ওরে ভীরু, তোমার হাতে নাই ভুবনের ভার।
হালের কাছে মাঝি আছে করবে তরী পার ॥
তুফান যদি এসে থাকে তোমার কিসের দায়-
চেয়ে দেখো ঢেউয়ের খেলা, কাজ কি ভাবনায় ?
আসুক-নাকো গহন রাতি, হোক-না অন্ধকার-
হালের কাছে মাঝি আছে, করবে তরী পার ॥
পশ্চিমে তুই তাকিয়ে দেখিস মেঘে আকাশ ডোবা,
আনন্দে তুই পুবের দিকে দেখ্-না তারার শোভা।
সাথি যারা আছে তারা তোমার আপন ব'লে
ভাবো কি তাই রক্ষা পাবে তোমারি ওই কোলে ?
উঠবে রে ঝড়, দুলবে রে বুক, জাগবে হাহাকার-
হালের কাছে মাঝি আছে, করবে তরী পার ॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: [ RBVBMS 229] [নমুনা]
পাঠভেদ:
ক. রচনাকাল ও স্থান:
রবীন্দ্রনাথের
পাণ্ডুলিপি
RBVBMS 229-তে
লিখিত এই গানের শেষে সময় ও স্থান লেখা আছে-
'৯ আশ্বিন/অপরাহ্ণ/শান্তিনিকেতন'।
উল্লেখ্য, ১৩২১ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে
রবীন্দ্রনাথের বড় ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুরুলের কুঠি বাড়িতে কৃষি-গবেষণার
জন্য বসবাস শুরু করেছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথ প্রতিদিনই গরুর গাড়িতে সকাল
বেলায় শান্তিনিকেতন থেকে সুরুল যেতেন এবং বিকেলে ফিরে আসতেন। রবীন্দ্রনাথের
এই যাতায়াত শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল
২২শে
আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত।
রবীন্দ্রনাথের এই যাতায়াত
শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল
২২শে
আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত।
তাঁর এই আসা-যাওয়ার ভিতরে ২০শে
আশ্বিন পর্যন্ত ৫৭টি গান রচনা করেছিলেন।
এর ভিতরে এই গানটি তিনি
৯ আশ্বিন। [অপরাহ্ণ। শনিবার, ২৬
সেপ্টেম্বর]
সুরুল-এ রচনা করেছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৫৩ বৎসর ৫ মাস।
[৫৩ বৎসর
অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
প্রথম সংস্করণ [ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৩২১ বঙ্গাব্দ। গান সংখ্যা ৫৩। পৃষ্ঠা: ৬৯-৬০] [নমুনা: প্রথমাংশ, দ্বিতীয়াংশ]
রেকর্ডসূ্ত্র
: পাওয়া যায় নি।
প্রকাশের কালানুক্রম:
১৩২১ বঙ্গাব্দের প্রকাশিত
গীতালি
র গানটি প্রথম সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
১৩২২ বঙ্গাব্দের
৮৬তম
মাঘোৎসব- এ গানটি প্রথম গীত হয়েছিল। এরপর যে সকল গ্রন্থাদিতে গানটি
অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, সেগুলো হলো- আনন্দসঙ্গীত (অগ্রহায়ণ
১৩২২ বঙ্গাব্দ),
গীতালি
প্রথম সংস্করণ
(১৩২১
বঙ্গাব্দ),
কাব্যগ্রন্থ নবম খণ্ড
(১৩২৩) ও
গীতলেখা তৃতীয় ভাগ (১৩২৭ বঙ্গাব্দ)। উল্লেখ্য,
১৩২২ বঙ্গাব্দের ১১ই মাঘ [সোমবার ২৫
জানুয়ারি]
মাঘোৎসব
৮৬তম মাঘোৎসব গানটি পরিবেশিত হয়েছিল।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
স্বরলিপিকার:
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। [স্বরলিপিটি গীতলেখা ৩য় ভাগ থেকে স্বরবিতান-৪৩-এ গৃহীত হয়েছে।]
ইন্দিরাদেবী। [আনন্দসঙ্গীত (অগ্রহায়ণ ১৩২২ বঙ্গাব্দ)]
রাগ ও তাল:
স্বরবিতান-৪৩-এ গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিতে ছন্দোবিভাজন দেখানো হয়েছে, ৩।৩ ছন্দ। অর্থাৎ 'দাদরা' হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে।
গ্রহস্বর-ধা। লয়-দ্রুত।