বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
মালা হতে
খসে-পড়া ফুলের একটি দল
পাঠ ও পাঠভেদ:
যেতে যেতে চায় না যেতে, ফিরে ফিরে চায়-
সবাই মিলে পথে চলা হল আমার দায় গো॥
দুয়ার ধরে দাঁড়িয়ে থাকে- দেয় না সাড়া হাজার ডাকে-
বাঁধন এদের সাধনধন, ছিঁড়তে যে ভয় পায়॥
আবেশভরে ধুলায় প'ড়ে কতই করে ছল,
যখন বেলা যাবে চলে ফেলবে আঁখিজল।
নাই ভরসা, নাই যে সাহস, চিত্ত অবশ, চরণ অলস-
লতার মতো জড়িয়ে ধরে আপন বেদনায়॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: [RBVBMS 229] [নমুনা]
পাঠভেদ: গীতবিতানের সাথে পাণ্ডুলিপির পাঠভেদ আছে। এছাড়া স্বরবিতান ৪৪-এর সাথে গীতবিতানের পাঠভেদ আছে। যেমন-
হল
আমার দায়
গো
: স্বরলিপি, স্বরবিতান ৪৪ (পৌষ ১৩৬২)
হ'লো
আমার দায়
গো
: গীতবিতান (আশ্বিন ১৩৩৮)
বর্তমানে এই পংক্তিটি 'হল আমার দায় গো ' হিসাবেই গীতবিতানে পাওয়া যায়।
প্রবাসী [অগ্রহায়ণ ১৩২১ বঙ্গাব্দ] এবং RBVBMS 229-এর পাঠের সাথে গীতবিতানের পাঠের পার্থক্য আছে। নিচে প্রবাসী পত্রিকায় প্রকাশিত পাঠটি তুলে ধরা হলো-
'সামনে এরা চায় না যেতে
ফিরে ফিরে চায়,
এদের সাথে পথে চলা
হল আমার দায়।
দুয়ার ধরে' দাঁড়িয়ে থাকে,
দেয় না সাড়া তোমার ডাকে,
বাঁধন এদের সাধন-ধন
ছিঁড়তে যে ভায় পায়।আবেশ-ভরে ধুলায় পড়ে
কতই করে ছল।যখন বেলা যাবে চলে'
ফেলবে আঁখিজল।নাই ভরসা, নাই যে সাহস,
হৃদয় অবশ, চরণ অলস,
লতার মত জড়িয়ে ধরে
আপন বেদনায়॥
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
রবীন্দ্রনাথের
পাণ্ডুলিপি
RBVBMS 229-তে
লিখিত এই গানের শেষে সময় ও স্থান লেখা আছে- '২৮ ভাদ্র/শান্তিনিকেতন'।
উল্লেখ্য,
১৩২১ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে
রবীন্দ্রনাথের বড় ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুরুলের কুঠি বাড়িতে কৃষি-গবেষণার
জন্য বসবাস শুরু করেছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথ প্রতিদিনই গরুর গাড়িতে সকাল
বেলায় শান্তিনিকেতন থেকে সুরুল যেতেন এবং বিকেলে ফিরে আসতেন। রবীন্দ্রনাথের
এই যাতায়াত শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল
২২শে
আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত।
রবীন্দ্রনাথের এই যাতায়াত
শুরু হয়েছিল ৮ই ভাদ্র থেকে এবং শেষ হয়েছিল
২২শে
আশ্বিন তারিখে রবীন্দ্রনাথ বুদ্ধগয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত।
তাঁর এই আসা-যাওয়ার ভিতরে ২০শে আশ্বিন
পর্যন্ত ৫৭টি গান রচনা করেছিলেন। এর ভিতরে এই গানটি তিনি
২৮ ভাদ্র [সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর] শান্তিনিকেতন-এ
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
কাব্যগ্রন্থ নবম খণ্ড [ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৩২৩ বঙ্গাব্দ। গীতালি ৩৬। পৃষ্ঠা ৪৫৮] [নমুনা]
দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ [বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ। পৃষ্ঠা: ৪৯১] [নমুনা প্রথমাংশ, শেষাংশ]
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ [বিশ্বভারতী, মাঘ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ। পর্যায়: পূজা। উপবিভাগ: বিরহ ২৬। পৃষ্ঠা: ৬৭] [নমুনা]
অখণ্ড সংস্করণ, তৃতীয় সংস্করণ [বিশ্বভারতী ১৩৮০)। পূজা ১৫৩, উপবিভাগ: বিরহ ২৬]
প্রথম সংস্করণ [ইন্ডিয়ান প্রেস, ১৩২১ বঙ্গাব্দ ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ)। গান ৩৬। পৃষ্ঠা: ৪২
রবীন্দ্ররচনাবলী একাদশ খণ্ড (বিশ্বভারতী)। পৃষ্ঠা ২৪২-৪৩।
স্বরবিতান চতুশ্চত্বারিংশ (৪৪) খণ্ডের (চৈত্র ১৪১৩) ২২ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ৫৬-৫৮।
পত্রিকা:
রেকর্ডসূত্র: রেকর্ড সূত্র পাওয়া যায় নি।
প্রকাশের
কালানুক্রম:
১৩২১ বঙ্গাব্দের প্রকাশিত গীতালির
প্রথম সংস্করণ-এ
গানটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এরপর ১৩২৩ বঙ্গাব্দে
কাব্যগ্রন্থ নবম খণ্ড-এর গীতালি অংশে গানটি অন্তর্ভুক্ত
হয়েছিল।
এএ সকল গ্রন্থাদির পরে,
১৩৩৮ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত
গীতবিতান -এর
দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ
-এ গানটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
এর
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের মাঘ মাসে।
এই সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল
পূজা,
পর্যায়ের বিরহ
উপবিভাগের ২৬ সংখ্যক গান
হিসেবে।
১৩৭১ বঙ্গাব্দের আশ্বিন
মাসে প্রকাশিত অখণ্ড গীতবিতানের
পূজা
পর্যায়ের
১৫৩ সংখ্যক গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। গানটি একইভাবে
অখণ্ড গীতাবিতানের তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দের পৌষ
মাসে।
গ. সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলি:
স্বরলিপি: [নমুনা]
স্বরলিপিকার: সুধীরচন্দ্র কর।
সুর ও তাল:
স্বরবিতান-৪৪-এ গৃহীত স্বরলিপিতে গৃহীত
স্বরলিপিটির সাথে রাগ-তালের উল্লেখ নেই।
উক্ত স্বরলিপিটি ২।৩।২।৩
মাত্রা ছন্দে
'ঝাঁপতাল
'-এ নিবদ্ধ।
[ঝাঁপতালে
নিবদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
গ্রহস্বর: না।
লয়: মধ্য।