শুধু তোমার বাণী নয় গো, হে বন্ধু, হে প্রিয়,
মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিয়ো॥
সারা পথের ক্লান্তি আমার সারা দিনের তৃষা
কেমন করে মেটাব যে খুঁজে না পাই দিশা—
এ আঁধার যে পূর্ণ তোমায় সেই কথা বলিয়ো॥
হৃদয় আমার চায় যে দিতে, কেবল নিতে নয়,
বয়ে বয়ে বেড়ায় সে তার যা-কিছু সঞ্চয়।
হাতখানি ওই বাড়িয়ে আনো, দাও গো আমার হাতে—
ধরব তারে, ভরব তারে, রাখব তারে সাথে,
একলা পথের চলা আমার করব রমণীয়॥
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
রবীন্দ্রনাথের
পাণ্ডুলিপি
RBVBMS 229-তে
লিখিত এই গানের শেষে সময় ও স্থান লেখা আছে- '১৮ই ভাদ্র/
শান্তিনিকেতন'।
উল্লেখ্য,
১৩২১ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে
রবীন্দ্রনাথের বড় ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুরুলের কুঠি বাড়িতে কৃষি-গবেষণার
জন্য বসবাস শুরু করেছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথ প্রতিদিনই গরুর গাড়িতে সকাল
বেলায় শান্তিনিকেতন থেকে সুরুল যেতেন এবং বিকেলে ফিরে আসতেন। রবীন্দ্রনাথের
এই যাতায়াত শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল
২২শে
আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত।
রবীন্দ্রনাথের এই যাতায়াত
শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল
২২শে
আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত।
তাঁর এই আসা-যাওয়ার ভিতরে ২০শে আশ্বিন
পর্যন্ত ৫৭টি গান রচনা করেছিলেন। এর ভিতরে এই গানটি তিনি
১৭ ভাদ্র বিকাল [বৃহস্পতিবার, ৩
সেপ্টেম্বর]-এ সুরুলে রচনা করেছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৫৩
বৎসর ৪ মাস।
[৫৩ বৎসর
অতিক্রান্ত বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
কাব্যগ্রন্থ, নবম খণ্ড। গীতালি গান: ২৫। (ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৩২৩ বঙ্গাব্দ)। পৃষ্ঠা: ৪৪৬-৪৪৭। [নমুনা: ৪৪৬, ৪৪৭]
পত্রিকা:
আনন্দ-সঙ্গীত পত্রিকা (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩২৪ বঙ্গাব্দ)। ইন্দিরাদেবী-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
পৌষ ১৮৩৬ শকাব্দ, ১৩২১ বঙ্গাব্দ। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল। শিরোনাম-‘নূতন গান ও স্বরলিপি'। পৃষ্ঠা ১৫৭-৫৮]
ফাল্গুন ১৮৩৬ শকাব্দ। ১৩২১ বঙ্গাব্দ। পঞ্চাশীতিতম সাম্বৎসরিক ব্রহ্মোৎসবের সায়ংকালীন অধিবেশনের সপ্তম গান। পৃষ্ঠা ১৯৪
পরিবেশনা:
সোমবার,
১১ মাঘ ১৩২১ বঙ্গাব্দ [২৫ জানুয়ারি ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দ]-এ পঞ্চাশীতিতম (৮৫) সাংবৎসরিক
মাঘোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই মাঘোৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথের ১৬টি গান পরিবেশিত হয়েছিল।
এর ভিতরে প্রাতঃকালীন অধিবেশনে পরিবেশিত হয়েছিল ৬টি গান এবং সায়ংকালীন অধিবেশনে
১০টি গান পরিবেশিত হয়েছিল। এই গানটি রচিত পরিবেশিত হয়েছিল
সায়ংকালীন অধিবেশনে।
[মাঘোৎসব-৮৫'তে
পরিবেশিত গানের তালিকা]
রেকর্ড:
১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯২৫
খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত গ্রামোফোন কোম্পানি রবীন্দ্রনাথের বেশ কিছু গানের
রেকর্ড প্রকাশ করে। এর ভিতরে এই গানটি রেকর্ডে গেয়েছিলেন হরেন্দ্রনাথ দত্ত।
এর রেকর্ড নম্বর ছিল
P 5979।
[সূত্র:
রেকর্ডে রবীন্দ্রসংগীত। সিদ্ধার্থ ঘোষ। ইন্দিরা সংগীত-শিক্ষায়তন।
নভেম্বর ১৯৮৯। পৃষ্ঠা: ৯২]
প্রকাশের
কালানুক্রম:
১৩২১ বঙ্গাব্দের
অগ্রহায়ণ
ও মাঘ মাসে
প্রবাসী
পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই বছরের পৌষ মাসে গানটি
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় গানটি প্রকাশিত হয়েছিল।
১৩২১ বঙ্গাব্দের ১১ই মাঘ,
পঞ্চাশীতিতম (৮৫) সাংবৎসরিক মাঘোৎসবে গানটি পরিবেশিত হয়েছিল। এই বছরেই
'গীতালি' নামক গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গানটি প্রকাশিত হয়েছিল। ১৩২৩
বঙ্গাব্দে গানটি
কাব্যগ্রন্থ, নবম খণ্ডের গীতালি অংশে গৃহীত হয়েছিল।
ইন্দিরাদেবী-কৃত স্বরলিপি-সহ এই গানটি
আনন্দ-সঙ্গীত পত্রিকা
'বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩২৪ বঙ্গাব্দ' সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।
১৩৩৮ বঙ্গাব্দের আশ্বিন
মাসে প্রকাশিত গীতবিতানের দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম
সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৩৪৮
খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণে এই গানটি
গৃহীত হয় পূজা পর্যায়ে। ১৩৮০ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত গীতবিতানের অখণ্ড সংস্করণে
পূজা পর্যায়ের ৩৭ সংখ্যক গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
স্বরলিপি
স্বরলিপিকার:
ইন্দিরাদেবী চৌধুরাণী: আনন্দ-সঙ্গীত
পত্রিকায় প্রকাশিত
ইন্দিরাদেবী চৌধুরাণী-কৃত স্বরলিপিটি
স্বরবিতান ত্রয়শ্চত্বারিংশ
খণ্ডে (মাঘ ১৪১২)
-প্রথম স্বরলিপি হিসাবে গৃহীত হয়েছে।
[ইন্দিরাদেবী
চৌধুরানী-কৃত
রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বরলিপির তালিকা]
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর:
প্রবাসী
পত্রিকার মাঘ
১৩২১
বঙ্গাব্দে প্রকাশিত
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপিটি
স্বরবিতান ত্রয়শ্চত্বারিংশ
খণ্ডে (মাঘ ১৪১২)
দ্বিতীয় স্বরলিপি হিসাবে
প্রকাশিত হয়েছে।
[দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর-কৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বরলিপির তালিকা]
সুর ও তাল:
স্বরবিতান ত্রয়শ্চত্বারিংশ (মাঘ ১৪১২) খণ্ডের প্রথম স্বরলিপিটি আনন্দ-সঙ্গীত পত্রিকা (১-২।১৩২৪) থেকে গৃহীত হয়েছে। এই স্বরলিপিটি করেছিলেন ইন্দিরাদেবী-কৃত। ভিন্ন ছন্দে নিবদ্ধ স্বরলিপিটি প্রবাসী (১০।১৩২১) থেকে গৃহীত হয়েছে। এই স্বরলিপিটি করেছিলেন দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। স্বরবিতান ত্রয়শ্চত্বারিংশ খণ্ডের (মাঘ ১৪১২) -এ গৃহীত দুটি স্বরলিপির কোনোটির সাথেই রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপি দুটির যে ছন্দোবিভাজন নিবদ্ধ তা থেকে নিম্নরূপ ধারণা করা যায়–
প্রথম স্বরলিপি:
টানা ছয় মাত্রা ছন্দ
।
এটি রবীন্দ্রনাথের-প্রবর্তিত
তাল। একে অনেক 'টানা
ষষ্ঠী' তাল বলে থাকেন।
[টানা
ষষ্ঠীতালে নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
দ্বিতীয়
স্বরলিপি:
ভিন্ন ছন্দ : ২।৩।২।৩
মাত্রা ছন্দে ঝাঁপতালে নিবদ্ধ।
[ঝাঁপতালে
নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
রাগ: সাহানা। তাল: ঝাঁপতাল। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা, সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬], পৃষ্ঠা: ৭৮।
রাগ: সাহানা,
গৌড়মল্লার (জ্ঞ)।
তাল:
ঝম্পক, ঢালা, ৬/৬/৬/৬।
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত,
প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১],
পৃষ্ঠা: ১৩৫।
[সাহানা রাগে নিবদ্ধ
রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
বিষয়াঙ্গ:
সুরাঙ্গ:
গ্রহস্বর: সা (উভয় স্বরলিপি)।
লয়: