বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
তোমার কাছে এ বর মাগি, মরণ হতে যেন জাগি
পাঠ ও পাঠভেদ:
তোমার কাছে এ বর মাগি, মরণ হতে যেন জাগি
গানের সুরে॥
যেমনি নয়ন মেলি যেন মাতার স্তন্যসুধা-হেন
নবীন জীবন দেয় গো পূরে গানের সুরে॥
সেথায় তরু তৃণ যত
মাটির বাঁশি হতে ওঠে গানের মতো।
আলোক সেথা দেয় গো আনি
আকাশের আনন্দবাণী,
হৃদয়মাঝে বেড়ায় ঘুরে গানের সুরে॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ:
RBVBMS
131
[
নমুনা]
ভাবসন্ধান: এ গানটির সঞ্চারী
অংশে পৌঁছুবার আগে, মৃত্যু থেকে জাগিয়ে-তোলা “গানের সুর” প্রসঙ্গটির সার্বিক
তাত্পর্য ঠিক মতো উপলব্ধি করা যায় না। ধরিত্রীর ঘাস আর গাছের অঙ্কুরিত হওয়া
কবির কাছে যেন মাটির বাঁশি থেকে নির্গত হওয়া গানের সুর। সূর্যের যে-আলোকধারা
পৃথিবীতে নেমে আসে, তা যেন আকাশের আনন্দ-বার্তা বয়ে আনে তার দৃশ্যে-স্পর্শে। এ
সবই কবিচিত্তে গীতময় হয়ে সঞ্চরণ করে।
কবি-শিল্পীদের বোধে দর্শন-স্পর্শন-আর শ্রবণ-ইন্দ্রিয়ের ভেদ থাকে না সবসময়।
একরকমের বোধ তার সীমা ছাড়িয়ে মিলে যায় অন্যরকমের বোধে। সেইজন্যে রবীন্দ্রনাথও
প্রকৃতির সৌন্দর্য আর আলোর ধারাকে গানের সুরের মতো শ্রবণনন্দন বলে অনুভব করছেন
এই গানে। শ্রবণের আনন্দ মৃত্যুকে পরাহত করেও যেন কবিকে জাগিয়ে তুলতে পারে, এই
আকুতি তাঁর। চোখ-মেলে-দেখা মাতৃস্তন্যের মতো নবীন জীবনে ভরে তুলুক তাঁকে, এই
তাঁর আবেদন।
ভৈরবী সুরে কোমল মিনতি-ভরা এ গানটির আবেদন।
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
রবীন্দ্রনাথের
পাণ্ডুলিপি
RBVBMS
131-তে
লিখিত এই গানের শেষে সময় ও স্থান লেখা আছে-
'১৭ই আশ্বিন/সন্ধ্যা'।
তবে
গীতালি (প্রথম সংস্করণ ১৩২১)-তে গানটির
সাথে স্থানকাল সম্পর্কে উল্লেখ আছে -
'১৭
আশ্বিন,
সন্ধ্যা শান্তিনিকেতন'।
[নমুনা]।
উল্লেখ্য, ১৩২১ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে
রবীন্দ্রনাথের বড় ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুরুলের কুঠি বাড়িতে কৃষি-গবেষণার
জন্য বসবাস শুরু করেছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথ প্রতিদিনই গরুর গাড়িতে সকাল
বেলায় শান্তিনিকেতন থেকে সুরুল যেতেন এবং বিকেলে ফিরে আসতেন। রবীন্দ্রনাথের
এই যাতায়াত শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল
২২শে
আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত।
রবীন্দ্রনাথের এই যাতায়াত
শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল
২২শে
আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত।
তাঁর এই আসা-যাওয়ার ভিতরে ২০শে
আশ্বিন পর্যন্ত ৫৭টি গান রচনা করেছিলেন।
এর ভিতরে এই গানটি তিনি
১৭
আশ্বিন [সন্ধ্যা, রবিবার, ৪ অক্টোবর]
তারিখে রচনা করেছিলেন।
এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৫৩ বৎসর ৫ মাস।
[৫৩ বৎসর
অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
কাব্যগ্রন্থ নবম খণ্ড। [ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ, ১৩২৩ বঙ্গাব্দ)। গীতালি, ৬৯ । পৃষ্ঠা: ৪৯৫] [নমুনা]
প্রথম সংস্করণ [ ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৩২১ বঙ্গাব্দ ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ)। ৬৯ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৭৬।] [নমুনা]
রবীন্দ্ররচনাবলী একাদশ খণ্ড, গীতালি (বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৯৩)। গান সংখ্যা: ৬৯। পৃষ্ঠা: ২৬৫।
স্বরবিতান চতুশ্চত্বারিংশ
(৪৪) খণ্ডের
(চৈত্র
১৪১৩)
প্রথম গান।
পৃষ্ঠা: ৫-৬।
পত্রিকা
প্রবাসী
[অগ্রহায়ণ
১৩২১ বঙ্গাব্দ। গীতিগুচ্ছ ২৪। পৃষ্ঠা: ১০৯]
[নমুনা]
[প্রবাসী
পত্রিকায় প্রকাশিত রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
প্রকাশের
কালানুক্রম: প্রবাসী পত্রিকার অগ্রহায়ণ ১৩২১ বঙ্গাব্দ সংখ্যায় গানটি
প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। একই বছরে 'গীতালি' গ্রন্থের সাথে গানটি প্রকাশিত
হয়েছিল। ১৩২৩ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'কাব্যগ্রন্থ'-এর নবম খণ্ডের 'গীতালি'
অংশে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়।
১৩৩৮ বঙ্গাব্দে গীতবিতানের দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত
হয়। এরপর ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে গানটি গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৩৮০ বঙ্গাব্দে গীতবিতানের অখণ্ড সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত
হয়েছিল।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
স্বরলিপিকার: সুধীরচন্দ্র কর।
পাণ্ডুলিপি থেকে সংগৃহীত।
[ সুধীরচন্দ্র কর-কৃত
রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা।]
[স্বরলিপি]
রাগ ও তাল:
স্বরবিতান চতুশ্চত্বারিংশ
(৪৪) খণ্ডে
(চৈত্র
১৪১৩)
গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই।
উক্ত
স্বরলিপিটি ৩।৩
মাত্রা ছন্দে
'দাদরা'
তালে
নিবদ্ধ।
[দাদরা
তালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
রাগ : ভৈরবী। তাল: দাদরা [রবীন্দ্রসংগীতের ক্রমবিকাশ ও বিবর্তন। ডঃ দেবজ্যোতি দত্ত মজুমদার। (সাহিত্যলোক, ডিসেম্বর ১৯৮৭।)
রাগ : ভৈরবী। তাল দাদরা [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬।। পৃষ্ঠা: ৫৬]।
রাগ: ভৈরবী। তাল: দাদরা।
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, জুলাই
২০০১, পৃষ্ঠা:
৯৯।
[ভৈরবী
রাগে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
গ্রহস্বর: র্সর্ঋা।
লয়: মধ্য।