হৃদয় আমার প্রকাশ হল অনন্ত আকাশে।
বেদন-বাঁশি উঠল বেজে বাতাসে বাতাসে॥
এই-যে আলোর আকুলতা এ তো জানি আমার কথা-
ফিরে এসে আমার প্রাণে আমারে উদাসে॥
বাইরে তুমি নানা বেশে ফের নানা ছলে;
জানি নে তো আমার মালা দিয়েছি কার গলে।
আজকে দেখি পরান-মাঝে, তোমার গলায় সব মালা যে-
সব নিয়ে শেষ ধরা দিলে গভীর সর্বনাশে॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: [RBVBMS 229] [নমুনা]
পাঠভেদ: পাঠভেদ আছে।
RBVBMS 229
পাণ্ডুলিপিতে গানটির প্রথম চরণ ছিল-'আমার
গোপন হৃদয় প্রকাশ হল অনন্ত আকাশে'। এ ছাড়া গানের পরবর্তী অংশে অল্পবিস্তর
পাঠভেদ লক্ষ্য করা যায়।
এই যে আলোর আকুলতা
এ তো জানি আমার কথা,
ফিরে এসে আমার প্রাণে আমারে উদাসে
॥
বাইরে তুমি নানা বেশে ফেরো নানা ছলে,...
আজকে দেখি
পরান-মাঝে : গীতলেখা ২ (১৩২৫)
এই-যে আলোর আকুলতা
আমারি এ আপন কথা,
উদাস হ'য়ে প্রাণে আমার
আবার ফিরে আসে
॥
বাইরে তুমি নানা বেশে
ফেরো নানান্ ছলে;...
আজ কী দেখি
পরাণ-মাঝে : গীতবিতান (আশ্বিন ১৩৩৮)
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
রবীন্দ্রনাথের
পাণ্ডুলিপি
RBVBMS 229-তে
লিখিত এই গানের শেষে সময় ও স্থান লেখা আছে- '১৩ই ভাদ্র/ সুরুল'।
উল্লেখ্য,
১৩২১ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে
রবীন্দ্রনাথের বড় ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুরুলের কুঠি বাড়িতে কৃষি-গবেষণার
জন্য বসবাস শুরু করেছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথ প্রতিদিনই গরুর গাড়িতে সকাল
বেলায় শান্তিনিকেতন থেকে সুরুল যেতেন এবং বিকেলে ফিরে আসতেন। রবীন্দ্রনাথের
এই যাতায়াত শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল
২২শে
আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত।
রবীন্দ্রনাথের এই যাতায়াত
শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল
২২শে
আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত।
তাঁর এই আসা-যাওয়ার ভিতরে ২০শে আশ্বিন
পর্যন্ত ৫৭টি গান রচনা করেছিলেন। এর ভিতরে এই গানটি তিনি ১৩ই ভাদ্র
[রবিবার, ৩০ আগষ্ট]-এ সুরুলে রচনা করেছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৫৩
বৎসর ৪ মাস।
[৫৩ বৎসর
অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
অখণ্ড সংস্করণ,তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী ১৩৮০)। পূজা ২০৮, উপ-বিভাগ: দুঃখ-১৭।
গীতালি
প্রথম সংস্করণ [বিশ্বভারতী। কার্তিক ১৩২১ বঙ্গাব্দ। ১৯ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ২৪] [নমুনা]
পত্রিকা:
প্রবাসী [কার্তিক ১৩২১ বঙ্গাব্দ। পৃষ্ঠা: ২] [নমুনা]
রেকর্ডসূত্র:
প্রকাশের কালানুক্রম: গানটি প্রথম ১৩২১ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল গীতালির অন্তর্ভুক্ত হয়ে। এই বছরের অগ্রহায়ণ মাসে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল প্রবাসী পত্রিকার অগ্রহায়ণ সংখ্যায়। এরপর গানটি ১৩২
গ. সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলি:
স্বরলিপি: [নমুনা]
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। [স্বরলিপিটি গীতলেখা ২য় ভাগ থকে স্বরবিতান-৪৪’এ গৃহীত হয়েছে।]
সুর ও তাল:
স্বরবিতান ত্রয়োশ্চত্বারিংশ (৪৩) খণ্ডে গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিতে ছন্দোবিভাজন দেখানো হয়েছে, ৪।২ ছন্দ। এই ছন্দে নিবদ্ধ এ তালটি রবীন্দ্র-প্রবর্তিত তাল হিসাবে স্বীকৃত। তালটি সাধারণভাবে 'উল্টাষষ্ঠী’ নামে অভিহিত হয়ে থাকে। এই তালে এই একটি মাত্র গান পাওয়া যায়।
রাগ : পিলু। তাল : ষষ্ঠী (৪+২)। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা, সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬], পৃষ্ঠা: ৮৪।
রাগ: সিন্ধু, পীলু। তাল: ষষ্ঠী (৪/২)। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১], পৃষ্ঠা: ১৪৬।
বিষয়াঙ্গ:
সুরাঙ্গ:
গ্রহস্বর: রা।
লয়: মধ্য।