বাজে নিত্য।
       কোলাহলের বেগে     ঘূর্ণি উঠে জেগে,
       নিয়ো তুমি আমার বীণার সেইখানেই পরীক্ষা॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি RBVBMS 171-এর ১৯ পৃষ্ঠায় গানটি পাওয়া যায়। [নমুনা]
পাঠভেদ
	ভাবসন্ধান:
“গান” উপবিভাগের এ 
	গানটিতে “সুরের গুরু” বলতে রবীন্দ্রনাথ স্রষ্টাকে বুঝিয়েছেন। সৃষ্টির উত্স 
	হিসেবে সূর্যকে কল্পনা করলে স্রষ্টা হিসেবে সূর্যের ভূমিকার কথা স্মরণ করা যায়। 
	মনে পড়ে, গীতবিতান-এর “ভূমিকা” গানটিতে সূর্যকে “নবসৃষ্টির কবি” বলা হয়েছিল।
	
	সুরস্রষ্টার কাছে মানুষ অত্যন্ত দীনভাবে সুরের দীক্ষা চাইছে। স্বর্গের নদী থেকে 
	শুরু করে প্রভাতের শুকতারা এবং পৃথিবীর কনকচাঁপা পর্যন্ত এই গুরুর কাছ থেকে 
	নীরব-নিভৃতে সুরের মন্ত্র পেয়েছে। স্বর্গের নদী তথা অপ, অন্তরীক্ষ এবং ক্ষিতির 
	সঙ্গীত-গুরুর কাছ থেকে সুরের মন্ত্র লাভ করে সাধক যাবেন বেসুর কোলাহলের 
	আবর্তসংকুল ভুবনে। সেই সঙ্গীতের প্রতিকূল পরিবেশে সুরপ্রার্থী সাধক তাঁর বীণায় 
	সাধা সুরের পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক। সুরসুষমার নিবিড় সুকঠিন সাধনায় সিদ্ধি অর্জনের 
	প্রতিশ্রুতি প্রচ্ছন্ন রয়েছে গানের শেষ ছত্রে।
	
	“সুরের গুরু” সম্বোধনের শেষে সুর শুদ্ধ রেখাব থেকে পঞ্চমে উঠে পঞ্চমের 
	স্পর্শযুক্ত শুদ্ধ মধ্যম হয়ে কোমল গান্ধারে নেমে আকুল আহ্বান ধ্বনিত করেছে। 
	“দাও” প্রার্থনার তৃতীয় আবৃত্তিতে মীড়ের ব্যবহার আকুতি স্পষ্ট করে। “কাঙাল” 
	পদটির দ্বিতীয় উচ্চারণের শেষ সিলেব্ল অর্থাত্ “ঙাল” অংশে
	
	                          
		‘পা   -া  র্সা 
		│-ণা -া -া ’ 
                           
		ঙা     ০
		  ০০   
		০    o   ল্
মীড়যুক্ত এই স্বরবিন্যাস একান্ত কাঙালসুলভ আর্তি ফুটিয়ে তুলেছে। কোমল 
		গান্ধার আর নিখাদের ব্যবহার থাকলেও রাগাশ্রয়ী গান না হয়ে এটি রবীন্দ্রনাথের 
		স্বকীয় সৃষ্টি হয়েছে। 
 
তথ্যানুসন্ধান
		ক. রচনাকাল ও স্থান: ধারণা করা 
		হয়, ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাসে নবীন নাটকটি রচনার সময়ে রবীন্দ্রনাথ এ গানটি রচনা 
		করেছিলেন। ‘নবীন’- এর সকল 
সংস্করণেই গানটি পাওয়া যায়। এই বিচারে বলা যায়, আলোচ্য গানটির রচনাকাল ফাল্গুন ১৩৩৭ 
		বঙ্গাব্দ। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৬৯ বৎসর ১০ মাস।
            
		[দেখুন: 
		
		৬৯ 
		বৎসর অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
		
 
নবীন [ প্রথম প্রকাশ, বিশ্বভারতী ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ)। পৃষ্ঠা: ২ [নমুনা]
বনবাণী [বিশ্বভারতী ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ]। নবীন : প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় গান। [রবীন্দ্ররচনাবলী দ্বাবিংশ খণ্ড (বিশ্বভারতী, আষাঢ় ১৩৯৩ বঙ্গাব্দ)। পৃষ্ঠা ৬৮]
পত্রিকা
মুক্তধারা (চৈত্র ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ)।
				
				
				সঙ্গীতবিজ্ঞান 
প্রবেশিকা 
				(মাঘ ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)।
				
				অনাদিকুমার দস্তিদার-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল। 
				
 
			
			রেকর্ড সূত্র:
			
			রেকর্ডসূত্র পাওয়া যায় নি।
 
গ. সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলি:
স্বরলিপি: [স্বরবিতান পঞ্চম (৫, বিশ্বভারতী, ভাদ্র ১৪১৪) ] [নমুনা]
			
			স্বরলিপিকার:
			
			অনাদিকুমার দস্তিদার।
			
        [অনাদিকুমার 
দস্তিদার-কৃত স্বরলিপির তালিকা]
সুর ও তাল:
				
				
				স্বরবিতান
				 পঞ্চম 
				
				খণ্ডে (ভাদ্র ১৪১৪, পৃষ্ঠা: ৩৫-৩৭) গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ 
			নেই। 
				
				উক্ত স্বরলিপিটি ৩।৩ 
মাত্রা ছন্দে
				
				
				দাদরা'
				
				তালে নিবদ্ধ।
				
        
				
				
				[দাদরা তালে 
নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
				
				রাগ:
				কাফি-কানাড়া।
		তাল: 
				
				দাদরা। [রবীন্দ্রসংগীত: 
				রাগ-সুর নির্দেশিকা, সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬],
				
				
				
				পৃষ্ঠা: ৮২।
				
				   
				
				
				[কাফি-কানাড়া 
				রাগে 
নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
রাগ: সাহানা, কাফি। দাদরা। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১], পৃষ্ঠা: ১৪২।
বিষয়াঙ্গ:
সুরাঙ্গ: রবীন্দ্রনাথের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের সুর।
গ্রহস্বর: সা।
লয়: মধ্য।