৫৩ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স
২৫ বৈশাখ ১৩২১ বঙ্গাব্দ থেকে ২৪ বৈশাখ ১৩২২ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত (৭ মে ১৯১৪- ৬ মে ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দ)
১৩২১
বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ তারিখে ইনি ৫৩ বৎসর অতিক্রান্তে ৫৪ বৎসরে পদার্পন করেন। এই সময়
ইনি কলকাতায় ছিলেন। ২৬শে বৈশাখে তিনি শান্তিনিকেতনে আসেন। ২৭শে বৈশাখে তিনি
পুত্রবধু প্রতিমা দেবী, কন্যা মীরাদেবী, জামাতা নগেন্দ্রনাথ ও দুজন ভৃত্য নিয়ে
রামগড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ৫৩ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সে রামগড় থেকে
রবীন্দ্রনাথের রচনা শুরু হয়।
৩১ বৈশাখ রামগড়ে তিনি একটি গান রচনা করেন।
রবীন্দ্র-পাণ্ডুলিপি
RBVBMS 229
এবং
BMSF 024-তে
গানটির নিচে তারিখ পাওয়া যায়- '৩১ বৈশাখ রামগড়'। এই গানটি হলো-
রামগড়ে থাকাবস্থায় ৩ জ্যৈষ্ঠ [রবিবার, ১৭ মে] রবীন্দ্রনাথ আরও একটি গান রচনা করেন। গানটি হলো-
চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমার [পূজা-১০৪] [তথ্য]
উল্লেখ্য, রবীন্দ্র-পাণ্ডুলিপি RBVBMS 229 এবং BMSF 024 -তে গানটির স্থান হিসেবে উল্লেখ আছে- ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৩২১, রামগড়। এই সময় রবীন্দ্রনাথের ৫৩ বৎসর ১ মাস বয়সের রচনা। উল্লেখ্য' ৩রা জ্যৈষ্ঠে রবীন্দ্রনাথ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৯৮তম জন্মোৎসব পালন করেন। আর এই দিনে রচনা করেন একটি গান।
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর 'গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী' গ্রন্থে এই গানটি সম্পর্কে লিখেছেন- 'মহর্ষির জন্মদিন স্মরণে রচিত ?'। লক্ষণীয় বিষয় যে-প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় এই তথ্যের বিষয়ে নিঃসংশয় ছিলেন না। তাই বাক্যটির শেষে '?' চিহ্ন ব্যবহার করেছেন। রবীন্দ্রনাথের ভিতরে স্রষ্টার কাছে অক্ষমতাজনীত এক ধরণের আত্মগ্লানি ছিল। স্রষ্টা তাঁকে সৃষ্টির যে ক্ষমতা দিয়েছিলেন, তিনি তাঁর সবটুকু কাজে লাগাতে পারেন নি- এ নিয়ে তাঁর আত্মসমালোচনা অনেক রচনার ভিতরে লক্ষ্য করা যায়। এক জীবনে যা শেষ করতে পারলেন না, জন্মান্তরে তা সম্পন্ন করার প্রত্যাশা তাঁর ভিতরে ছিল। তাঁর এই অক্ষমতার জন্য কখনো তিনি-নিজেকে দোষারোপ করে বলেছেন- ‘আমার সকল কাজই রইল বাকি/সকল শিক্ষা দিলেন ফাঁকি’। কখনো বা ঈশ্বরের কাছে অভিমান করে বলেছেন- ‘আমায় বাঁধবে যদি কাজের ডোরে, কেন পাগল কর এমন করে’। অপূর্ণতাকে পূর্ণ করার আকুতি এবং অক্ষমতার গ্লানি থেকে মুক্তির আকুলতার সূত্রে- কখনো কখনো ঈশ্বরের কাছে তাঁর নিঃশর্ত সমর্পণে আকাঙ্ক্ষা তীব্রতর হয়ে উঠেছে। এরই আভাষও পাওয়া যায় তাঁর অনেক গান এবং অন্যান্য বিভিন্ন রচনার ভিতরে। রামগড়ে থাকাকালে এই গানটি যখন রচনা করেছিলেন- তখন তাঁর ভিতর যে আত্মদ্বন্দ্ব ছিল, তার পরিচয় মেলে রথীন্দ্রনাথের কাছে লিখা একটি চিঠিতে। চিঠিতে লিখেছিলেন— 'রামগড়ে যখন ছিলুম তখন থেকে আমার conscience কেবলি ভয়ঙ্কর আঘাত করচে যে বিদ্যালয় জমিদারী সংসার দেশ প্রভৃতি সম্বন্ধে আমার যা কর্ত্তব্য আমি কিছুই করিনি- আমার উচিত ছিল নিঃসঙ্কোচে আমার সমস্ত ত্যাগ করে একেবারে রিক্ত হয়ে যাওয়া, এবং কেবলি মনে হচ্ছিল যখন এ জীবনে আমার Ideal কে realize করতে পারলুম না তখন মরতে হবে, আবার নূতন জীবন নিয়ে নূতন সাধনায় প্রবৃত্ত হতে হবে। মনের মধ্যে এই রকম সুগভীর অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে বলেই আমি যাদের খুব ভালবাসি তাদেরই সম্বন্ধে যত রকম মন্দ এবং অকল্যাণ আমার কল্পনায় বারম্বার তোলাপড়া করছে কোনোমতেই তাকে ঠেকিয়ে রাখ্তে পারিনি।'
জ্যৈষ্ঠ মাসের ৪ তারিখে কৃষ্ণকুমার মিত্রের কন্যা কুমিদিনী'র (সুপ্রভাত
নামক পত্রিকার সম্পাদিকা) সাথে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা শচীন্দ্রনাথ
বসুর বিবাহ হয়। এই বিবাহ উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথ একটি গান রচনা করেছিলেন। ধারণা করা
হয়- গানটি রবীন্দ্রনাথ কয়েকদিন আগেই হয়তো রচনা করে কলকাতায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর 'গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী' গ্রন্থে এই গানটির
রচনাকাল নির্দেশ করেছেন- ৪ জ্যৈষ্ঠ্য। এই গানটি হলো-
৪ জ্যৈষ্ঠ [সোমবার, ১৮ মে]
দুজনে এক হয়ে
যাও [আনুষ্ঠানিক সংগীত-৭] [তথ্য]
এরপর পর ১০ জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত তিনি লিখলেন মোট ৪টি গান। গানগুলো হলো-
৫ জ্যৈষ্ঠ [মঙ্গলবার, ১৯ মে]
এরে ভিখারি সাজায়ে কী রঙ্গ তুমি করিল [পূজা-৭৪]
[তথ্য]
৭ জ্যৈষ্ঠ [বৃহস্পতিবার, ২১ মে] আকাশে দুই হাতে প্রেম
বিলায় ও কে [পূজা-৩৫৮][তথ্য
৬ জ্যৈষ্ঠ [বুধবার, ২০ মে]
সন্ধ্যা হল গো- ও মা, সন্ধ্যা হল [পূজা-১৬০]
[তথ্য]
১০ জ্যৈষ্ঠ [বুধবার, ২১ মে]
এই তো তোমার আলোকধেনু
[পূজা-৫২০]
[তথ্য]
১৮ জ্যৈষ্ঠ তারিখে রবীন্দ্র দুটি গান রচনা করেছিলেন। গান দুটি হলো- 'আজ ভুল ফুটেছে
মোর আসনে [১৮ জ্যৈষ্ঠ]' ও 'আমার প্রাণের মাঝে' [২৫ জ্যৈষ্ঠ] । গান দুটির সুর হারিয়ে
গেছে। এই কারণে গীতবিতানে এই গান দুটি গৃহীত হয় নাই।
রবীন্দ্রনাথ রামগড় থেকে লখ্নৌ হয়ে কলকাতায় ফেরেন ৩১শে
জ্যৈষ্ঠে। কলকাতায় ফিরে তিনি যে গানটি রচনা করেন, তা হলো-
৩ আষাঢ় [বুধবার, ১৭ জুন]
মোর
সন্ধ্যায় তুমি সুন্দরবেশে এসেছ [পূজা-৫১৯]
[তথ্য]
কলকাতা থেকে ৫ই আষাঢ় তারিখে রবীন্দ্রনাথ
শান্তিনিকেতনে আসেন এবং ২২শে শ্রাবণ পর্যন্ত শান্তিনিকেতনেই কাটান। এই সময়ে তিনি
১টি গান রচনা করেন। গানটি হলো- ৪ ভাদ্র [শুক্রবার, ২১ আগষ্ট]
১১ আষাঢ় [বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন]
তোমার
রঙিন পাতায় লিখব [প্রেম-১৩১]
[তথ্য]
[ ডঃ
দ্বিজেন্দ্রনাথ মৈত্রের স্বাক্ষর খাতার জন্য রচনা করেন]
২৩শে শ্রাবণ রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতায় আসেন। কয়েকদিন কলকাতায় থাকার পর
তিনি, ৩১শে শ্রাবণ তিনি কলকাতা থেকে
শান্তিনিকেতন আসেন। ৬ই ভাদ্র তারিখে তিনি আবার কলকাতায় ফিরে যান।
শ্রাবণ মাসে তাঁর রচিত
একটি গানের সন্ধান পাওয়া যায়। এই
গানটি হলো - গীতালি'র প্রথম গান 'দুঃখের বরষায় চক্ষের জল যেই নামল' । এই
গানটির সাথে তারিখ ও স্থান লিখা আছে- শান্তিনিকেতন/শ্রাবণ ১৩২১। প্রশান্তকুমার পাল
তাঁর রবিজীবনী সপ্তম খণ্ডে (আষাঢ় ১৪১৪) এই গানটির রচনাকাল সম্পর্কে অনুমান
করে লিখেছেন, '-হয়তো ৩১ শ্রাবণ শান্তিনিকেতনে এসেই তিনি গানটি লেখেন...'।
রবিজীবনী-কারে এই অনুমান যথার্থ বলেই বিবেচনা করা যেতে পারে।
৩১ শ্রাবণ [রবিবার, ১৬ আগষ্ট] দুঃখের বরষায় চক্ষের জ্বল যেই নামল [পূজা-৪৮]
[তথ্য]
এরপর ভাদ্র মাসের ৪ তারিখে রবীন্দ্রনাথ একটি গান রচনা করেন। গানটি হলো-
বাধা দিলে বাধবে লড়াই,
মরতে হবে [পূজা-২৫৯]
[তথ্য]
৬ই
ভাদ্র তারিখে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতায় ফিরে আসেন। এই সময়ে তিনি দুটি
গান রচনা করেন। গান দুটি হলো-
৬ ভাদ্র
[রবিবার, ২৩ আগষ্ট]
আমি
হৃদয়েতে পথ কেটেছি [পূজা-২১৮] [তথ্য]
৬ ভাদ্র
[রবিবার, ২৩ আগষ্ট]
ওই)
আলো যে যায় রে দেখা
[পূজা-২৪২]
[তথ্য]
১৩২১ বঙ্গাব্দের
শ্রাবণ-আশ্বিনের মধ্যে রচিত গান
৭
ভাদ্র তারিখে রবীন্দ্রনাথ পুত্রবধূ প্রতিমা দেবীকে সাথে করে কলকাতা থেকে
শান্তিনিকেতনে আসেন। ২৪শে ভাদ্র তারিখ পর্যন্ত তাঁর রচিত গানের তালিকা তুলে ধরা
হলো।
৭ ভাদ্র
[সোমবার, ২৪ আগষ্ট] ও নিঠুর আরো কি বাণ তোমার তূণে আছে [পূজা-২১৭]
[তথ্য]
৭ ভাদ্র [সোমবার, ২৪ আগষ্ট]
সুখে আমায় রাখবে কেন [পূজা-২১৬ ]
[তথ্য]
য
৭ ভাদ্র [সোমবার, ২৪ আগষ্ট] বলো আমার সনে তোমার কী
শত্রুতা
প্রাণ চায় চক্ষু না চায় [প্রেম-৩৪৫] [তথ্য]
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। RBVBMS 229 পাণ্ডুলিপিতে লিখিত এই গানের সাথে রচনাকাল বা স্থানের নাম নেই। পাণ্ডুলিপিতে এর আগে রচনা- 'ফুল তো আমার ফুরিয়ে গেছে'-এর সাথে স্থান ও তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে- '১৭ই আশ্বিন/প্রভাত/শান্তিনিকেতন'। এই পাণ্ডুলিপির পাতার উল্টোপিঠে লেখা হয়েছিল 'প্রাণ চায় চক্ষু না চায়'। ঠিক তার পরেই রয়েছে 'দুঃখের বরষায় চক্ষের জল যেই নামল'। এই গানটির সাথে স্থান ও তারিখ উল্লেখ আছে- 'শ্রাবণ/১৩২১/শান্তিনেকতন'।
আবার রবীন্দ্রনাথের গীতিসংকলন 'গান' গ্রন্থের তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল ১৩২১ বঙ্গাব্দের ৬ আশ্বিন তারিখে। এই গ্রন্থের ৬৩ পৃষ্ঠায় গানটি মুদ্রিত হয়েছিল। এই বিচারে ধারণা করা যায়, সম্ভবত এই গানটি ভাদ্র মাসের দিকে রচনা করেছিলেন। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর 'গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী' গ্রন্থে গানটির রচনার সময় উল্লেখ করেছেন ১১ আষাঢ়-শ্রাবণ'। এমন অদ্ভুদ তারিখটি সম্ভবত মুদ্রণ বিভ্রাটের কারণে ঘটেছে। সব মিলিয়ে ধারণা করা যায়, এই গানটি রচিত হয়েছিল সম্ভবত শ্রাবণ-আশ্বিন মাসের ভিতরে। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৫৩ বৎসর ৩-৪ মাস।
এই সময় রবীন্দ্রনাথ প্রতিদিনই গরুর গাড়িতে সকাল বেলায় শান্তিনিকেতন থেকে সুরুল যেতেন এবং বিকেলে ফিরে আসতেন। রবীন্দ্রনাথের এই যাতায়াত শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল ২২শে আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত। তাঁর এই আসা-যাওয়ার ভিতরে ২০শে আশ্বিন পর্যন্ত ৫৭টি গান রচনা করেছিলেন। এই গানগুলোর যে দুটি পাণ্ডুলিপিতে পাওয়া যায়, তার নাম Ms229 (RBVBMS 229) এবং পাওয়া যায় Ms 131 RBVBMS 131।
Ms131
পাণ্ডুলিপিতে
২২শে আশ্বিন
[শনিবার, ১০ অক্টোবর]
তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া
যান। এখানে তিনি মহান্ত মহারাজের অতিথি হিসাবে ২৪শে আশ্বিন
[রবিবার,
১১ অক্টোবর]
পর্যন্ত অবস্থান করেন।
এই সময়ে তিনি যে ৩টি গান রচনা করেন। গানগুলো তিনি লিখেছিলেন
RBVBMS
131 পাণ্ডুলিপিতে সেগুলো হলো- ২৩
আশ্বিন।আবার যদি ইচ্ছা কর আবার আসি
ফিরে
[পূজা ৫৯১]
[তথ্য] ২৩
আশ্বিন।
অচেনাকে ভয় কী
আমার ওরে
?
[পূজা ৫৯০]
[তথ্য] ২৪
আশ্বিন।
এ দিন আজি কোন্ ঘরে গো খুলে
দিল দ্বার
[পূজা ৩১০]
[তথ্য]।
২৫শে আশ্বিন
[সোমবার, ১২ অক্টোবর]
সকালে রেলপথে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া থেকে
বেলা পাহাড়ের বৌদ্ধ-আমলের
গুহা দেখতে যান।
কথা ছিল
গুহা দেখার জন্য
এখানে রবীন্দ্রনাথের জন্য পাল্কি থাকবে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ যখন বেলা রেলস্টেশনে
পৌছালেন, তখনও পাল্কি এসে পৌঁছায় নি। বেলা স্টেশনের ওয়েটিং রুমে রবীন্দ্রনাথ
লিখলেন, এই গানটি-
২৫
আশ্বিন।
পান্থ তুমি,পান্থজনের সখা হে [পূজা-৫৬৪]
[তথ্য]
সকাল ৯টার দিকে সতীশচন্দ্র দুটি পাল্কি
সংগ্রহ করতে সক্ষম হন। এই পাল্কিতে চড়ে রবীন্দ্রনাথ বেলা পাহাড়ের বৌদ্ধ-আমলের গুহা
দেখতে যান। বেলা ১টার সময় পাহাড়ের পাদদেশে পাল্কি পৌঁছায়। এই সময় খাদ্য-পানীয়ের
অভাবে ও গরমে রবীন্দ্রনাথ এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়েন যে, শেষ পর্যন্ত গুহা না দেখেই
ফিরে আসেন। এই আসা-যাওয়ার পথে তিনি পাল্কিতে বসে তিনি যে গানটি লেখেন তা হলো-
২৯ আশ্বিন
[শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর] প্রভাতা। ৩০
আশ্বিন [শনিবার, ১৭ অক্টোবর]
প্রভাত।
১
কার্তিক।
[সোমবার, ১৮ অক্টোবর]। সন্ধ্যা।
৩
কার্তিক।
[মঙ্গলবার, ২০
অক্টোবর]। রাত্রি।
১৪ই কার্তিক শান্তিনিকেতনে পূজার ছুটি শেষ হয়। এরপর ২২ কার্তিক [৮ নভেম্বর] কলকাতায় আসেন। ২৯ কার্তিক [১৫
নভেম্বর] তিনি আবার শান্তিনিকেতন ফিরে যান এবং ১ অগ্রহায়ণ [১৭ নভেম্বর] রাত্রে আবার
কলকাতায় ফিরে যান। এর কয়েকদিন পর তিনি রামগড়ের যান। সেখানে থেকে তাঁর এলাহাবাদ যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু অত্যন্ত ঠাণ্ডা আবহাওয়ার জন্য ১১ অগ্রহায়ণ [৩০ নভেম্বর]
এলাহাবাদের পরিবর্তে
আগ্রাতে আসেন। ১৫
অগ্রহায়ণ [১ ডিসেম্বর] যান জয়পুর এবং ১৮ অগ্রহায়ণ [৪ ডিসেম্বর] আবার আগ্রাতে ফিরে আসেন।
এরপর তিনি ২১ অগ্রহায়ণ [৭ ডিসেম্বর] এলাহাবাদে আসেন। এখান থেকে ২৪ অগ্রহায়ণ [১০
ডিসেম্বর] তারিখে তিনি এলাহাবাদ থেকে দিল্লিতে যান। সেখান থেকে কয়েকদিন পর তিনি
আগ্রা হয়ে এলাহাবাদ আসেন। ৫ পৌষ [২০ ডিসেম্বর] তিনি এলাহাবাদ থেকে শান্তিনিকেতনের
উদ্দেশ্যে রওনা দেন। নানা জায়গায় ভ্রমণের ভিতরে তিনি গান রচনা করেন নি।
শান্তিনিকেতনে ফেরার পরও কিছুদিন গান রচনা থেকে বিরত থাকেন। এরপর ১৩ই পৌষ
শান্তনিকেতনে একটি গান রচনা করেন। গানটি হলো- মন জাগ মঙ্গললোকে[পূজা-২৬৬] [তথ্য] ১৮ মাঘ [বুধবার ১ ফেব্রুয়ারি] তারিখে
রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহের উদ্দেশ্যে রওনা
দেন। এখানে এসে তিনি ১২টি কবিতা লেখেন। এর ভিতর একটিও গান ছিল না। ২৯ মাঘ তিনি
শিলাইদহ থেকে কলকাতা আসেন। ১০ ফাল্গুনে তিনি শান্তিনিকেতন আসেন। ১২ ফাল্গুনে
শান্তিনিকতেন হয়ে সুরুলে যান।
২৩ ফাল্গুন পর্যন্ত সুরুলে
থাকাকালীন সময়ে তিনি ১৫টি গান রচনা করেন। গানগুলো হলো-
১২ ফাল্গুন। রাত্রি
[বুধবার ২৪ ফেব্রুয়ারি]
ওগো দখিন হাওয়া [প্রকৃতি-২০৪] [তথ্য]
সুরুল থেকে বোলপুর হয়ে কলকাতা রওনা দেন ২৩
ফাল্গুন। রেলাগাড়িতে তিনি দুটি গান রচনা করেন। গান দুটি হলো
৩ (তৃতীয়
দৃশ্য)
Ms229
পাণ্ডুলিপিতে ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল ২০শে
আশ্বিন পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ ৪৭টি গান লিখেছিলেন। এই গানগুলো হলো-
পাণ্ডুলিপিতে উল্লেখ আছে- '২৩ আশ্বিন/গয়া'।
পাণ্ডুলিপিতে উল্লেখ আছে- '২৩ আশ্বিন/গয়া'।
পাণ্ডুলিপিতে উল্লেখ আছে- '২৪
আশ্বিন/প্রভাত/গয়া'।
২৫
আশ্বিন।
সুখের মাঝে তোমায় দেখেছি [পূজা ও প্রার্থনা-৭৪]
[তথ্য]
সন্ধ্যার দিকে
রবীন্দ্রনাথ বেলা স্টেশনে ফিরে আসেন। রাত্রিতেই তিনি রেলপথে গয়ার উদ্দেশ্যে রওনা
দেন। পথে রেলগাড়িতে তিনি রচনা করেন এই গানটি-
২৫
আশ্বিন।
ওগো পথের
সাথি, নমি বারম্বার [পূজা-৫৬৫] [তথ্য]
২৬শে আশ্বিন
[মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর] গয়া পৌঁছার পর, ওই দিনই চারুচন্দ্রকে
সাথে নিয়ে তিনি এলাহাবাদের আসেন। এখানে তিনি তাঁর জামাতা প্যারীলাল
বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৪১, জর্জ টাউনের বাড়িতে ওঠেন।
এখানে এসে তিনি গীতালি প্রকাশের কাজে
ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ২৮শে আশ্বিন পর্যন্ত তিনি কোনো গান রচনা করেন নি।
২৯
আশ্বিন থেকে
তিনি পুনরায় গান লেখা শুরু করেন
RBVBMS
131
-পাণ্ডুলিপিতে। নিচে এলাহাবাদে থাকাকালে রচিত গানগুলোর
কালানুক্রমিক তালিকা দেওয়া হলো-
অন্ধকারের উৎস হতে
[পূজা-৩৫৪] [তথ্য]
ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময় [পূজা-৩৭৩] [তথ্য]
যখন তোমায় আঘাত করি তখন চিনি [পূজা-২০৩]
[তথ্য]
তুমি কি কেবলই ছবি [বিচিত্র-৭৬] [তথ্য]
১৩
পৌষ।
[সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর]।
বেদনায় ভরে গিয়েছে পেয়ালা [প্রেম-৮৫]
[তথ্য]
পৌষ
মাসের
শেষ
কয়েকদিন
তিনি
সুরুলে
কাটান।
২৯
পৌষ
তারিখে
মাঘোৎসবের আয়োজনের জন্য তিনি
কলকাতার
উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রেলগাড়িতে বসে
তিনি একটি গান রচনা করেন। গানটি হলো-
২৯
পৌষ।
[বুধবার, ১৩ জানুয়ারি]।
আনন্দগান উঠুক তবে বাজি [পূজা-৩০৯] [তথ্য]
১১ মাঘ [সোমবার ২৫
জানুয়ারি] তারিখে ষড়শীতিতম সাম্বৎসরিক মাঘোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই দিন
সকালবেলায় আদি ব্রহ্মসমাজ গৃহে এবং সন্ধ্যায় মহর্ষিভবনে রবীন্দ্রনাথের মোট ১৬টি গান
পরিবেশিত হয়। এর ভিতরে ৩টি গান নতুন ছিল। ধারণা করায়, এই গানটি মাঘোৎসবের জন্যই
রচিত হয়েছিল। গানগুলো হলো-
রহি রহি আনন্দতরঙ্গ জাগে [পূজা-৫৪৫] [তথ্য]
নিশিদিন মোর পরানে প্রিয়তম মম
[পূজা-৪২১] [তথ্য]
১২ ফাল্গুন। রাত্রি [বুধবার ২৪ ফেব্রুয়ারি]
ছাড়্ গো তোরা ছাড়্ গো [প্রকৃতি-১৮০] [তথ্য]
১৩ ফাল্গুন। প্রভাত
[বৃস্পতিবার ২৫
ফেব্রুয়ারি]
আমরা নূতন প্রাণের চর, হা হা [প্রকৃতি-১৮১]
[তথ্য]
১৩ ফাল্গুন। [বৃস্পতিবার ২৫ ফেব্রুয়ারি]
ওর
ভাব দেখে যে পায় হাসি [বিচিত্র ১২৫] [তথ্য]
১৩ ফাল্গুন। [বৃস্পতিবার ২৫ ফেব্রুয়ারি]
এই কথাটাই ছিলেম ভুলে [প্রকৃতি-২৭৬]
[তথ্য]
১৩ ফাল্গুন। [বৃস্পতিবার
২৫ ফেব্রুয়ারি]
আমরা খুঁজি খেলার সাথি [বিচিত্র-১২৬] [তথ্য]
১৩ ফাল্গুন। [বৃস্পতিবার ২৫ ফেব্রুয়ারি]
এবার
তো যৌবনের কাছে [প্রকৃতি-২৭৭] [তথ্য]
১৩ ফাল্গুন। [বৃস্পতিবার ২৫ ফেব্রুয়ারি]
ওরে
আয় রে তবে, মাত্ রে সবে [প্রকৃতি-২১০] [তথ্য]
১৩ ফাল্গুন। রাত্রি [বৃহস্পতিবার ২৫ ফেব্রুয়ারি]
বিদায় নিয়ে গিয়েছিলেম [প্রকৃতি-২৭৫] [তথ্য]
১৩ ফাল্গুন। রাত্রি
[বৃহস্পতিবার ২৫ ফেব্রুয়ারি]
আকাশ আমায় ভরল আলোয় [প্রকৃতি] [তথ্য]
১৪ ফাল্গুন। প্রভাত [শুক্রবার ২৬ ফেব্রুয়ারি]
আর
নাই যে দেরি [প্রকৃতি-১৮২] [তথ্য]
১৪ ফাল্গুন। রাত্রি [শুক্রবার ২৬ ফেব্রুয়ারি]
এতদিন যে বসেছিলেম [প্রকৃতি ২০৮] [তথ্য]
২০ ফাল্গুন। রাত্রি [শনি ৪ মার্চ] তোমায় নতুন করে পাব ব'লে। [পূজা-৪৫]
[তথ্য]
২১ ফাল্গুন। প্রাতে
[বৃহস্পতিবার ৫ মার্চ] চোখের
আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে [পূজা-২৫৩] [তথ্য]
২৩ ফাল্গুন। রেলপথে
[রবিবার ৭ মার্চ]
ওগো নদী আপন বেগে পাগল-পারা [বিচিত্র-৮০] [তথ্য]
২৩ ফাল্গুন। রেলপথে
[রবিবার ৭ মার্চ]
চলি গো, চলি গো, যাই গো চলে
[পূজা-৫৭৬] [তথ্য]
রবীন্দ্রনাথ ফাল্গুনী নাটক শেষ করেছিলেন
ফাল্গুন মাসে। এর ভিতরে ১৬টি গান তিনি সুরুলে থাকাকালে
RBVBMS
131
-পাণ্ডুলিপিতে লিখেছিলেন।
প্রমথ চৌধুরী
সম্পাদিতর 'সবুজপত্র' পত্রিকার 'চৈত্র ১৩২১ ব
১ (প্রথম দৃশ্য)
সূত্রপাত
ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে [প্রকৃতি-২০৭]
[তথ্য]
[নমুনা]
মোদের যেমন খেলা তেমনি যে কাজ [বিচিত্র-১২৭]
[তথ্য]
[নমুনা
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
আমাদের পাকবে
না চুল গো [বিচিত্র-১১৬] [তথ্য]
[নমুনা]
আমাদের ভয় কাহারে [বিচিত্র-১১৫] [তথ্য] [নমুনা]
২ (দ্বিতীয় দৃশ্য)
সন্ধান
আমাদের ক্ষেপিয়ে বেড়ায় যে [পূজা-৫৭৫] [তথ্য]
[নমুনা
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
* চলি গো, চলি গো, যাই গো চলে
[পূজা-৫৭৬] [তথ্য]
[নমুনা
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
[এই গানটি ২৩ ফাল্গুন শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতা রেলপথে
যাওয়ার সময় রচিত হয়েছিল]
ভালো মানুষ নই রে মোরা
[বিচিত্র-১১৪] [তথ্য]
[নমুনা]
সন্দেহ
মোরা চলব না [নাট্যগীতি-৯৫] [তথ্য]
[নমুনা]
ধীরে বন্ধু, ধীরে ধীরে [পূজা-৪৬]
[তথ্য]
[নমুনা]
৪ (চতুর্থ দৃশ্য)
সমাপ্তি
তুই ফেলে এসেছিস কারে
[প্রেম-৩০৭] [তথ্য]
[নমুনা]
আমি যাব না গো অমনি চলে [প্রেম-১১৩] [তথ্য]
[নমুনা]
সবাই যারে সব দিতেছে [পূজা-৪৮১]
[তথ্য]
[নমুনা
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
বসন্তে
ফুল গাঁথল [প্রকৃতি-২০৯] [তথ্য]
[নমুনা
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
*চোখের
আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে [পূজা-২৫৩] [তথ্য]
[নমুনা
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
[এই গানটি ২৩ ফাল্গুন সুরুলে রচিত
হয়েছিল]
হবে জয়, হবে জয়, হবে জয় রে [পূজা-৩৭৪] [তথ্য]
[নমুনা
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
রবীন্দ্রনাথ ২৩ ফাল্গুন কলকাতা আসেন এবং ২৭ ফাল্গুন শান্তিনিকেতনে ফিরতে আসেন। ৬ চৈত্রে লর্ড কারমাইকেল রবীন্দ্রনাথের সাথে দেখা করার জন্য সস্ত্রীক বোলপুরে আসেন। ১৪ চৈত্র রবীন্দ্রনাথ বঙ্গীয় হিতসাধন মণ্ডলীর তৃতীয় সভায় যোগদানের জন্য কলকাতায় যান। ১৬ চৈত্রতে রবীন্দ্রনাথ কলকাতা থেকে ফিরে সুরুলের বাড়িতে উঠেন। এরূপ নানাবিধ কাজের জন্য রবীন্দ্রনাথ পরবর্তী বৎসরের আষাঢ় মাস পর্যন্ত তিনি আর কোনো গান রচনা করেন নি।।