রামনিধি গুপ্ত (নিধিবাবু)-এর গানের সূচি
অরুণ সহিতে করিয়া অরুণ আঁকি উদয় প্রভাতে।
[গান-১] [তথ্য]
আমি কি কখন তোমা বিনা সুখী [গান-১৬] [তথ্য]
আর কি সহে প্রাণ বিচ্ছেদ অনল [গান-১৯] [তথ্য]
উদয় অরুণ মলিন হৃদয় কমল। [গান-৩] [তথ্য]
এই কি তোমার প্রাণ ছিল (হে) মনে? [গান-১০] [তথ্য]
এমন পিরীতি প্রাণ জানিলে কে কার। [গান-৬] [তথ্য]
কেন পিরীতি করলাম! মজিলাম হায় [গান-৯] [তথ্য]
তোমার সাধনা করি সাধনা পূরিল। [গান-৮] [তথ্য]
দিবা অবসান হয়,কখন পাব তারে? [গান-১৩] [তথ্য]
দেখ না সই! এ কি বিষম হইল পিরীতি মোরে। [গান-৪] [তথ্য]
দেখ না সই, প্রভাতে অরুণ সহ উদয় শশী। [গান-২] [তথ্য]
নয়ন অন্তরে অন্তরে তোরে নিরখি মন নয়নে। [গান-১১] [তথ্য]
নয়ন কাতর কেন,তাহারে না দেখিলে। [গান-১৪] [তথ্য]
নয়নঘরে দেখরে প্রবল বিরহানল। [গান-১২] [তথ্য]
নয়নেরে দুঃখ দিয়া মনেতে সদা উদয়। [গান-১৫] [তথ্য]
বিনয়ের বশ যদি হইত যামিনী। [গান-৫] [তথ্য]
বিলাসে অলস রস কি হবে? [গান-১৮] [তথ্য]
ভয় রবে,রাগ,নিদয় করো না। [গান-১৭] [তথ্য]
যুগল খঞ্জন হেরি বদন কমলে। [গান-৭] [তথ্য]
সুজন সহিত প্রম,কি পরমাধিক সুখ,করেছে সে জানে। [গান-২০] [তথ্য]
২১
ভৈরব ॥ জলদ
তেতালা ॥
মন কোথাআছয়ে হে বল অন্য মন।(প্রান)
যা আছে তোমার কাছে তুমি কি জান॥
তব ধ্যান দিবানিশী,করি এই অভিলাষী।
ইহা বিনা প্রিয় আর না জানি কখন॥১॥
২২
ভৈরব ॥জলদ তেতালা ॥
তুমি হলে রাজেন্দ্র,আমি তব দাসী।
তোমার অধিনী হয়ে থাকি ভালোবাসি॥
করি অনেক সাধন
এমন হয়েছে মন।
ইহাতে সদায় থাক,সুখী দিবানিশি॥১॥
২৩
ভৈরব ॥ জলদ তেতালা ॥
তুমি মোর সুখের কারন প্রিয়সি!
সদা উল্লাসিত চিতহেরি মুখশশী॥
রাজেন্দ্র যদি লো আমি
রাজেন্দ্রাণী হলে তুমি।
উভয় পিরিতে হয়,দাস কেহ দাসী॥১॥
২৪
ভৈরব ॥
জলদ তেতালা ॥
না বল্যা গেলে কেনে(গেলে কেমনে)মনেরে প্রোবধি কেমনে
বিচ্ছেদ বিষ অনলেজ্বলি দুই
জনে॥
বলা না বলিতে বটে,
বিচ্ছেদ ইহাতে ঘটে।
তথাপি কারণ জানি,থাকি আনমনে ॥১॥
২৫
ভৈরব ॥ জলদ তেতালা ॥
একপল বিপল না হেরি,
ওলো,হতো মোর নয়ন সজল।
অধিক বিলম্বে এবে,সে জল শুখায় গেল॥
অন্তরে জ্বলিছে অতি বিরহ অনল।
নিশ্বাস পবন তাহা সহকারি করে ভালো॥১॥
২৬
ভৈরব ॥ জলদ তেতালা ॥
এই কি করিতে উচিত অবলা সরলা দনে (প্রান)
দরশন সুখে দুঃখ করহ কি নিদর্শনে॥
এমন করিবে জদি জান মনে মনে।
কপট বিনয় ছলে ভুলাইলে কেনে।
এই হলো,যায় প্রান,ক্ষতি কি হের নয়নে॥১॥
২৭
ভৈরব ॥
জলদ তেতালা ॥
এতো সাধে এই হল,-কুলে কলঙ্ক করিলাম
মম সাধনা অতীত,বুঝি হে তোমারে,
নহিলে সদয় তুমি হইতে আমারে
দিবানিশি তব ধ্যান জ্ঞান করিয়া দেখিলাম ॥১॥
২৮
ভৈরব ॥ জলদ তেতালা ॥
মনেতে উদয় জাহা,নাপারি কহিতে।
হদয়নিবাসি তুমি হয় দে বুঝিতে
আমার মনের মত করিতে উচিত।
অধিক কথন আর না যায় লাজেতে ॥১॥
২৯
ভৈরব ॥ জলদ তেতালা ॥
আমার এ যাতনা কে কবে তারে
না থাকিলে কুলভয়,তবে কি সাধি কারে
তারে পেলে যত সুখী, জানে মোর জন আঁখি
লাজ প্রতিবাদি হয়ে মজালে মোরে ॥১॥
৩০
ভৈরব ॥ জলদ তেতালা
॥
আমি লো তাহার,তাহার মনে।
সে আমার,মোর মনে।
দেখ দেখি কত সুখ,উভয়ে প্রেম দুজনে॥১॥
৩১
ভৈরব ॥ জলদ তেতালা
॥
কাজল নয়নে আর দিও না কখন।
শরে কেবা নাহি মরে বিষ যোগ তাহে কেন
তোমার কটাক্ষেকেহ না বাঁচিতে প্রান।
বাঁচিবার এক হেতু তাহা আছে শুন
সুধা,হলাহল,সুরা-নয়নের তিন গুন ॥১॥
৩২
ভৈরব ॥ জলদ তেতালা
॥
মনে বুঝি প্রান প..ছে মোর।
তেঁই সে এসেছ নাথ আতদিন পরে
পিরীতি করিয়ে প্রান,কে কোথা এসে পুনঃ,
ভুলিয়ে এসেছ বুঝি মন রাখিবারে ॥১॥
৩৩
ভৈরব ॥
তাল
হরি
॥
অন্তরে অন্তরে (অন্তরে অন্তরে)অন্তর হবে কেন?
ঊর্ধ্ব দিনমণি, সলিলে নলিনী,মনেমনে একই মনঃ।
চক্রবাক চক্রবাকী,
নিশিতে বিচ্ছেদ দেখি।
অন্তরে অন্তর দেখ পিরীতের এই গুন ॥১॥
৩৪
ভৈরব ॥
ঢিমে তেতালা
॥
যদি সুখে থাকিবে
হে,শুন মন রাজন।
অহঙ্কার দুর কর,ক্রোধ নিবারণ
প্রেমের প্রয় জানিবে,
মোহ নিকতে না জাবে।
বিরহে যত জ্বলিবে,তত সুখ জান॥১॥
৩৫
আশা
ভৈরবী ॥ জলদ তেতালা
॥
এত কিরে জানি,হরিয়ে লইবে মন হাসিতে হাসিতে।প্রান।
কিছুই নাহিক দোষ,কেবল সে বিধুমুখ,দেখ দেখিতে দেখিতে
কিবা দিবা বিভাবরী
পাসরিতে নাহি পারি,
আঁখি অনিমিষ পথ হেরিতে হেরিতে
॥১॥
৩৬
ভৈরবী ॥
জলদ তেতালা
॥
যতনে রতন লাভ শুন মনমহিনী।
অযতনে প্রনধন কোথা হয় ধনি।
যে ভাবে ভুলায় মন,
হরিয়ে লইয়ে প্রান,
সে ভাবে অভাব লাভ ভাব বিনোদিনী ॥১॥
৩৭
আশা ভৈরবী ॥
জলদ তেতালা
॥
উভয়
মিলন সুখ পিরিতিরতন
একের যতনে দুঃখ না যায় কখন
মন মনেতে মিলন,
হলে সুখি হয় প্রান।
ইহাতে অন্যথা হলে ভাবহ কেমন ॥১॥
৩৮
খট্ ভৈরবী ॥ জলদ তেতালা
॥
বিষম হইল সখি,কি করি ইহাতে।
নাদেখিলে ঝুরে আঁখি,না হেরে মানেতে
প্রবল মন অনল,
নয়ন সদা সজল।
দ্বিগুন দহিছে প্রান দোঁহার রিতেতে ॥১॥
৩৯
খট্
ভৈরবী ॥ জলদ তেতালা
॥
প্রেম সুখের সাগর,জানি প্রথমেতে।
যতন করিয়েপ্রান সঁপিলাম তাহাতে
হইল রতন লাভ,
কথায় কত কহিব।
দুখ উপজিবে ইথে,ছিল না মনেতে ॥৩॥
৪০
খট্ ভৈরবী ॥ জলদ তেতালা
॥
মনের যে আশা,তাহা যদি না পুরিত।
তবে কি পরান কেহ রাখিতে পারিত?
দেখ না চাতকী ঘন,
দিবানিশিকরে ধ্যান
বারিদানে তোষে তারে না রাখে তৃষীত॥১॥
তার সাক্ষী প্রদীপ,পতঙ্গ আসিত।
হইয়ে আগেতে দেখ,হয় প্রজ্বলিত ॥২॥
তার আশ
পুরাইতে,
পতঙ্গ পুলক চিতে,
আপনি জ্বলয়ে তাতে,রাখিতে পিরীত ॥৩॥
৪১
বিভাস॥
জলদ তেতালা
॥
তুমি মোর প্রান ধন মন সকল
ওলো।
এই সে কারনে আমি হইলাম রাজেন্দ্র
নির্ভয় শরির মোর,প্রেম
পূর্ণাচন্দ্র
জ্বলিয়ে বিরহানলে,এবে মিলন সলিলে,হয়েছি সুস্হির।
রিপুগন নিজজন,দুই এবে প্রিয়োজন
এমন সময়ে মম,দেখ না কি সুন্দ্র ॥১॥
৪২
বিভাস
কল্যান ॥ জলদ তেতালা
॥
মঙ্গলাচরণ কর সখিগণ!
আইল মনোরঞ্জন,গাও এমনকল্যান
নয়ন কলশ মোর,আনন্দ সলিল পুর।
ভুরু আম্র শাখা তাহে বাখান
কাহ কর অধিবাস
কেহ শঙ্খে পূর স্বাস,হয়ত বিধান
কেহ বা বারণ কর,কেহ শুভ ধ্বনি কর,
জতুক-স্বরুপমোরে দেহ দান ॥১॥
৪৩
নলিত
বিভাস॥
জলদ তেতালা
॥
এমন সুখের নিসি কেন পোহাইল।
কহিতে না পারি আমি,কত খেদ উপজিল
নিশির তিমির গুন,তাহে মনঃ সুখী ছিল।
তমোহন্তি দিবাকর,হেরি মনঃ কালী হল॥১॥
৪৪
শ্যাম
॥
জলদ তেতালা
॥
মনে করো সমাদর থাকে কি কখন?
ইথে মনোভার,বল না তোমার হইল কেন?
জ্বলিলে মান আগুন,
কেমন করয়ে প্রান,
বোধ নাহি থাকে তখন।
তুমি যত সাধ,উপজয়ে ক্রোধ,বোঝ বচন ॥১॥
৪৫
শ্যাম ॥
জলদ তেতালা
॥
একেবারে ভুলিলে কি প্রান অধিনী
জনে
দেখ দেখি অহর্নিশি,তুমি মোর মনোবাসি নাহি তব মনে
চাক্ষুষ বিহনে দুঃখ,কহিতে বিদরে বুক,
এবে নিবেদন মোর,মনো হইতে অন্তর,হয়ো না বেনে ॥১॥
৪৬
কালাংড়া॥
জলদ তেতালা
॥
হেরিলে হরিষ চিত,না হেরিলে মরি।
কেমনে এমন জনে রহিব পাসরি
মনঃ তার মনে মিলে,প্রান লয়ে সমর্পিলে।
নয়ন তৃষিত সদা,দিবা বিভাবরী ॥১॥
৪৭
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
বদন শরদ শশী পাষান হৃ্দয়।
অমিয় সমান ভাষিমৃদু হাসি তায়
লইয়ে কুন্তল ফাঁসি,আঁখি চোর আছে বসি।
মনের গলেতে দিয়া প্রান হয়ে লয়॥১॥
৪৮
কালাংড়া॥
জলদ তেতালা
॥
মুকুরে আপন মুখ সদত দেখ না ধনি।
আপনার রুপ,দেখি অপরুপ,অধীনে ভুল কি জানি
দেখ আপনার ধন,
সদত দেখে না জন,
করিতে যে ব্যায়,তার হয় দায়,সকলের মুখ শুনি ॥১॥
৪৯
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
মুকুরে আপন মুখ হেরিলে যে হয় সুখি।
নয়নে আমার,বাস হে তোমার,এই সে কারন দেখি
আদর্শে দর্শনে মিখ,সৌন্দ্যর্য হয় অধিক
রুপের যতন,তোমার কারন,জানে হে তোমার আঁখি ॥ ১
॥
৫০
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
মিলনে যতেক সুখ,মননে তা হয় না।
প্রতিনিধি পেয়ে সই,নিধি ত্যজা যায় না
চাতকির ধারাজাল,যাহাতে হয় শীতল;
সেই বারি বিনা আর অন্য বারি চায় না ॥ ১
॥
৫১
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
মনে মনে প্রান, করিলে হে প্রান,প্রকাশবদনে
হুতাশন আচ্ছাদন হয় কি বসনে?
যে যার অন্তরে থাকএ
অন্তরে অন্তরে দেখে,
মান কি কখন,প্রান,থাকয়ে গোপন ॥ ১
॥
৫২
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
হেসে হেসে প্রান,করিলে পয়ান,হানিয়া নয়নে
সেই অবধি মোর মন গেল কোনখানে
আসার ভরসা করি,
শূন্য দেহ আছি ধরি।
সচেতন হব তবে পুনঃ দরশনে ॥ ১ ॥
৫৩
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
যে গুণ ভুলালে,অবলা সরলে,সে কি গুণ গুনমণি
আমার কি আছে গুণ,বুঝিব তোমার গুণ,নিজগুণে বল গুণি॥
শয়নে স্বপনে আর,
অদর্শনে নিরান্তর।
মনমে দেখি তোমারে,ভুলি আমি
আপনারে,
চাক্ষুষে সুখে তমনি
॥ ১
॥
৫৪
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
অনিবারে দহে নম।
না হেরে তব ও বিধুবদন
॥
হেরিলে কি সুখী হই,না যায় কথন।
আপনারে ভুলে আমি থাকি হে তখন ॥ ১
॥
৫৫
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
যার এত গুন সই,সে কেন এমন?
কখন কখন ইথে খেদান্বিত মনঃ
বুঝি এইরুপহবে করি অনুমান।
কমলে কন্টক আছে বিধির টন
॥ ১ ॥
৫৬
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
সরস বদন মম কমল নয়ন।
মম ষটপদ মম অচল চরণ ॥
রতন যতন কর,মম ধন ততঃপর,
অপদ অবল বল,হয় অযতন
॥ ১ ॥
৫৭
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
শশধর ধরে,আপন উপরে,বরিসখী কমলিনী।
ভুরু ভৃঙ্গ মধুপান,করে কর দরশন,মোহিত দিবারজনী
॥
কেশ ঘন ঘন রুপ,কিবা শোভা অপরুপ,শিখি সখা অনুমানি
॥ ১ ॥
৫৮
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
নিবিড় নীরদ সহ উদয়
সরদ শশী।
দেখ সৌদামিনী তাহাতে বাখানি,তার মৃদু মৃদু হাসি ॥
যুগল
খঞ্জন যায়,বোধ হয় অভিপ্রায়,
কি কমল দল,শুভিয়াছে ভালো মৃগ আঁখি ভালোবাসি
॥ ১ ॥
৫৯
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
ওরে কে লুকায়ে মোরে যাইছে দ্রুত গমনে?
মননয়ন প্রহরী,তুমি তার কাছে চুরি করিবে বল কেমনে?
আশা সহ মোর মনঃ,রক্ষক তব কারণ,অন্য ভাব কেন?
যেখানে থাক যখন,আমি সেখানে তখন,বুঝে দেখ মনে মনে
॥ ১ ॥
৬০
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
চল, যাইলো সখি!যেখানে মনোহরণ।
চিত না ধৈরয ধরে,নয়ন রোদন করে,কাতর অতি পরাণ ॥
লোকের গঞ্জনা ভয়,করিলে কি প্রান রয়,বুঝ না এখন।
অতএব ত্বরান্বিত,হইতে হয় উচিত,বিলম্বের নাহি গুণ
॥ ১ ॥
৬১
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
গুণের সাগর হে তুমি গুণ নিধি।
তোমার যতেক গুণ,কহিতে আমি নির্গুণ,জানে কি বিধি?
কি কব তোমার গুণ,যে গুণ মোহিত মন,মোর নিরবধি।
তব গুণে যত সুখ,কুলের কপালে ধিক্ করেছে বিধি
॥ ১ ॥
৬২
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
সরোজ উপরে দেখ শোভে কুমুদিনী।
তারপর মধুকর মিহিত অমনি॥
দিবাকর নিশাকর
তার মধ্যে শোভাকর।
অরুন অবোধে শশী নিরখ অনমি
॥ ১ ॥
৬৩
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা
॥
আলাভ জানিলে কেহ করে সঁপে প্রাণ।
কতজন গঞ্জন করে,দেখ রাত্র দিন।
সে কথা শ্রবণে না শুনে কখন ॥ ১ ॥
সুজনে সুজনে সুখ,কুজনে সুজনে দুখ।
মত মত বিনা চিত সদা জ্বলাতন
॥ ২ ॥
৬৪
কালাংড়া ॥
তাল হরি ॥
লোকলাজ কুলভয় কি কর মনো মজিলে।
যারে সদাক্ষণ,প্রাণ,প্রাণ প্রান করে,বাঁচে কি তারে ত্যাজিলে?
দেখিবারে যার মুখ,
নয়ন পাগল দেখ,বচন শ্রবণে ভুলালে।
পরশ পরশে,নাসিকা সুবাসে,রসে রসনা শেষ শুনিলে ॥ ১
॥
৬৫
কালাংড়া ॥
তাল হরি ॥
রতিপতি অতি দুঃখী হে সখি!মম দুঃখেতে।
জানি মনোমত,তথাপিহ নাথ,এত চাতুরী করে কেমতে॥
কি কহিব মনোজেরে,
দুঃখ দেয় অবলারে,কি সুখ তাহার ইহাতে।
পুরুষের ভয়,
হয় অতিশয়,হয় এই মোর মনেতে ॥ ১
॥
৬৬
কালাংড়া ॥
তাল হরি ॥
অনেক যতনে তোমারে পেয়েছি।
বিরহ অনলে আমি সদা জ্বলেছি ॥
জনরব বিষধর,
খাইয়াছি নিরান্তর
মিলন অমিয় পানে এবে বেঁচে আছি ॥ ১ ॥
৬৭
কালাংড়া ॥
তাল হরি ॥
আমি হে তোমার,তুমি তো বুঝিয়াছ।
ভাবনা ইহাতে মোর দুরে রেখেছে ॥
আমি হে তোমার প্রাণ,
জানাইতে প্রাণপণ,
করেছিলাম যেমন,-তুমি জেনেছ ॥ ১
॥
৬৮
কালাংড়া ॥
তাল হরি ॥
প্রবল প্রতাপে বুঝি প্রান!তুমি কি
ভুপতি হলে?
আমার আশারে তুমি অনা'সে বান্ধিলে॥
আশা উদ্ধারিতে মন,
গেল হে তব সদন।
সেই পথ হল সেও,তারে কি করিলে ॥ ১
॥
লাজ ভয় শান্ত মতি,
বিরহ প্রবল অতি
ইহারে দমন কর,রাজা যে বলালে ॥
২ ॥
৬৯
কালাংড়া ॥
তাল হরি ॥
মৃদু মৃদু হাসি প্রাণ!মনের তিমির নাশে।
এরুপ দেখিয়ে হৃদি-কমল প্রকাশে ॥
পাছে তব রোষ হ্য়,সদা মোর ওই ভয়,
প্রাণ কি কখন সুখী তোমার বিরসে? ॥ ১
॥
৭০
কালাংড়া ॥
তাল হরি ॥
সেই সে পিরীতি প্রাণ,পারে কো রাখিতে।
দুখে সুখ অনুভব যাহার মনেতে;
প্রেম করা নাহি দায়,
রাখিতে কঠিন হয়।
মান অপমান ভয়,নাহি যার চিতে ॥ ১ ॥
৭১
কালাংড়া ॥
তাল হরি ॥
তিমির কি থাকে ওলো শশীর কিরণে?
উৎপত্তি যা অদর্শনে,নাশ দরশনে ॥
মুদিত কমল যদি,হেরলো(হেরেলো) অরুণে।
প্রফুল্য(ল্ল)হয় তখনি,বুঝলও মননে ॥ ১
॥
৭২
পড়জ
কালাংড়া ॥
ঢিমে তেতালা ॥
আল্যা প্রাণ,আল্যা আল্যা হে,মম গৃহে অনুগ্রহে করিয়ে।
শীতল হইলাম আমি,বিরহ জ্বলিয়ে
কত সুখ উপজিল তোমারে হেরিয়ে।
বুঝাতে না পারি তাহা কথায়ে কহিয়ে ॥ ১ ॥
৭৩
পড়জ
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা ॥
কহিতে তাহার কথা উপজে সুখ অপার।
তখন অন্য ভাবনা থাকেনা আমার ॥
কহিবারে তার গুণ,এক মনোহয় মনঃ,
রসনা অবশ নহে,কহি যতবার ॥ ১
॥
৭৪
পড়জ
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা ॥
ভাবিতে ছিলাম যারে,সেই আসি প্রকাশিল।
দুখানল হৈতে মনঃ সুখেতে ডুবিল ॥
বিচ্ছেদ বিষজ্বালায়,
অস্থির ছিলাম তায়।
হেরিয়ে তাহার মুখ সে যাতনা গেল ॥ ১
॥
৭৫
পড়জ কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা ॥
সতের পিরিতিরীতি ঐ দেখনা সেই কপট অন্তরে।
লইয়ে দর্পন,দেখহ যেমন,রাখিলে রাখিল দুরে॥
মদন বিহীন
রতি,নিশিহীন নিশি পতি,
রবি কুমুদিনী,শশি কমলিনী,কি সুখ হইতে পারে
॥ ১
॥
৭৬
পড়জ
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা ॥
যে আমার মনোবাসি
মনোমোর তার হতেতে।
যেনম দর্পণ হাতেতে আপন,দেখিলে আপনি তাতে॥
মান অপমান জ্ঞান,নাহি করি কদাচন,
করিলে দেখ না,আপন যাতনা,তবেকি পারি বাঁচিতে?॥
১ ॥
সুখ দুখ সমভাব,না করিয়ে কি করিব?
হইয়ে অধীন,করিল অধীন নিধি উভয় মতেতে ॥
২ ॥
৭৭
কালাংড়া
খম্বাজ ॥ ঢিমে তেতালা ॥
কিছু তারে বলো না,বলে কি হবে বল।
বিরহ অনলে মোরে,জ্বলিতে হইল॥
সে যদি বুঝেছে ইহা,ভাল সে হতো ভাল।
হইবে অনেক সুখ,এই বোধ ছিল ॥
তা না হয় দুকমুখ,দেখ,দেখিতে হইল ॥
১ ॥
৭৮
সরফরদা
কালাংড়া ॥
জলদ তেতালা ॥
অধরে না ধরে,ধরে না কহিবারে তব গুণ।
যে গুণে বদ্ধ হইল,এমন চঞ্চল মনঃ॥
একমূখে কি কহিব,হলে
সতানন(শতানন)
তথাপি নাহি পারিব কহিতে আমি কখন ॥
১ ॥
৭৯
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
হে প্রাণনাথ!নয়ন অন্ত তুমি যাইও না।
প্রবল বিরহানলে জ্বালাইও না ॥
এসো হে নয়নে রাখি,
পলক মুদিয়ে থাকি।
না দেখ,না দেখি কারে,এই বাসনা ॥
১ ॥
৮০
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
কেমনে বল তারে ভুলিতে ?
প্রাণ সঁপিয়াছে যারে অতি যতনেতে ?
ইথে যদি দুখ
হয়,হইবে সহিতে।
দিয়ে ফিরে লয়া এবে হয় কি মতেতে ?॥
১ ॥
৮১
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
আর কি দিব তোমারে,সঁপিয়াছি মনঃ।
মনের অধিক আর কি আছে রতন ॥
ইহার অধিক আর,থাকে যদি জান।
তাহা দিতে নহি আমি কাতর কখন ॥
১ ॥
৮২
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
মিলন অমিয় পাণ করিতে বাসনা মনে।
এ হেতু বিচ্ছেদ বিষে হয় জ্বালাতনে ॥
নহে সুখী,নহে দুখী,প্রেম নাহি জানে।
সুখী দুখী সেই সখী (সখি) এ রস যে জানে ॥
১ ॥
৮৩
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
কেন বিধি নিরমল কমলে কণ্টক?
দেখ শশধর,নাশয়ে তিমির,তাহে করিল কলঙ্ক।
বিষধর মণি ধরে,মুকুতা শুক্তি উদরে।
এমন বিচার, শংসারে যাহার ইথে খেদের কি অন্তক?॥
১ ॥
৮৪
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
এখন কোথা তারা নাথ বিহনে?
নিদ্র্রা রিপু হয়ে,মারিত জ্বালায়ে,এবে না অইসে যতনে॥
কোথা সেই হাসি গেল,কোথা গেল মান
এবে সে এই হইল,লাভ হে রোদন॥
অঙ্গে আভারণ,না সহে এখন,দহিছে কেবল মদনে ॥
১ ॥
৮৫
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
বলনা আমারে সই বাঁচিব কেমনে?
প্রান সঁপিলাম যারে না হেরি নয়নে ॥
এমন হইবে আগে,নাহি জানিতাম।
জানিলে এমন প্রেম নাহি করিতাম॥
পিরীতে এই ত সুখ,শংশয় জিবনে ॥
১ ॥
৮৬
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
বিচ্ছেদে যায় প্রাণ,না পারি রাখিতে।
কাতর নয়ন মনে,নাগিল কহিতে॥
শুনি মন করে ধ্যান,প্রাণের বাঁচাতে।
চাক্ষুষ বিহনে নাহি উপায় ইহাতে ॥
১ ॥
৮৭
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
অলিরাজ ! যেখানে বিরাজ,ভুল না কমলে।
দিবাবিভাবরী,তব ধ্যান করি,ভাসি
হে সলিলে॥
এ রিত তোমার আমি ঘুচাইতে পারি।
তুমি ভাসিবে নয়নের জলে।
ইহাতে অধিক,আমার হে দুঃখ,
কি হবে কহিলে ॥
১ ॥
৮৮
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
কমলিনি কেন অভিমানীঅতীন ভ্রমরে।ও।
নয়ন অন্তর,হইল অন্তর,সতত কাতরে॥
অন্য অন্য ফুলগণ,আমি সকলের প্রাণ,তিষিতে উচিত সবারে।
তুমি মোর প্রাণ,বিরসে মরণ,কি কব তোমারে ॥
১ ॥
৮৯
সরফরদা ॥
জলদ তেতালা ॥
তব অবিশ্বাসে,ঘন ঘন শ্বাসে,দহে সদা মন।
বিষম হইল মোরে,কিসে বুঝাব তোমারে,তুমি মোর প্রাণ ॥
নিঃসন্দেহ করিতে হয়,
সন্দেহ তাহে উদয়।
বারে বারে কতোবার,জানাব আমি তোমার,তুমি মোর প্রাণ ॥
১ ॥
৯০
সরফরদা ॥
তাল হরি ॥
শুন,শুন,শুনলো প্রান!কেন তুমি হো কাতর?
মনঃ প্রান আখি,যারে দাখে সুখি,তাহারে কি রোষ হয় আমার?
আসা আশা করি
কেবল তোমারি,
বুঝলো বিচারি কারে হারি।
লয়ে তব মনঃ মনঃপুরে মন,করে রস পান,আশা আমার ॥
১ ॥
৯১
সরফরদা ॥
তাল হরি ॥
আইস আইস হে প্রাণ ! বৈস ! আমি বশ তোমার।
করিয়ে যতন,সঁপিলে যে প্রাণ,তার পর কেন,রোষ তোমার ॥
অন্তর অন্তর,দহে নিরন্তর,নয়নে নীর নাহিমোর।
আশা আশা হতে,নাহি দেয় যাতে,
আর কোন পথে,আশা তোমার ॥
১ ॥
৯২
এলাইয়া॥
ঢিমে তেতালা ॥
জলে কমলিনী জ্বলে;কোথা মধুকর।
বিরস অনল জ্বলে,জ্বলে নিরন্তর ॥
বিচ্ছেদের শরজালে ডুবিল আকার।
ভাসিছে নয়নজলে জলে অনিবার ॥
১ ॥
৯৩
এলাইয়া॥
ঢিমে তেতালা ॥
কার মন্ত্রণা শুনি প্রাণ ভুলিলে অধীনে?
আমি তব ধ্যানে থাকি,না হের নয়নে ॥
১ ॥
৯৩
এলাইয়া॥
জলদ তেতালা ॥
তুমি যারে চাহ,সে না রাখে মান।
ইহাতে অন্যথা কভু ভেব না লো প্রাণ ॥
না বুঝিয়া খেদ কর,উপায় কিবা ইহার,
সন্দেহ আপনজনে,কোরো না কখন ॥
১ ॥
৯৪
এলাইয়া॥
জলদ তেতালা ॥
আমি যারে চাহি,সে না রাখে মান।
এমন পিরীতে বল
কিবা প্রয়োজন ॥
অতএব এই হয়,দেখ,কেহ কারর নয়,
আপন বলিব তাঁরে,বাঁচায় যে প্রাণ ॥
১ ॥
৯৫
এলাইয়া॥
জলদ তেতালা ॥
নিশি পোহাইয়ে প্রাণনাথ প্রভাতে আইলে।(হে)
আমার আসার সুখ কারে বিলাইলে ॥
যেরুপ যামিনী গত,
সে দুঃখ কহিব কত?
জানিলাম প্রাণনাথ,লি হবে কহিলে ॥
১ ॥
কামিনি সহিত তুমি,
রতিপতি সহ আমি।
ইহা বুঝি অনুমানি মনে না করিলে ॥
২ ॥
৯৬
যোগিয়া ললিত॥
জলদ তেতালা ॥
প্রত্যয় না হয়তারে,যে সঁপিল পরাণ।
প্রান লয়ে অবিশ্বাস,এ আর কেমন ॥
দিবানিশি যার ধ্যান,যার গায় গুন।
সে ভাবয়ে অবিশ্বাসী,বিচার এমন ॥
১ ॥
৯৭
যোগিয়া গান্ধার॥
জলদ তেতালা ॥
যেকানে থাকহ প্রাণ,ভুল না অধিনী জনে।
অস্থি মোর জ্বর জ্বর,লোকের গঞ্জনে ॥
তোমা বিনে কেহ যদি অন্য নাহি জনে।
ক্ষতি কি তোমার হবে তাআর দেখনে ॥
১ ॥
৯৮
যোগিয়া গান্ধার॥
জলদ তেতালা ॥
কেমনে রহিব প্রাণ,না দেখিয়ে তোমারে।
চকোরী কি হয়সুখী,না হেরে সসিরে?
প্রাণ বিনে শুন্য দেহথাকে কি প্রকারে?
শশী বিনে নিশিকোথা বল শোভা করে ॥
১ ॥
৯৯
ভাটিয়ারী॥
জলদ তেতালা ॥
আমি হে তোমার, প্রাণ,অতি সোহাগিনী।
যখন দেখহমোরে,পাও কত মণি ॥
যদি থাকহ অন্তর,তোমার বিরহ শর,
বলে মোর কানে কানে-সুখে থাক ধনী(ধনি) ॥
১ ॥
তোমার পএইণ বচন,শুনিলে সখী শ্রবন,
তব আদরে শরীর হরযিত জানি ॥
২ ॥
১০০
ভাটিয়ারী॥
জলদ তেতালা ॥
আমার মন মহিনি তুমি,আমি জানি।
হরিয়ে লইয়ে মনঃ হ'লে সোহাগিনী ॥
মনের অধিক ধন,
আর কোথা আছে জান,
সে ধোন তোমার কাছে আছে বিনোদিনী ॥
১ ॥
করিলে অতি যতন,
তবে ত থাকে রতন।
অযতনে ধন কোথা থাকে ওলো ধনি ॥ ২
॥
১০১
মালকোষ॥
জলদ তেতালা ॥
কি হবে ওলো সই বাঁচিব কেমনে?
বিষম বসন্ত,মদন দুরন্ত,বিবাদি নিতান্ত,
বিরহী জনে ॥
ফণির(ফণীর)স্বভাব হয়,
দংশিলে পরে পালায়।
বসন্তের দূত, ফনি বিপরীত
বন্ধিয়া চিত,
দংশে সঘনে ॥
১ ॥
শশধর হরভালে,
নয়ন অনলে জ্বলে।
আপনি জ্বলয়,পরেরে জ্বলায়,তাহাতে কি হয়,
ভালো কখনে ॥ ২
॥
১০২
মালকোষ॥
জলদ তেতালা ॥
এ দুঃখার না যায় সহনে।
এবার জনম,লইব এমন,বধিব জীবন,ঋতু রাজনে ॥
বসনগতের সেনাগণ,প্রধান তাহে মদন।
হর আরাধিব,মদনে মথিব,রতিরে রাখিব,বিরহ বনে ॥
১ ॥
শশীর উদয় দায়,বিষম হল আমার।
রাহু যে হইব,বিধু গরাসিব,চকর দেখিব,বাঁচে কেমনে॥ ২
॥
অলিকুলের ঝঙ্কার,সদা অচেতন করে।
কুসুম কানন,করিব ছেদন,অলি দহে যেন মধু বিহনে ॥
৩
॥
বিষরবেতে কোকিল,হৃদয়ে হানয়ে শেল।
হইব যে ব্যাধ,করিব যে বধ,তবে মোর সাধ,পুরিবে মনে ॥
৪
॥
১০৩
মালকোষ॥
জলদ তেতালা ॥
হিম শিশিরান্তে বসন্তে ব্যাকুল বিরহিনী।
মনে প্রানকান্ত তথা রতিকান্ত দহে দিবসরজনী
॥
রবির সমান সম,
কুসুম কৃশাণু সম,চন্দনের ওই গুণে বাকানি।
মলয়া সমীর,
কোকিলের স্বর,হলাহলাধিক শুনি
॥ ১
॥
১০৪
মালকোষ॥
জলদ তেতালা ॥
পলকে পলকে মান সহিব কেমনে?
সদা প্রফুল্লিত হেরি,বাসনা মনে
মলিন মুখ কমল,
হারিলে হৃদি কমল,
বুঝে দেখ,বিকসিত হইবে কেনে
॥ ১
॥
১০৫
মালকোষ॥
জলদ তেতালা ॥
হাসিতে হাসিতে মান সহনে না জায়।
করিয়ে অমিয় পান,বিষ কোথা খায়
॥
বিধুমুখে মৃদু হাসি,
সদা আমি ভালবাসি।
ইহাতে বিরস হলে প্রাণ বাহিরায়
॥১॥
১০৬
মালকোষ॥ তাল
হরি ॥
দ্রুত গমনে কি এত প্রয়োজন?একি প্রয়োজন নহে?
অন্তরর অন্তরে,কিসে হবে স্থির,রহ রহ রহ,করি দরশন ওহে ॥
প্রাণ যাবার সময়,কে বে কাতর না হয়?
অনায়াসে যায়,নাহি দেখ তায়।
দুঃখ অতিশয়,বরংকখন সহে
॥১॥
১০৭
মালকোষ॥ তাল
হরি ॥
প্রেম অন্তর কি হয়?প্রয়জন অতি নয়ন অন্তরে।
নয়নের মত,দেখিলত সদত,বল বল বল,এমন কে পারে কারে?
অন্তরেতে ভাবান্তর,
হলে ষে হয় কাতর।
ভাবের ভাবনা,ভাবিয়ে দেখনা,সেথায় যন্ত্রণা,
কে কোথায় দেয় কারে?
॥১॥
১০৮
মালকোষ॥ তাল
হরি ॥
মনে করি,ভুলে তোরে থাকিব সুখেতে।
না দেখিলে দহে প্রাণ,মরিহে দুঃখেতে॥
কি জানি কেমন আঁখি,
না দেখিলে সদা দুখী
প্রান কহে,বল দেখি,করি কি ইহাতে ॥
১ ॥
নিদয় হইয়ে কেন,
চাতুরী করহ প্রাণ
আপন হইলে তারে,হয় কি ত্যাজিতে ॥
২ ॥
১০৯
মালকোষ॥ তাল
হরি ॥
নয়ন জলে ঘেরিলে সকল,ও মৃগনয়নি!
মন করি মোর,পালাবার পথ তার,নাহি হেরি বিনোদিনি!
হেতু নিজ প্রয়োজন,যদি করিলে এমন।
সহাস্য বদনে,তোষ অমিয় বচনে,উচিত হয় লো ধ্বনি ॥
১ ॥
১১০
মালকোষ॥ তাল
হরি ॥
মদনেরে শান্ত কর,কান্ত সরস বসন্ত।
করে মলয়া মারুত,মনোজেরে রোষান্বিত,এমন দুরন্ত॥
কোকিল মন্ত্রিণী তায়,যার খাণ,তার গাণ তাহারি নিতান্ত।
ফুলগণ দেয় তাল,অলিকুল কোলাহল,সকলি অশান্ত ॥
১ ॥
১১১
মালকোষ॥ তাল
হরি ॥
ঈষৎ হাসিয়ে হরিল আমার প্রান বিধুবদনী।
কিবা শোভাতার,কুন্তলের ভার,নিবি.. নীরদ জিনি ॥
ভুরু শরাসন,তাহে কাম গুন,পঞ্চবাআণ বিনোদিনী
আকর্ণ পুরুয়ে,ভুজ বিনে প্রিয়ে সন্ধান করিছ ধনী ॥
১ ॥
প্রভাতে অরুন ষেন দীপ্তিমান.প্রবণে
কুন্ডল গুণি।
হেরে যে কুন্ডল,হৃদয় কমল,প্রফুল্ল হয় তখনি ॥
২ ॥
১১২
মালকোষ॥ তাল
হরি ॥
নয়ন মনঃ ডুবিল প্রাণ,নয়নে তোমার।
ত্রিবেণী নয়ন বেগ অতি ঘন,বহে তিন ধার ॥
পলকে পরান বয়,যমুনা প্রবল হয়।
প্রলয়ে যেমন,তরঙ্গ তেমন,অপার পাখার ॥ ১ ॥
১১৩
মালকোষ॥ তাল
হরি ॥
এ কি তোমার মনের সময়?সমুখে বসন্ত!
দেখ,কুসুম কাননে,বিহরয়ে অলিগণে,হরিষ নিতান্ত ॥
মন্দ মন্দ সমীরণ,বহে অতু ঘনে ঘন,মদন দুরন্ত।
মনেতে বুঝিয়া দেখ,বাহ্যেতে উদয় দেখ,যামিনীর কান্ত ॥ ১ ॥
অতি সুমধুর রব,করয়ে করিল(কোকিল)সব,হও হরষিতল
ইথে যদি থাকে মান,ঋতুরাজের অপমান,জানহ নিতান্ত ॥
২ ॥
১১৪
মালকোষ॥ তাল
হরি ॥
কনক লত বিনে,লতা কি লতায় দাঁড়ায় হোথাঁ?
দামিনি হইত,যদি না হোতো স্থিরতা ॥
ইথে বোধ হয়,এই হবে স্বর্ণলতা ॥ ১ ॥
১১৫
মালকোষ॥ তাল
হরি ॥
মধুর বসন্ত ঋতু!হে কান্ত!যাবে কেমনে?
হেরি ঋতুরাজ,প্রবল মনজ,বুঝ হে মনে ॥
মলয়া মারুত,বহিছে সদত,কোকিল কাননে।
তার কুহুম্বরে,বিরহিনী শরেজলিত প্রাণে ॥ ১ ॥
১১৬
মালকোষ॥
একতাল ॥
আইল হে বিহরিনীর প্রাণ ।
আনন্দ সাগরে মোর ভাসিছে নয়ন ॥
সুখমুখ নিরখিয়ে,দুখ গেল দুখী হয়ে।
সন্তষভবনে আশা করিল পয়ান ॥ ১ ॥
১১৭
মালকোষ॥
একতাল ॥
বহু দিনান্তে বসন্ত উদয়,নিদয় নাথ।
এমন সুদিন! আমি যে সুদিন! সুখী হলেম ষথোচিত ॥
আগমনে ঋতুপতি,
রতিপতি নিশিপতি,বিনে পতি জনেরে জ্বলাইত।
হেরি মম পতি,হলো সুখোৎপতি,(পত্তি),
বহে মলয় মারুত ॥ ১ ॥
১১৮
মালকোষ ভৈরব॥
জলদ তেতালা ॥
এক ফুলে ভুলে অলি,নহে নাননে।
মনঃ রসরাজ সতত বিরাজ,সরোজননে ॥
রতন অধিক যারে,যতন করে তারে,
ত্যাজে অন্তরে থাকিতে কি পারে?
মণি বিনে ফণি (ফণী),কভু নাহি শুনি,সুখী কাঞ্চনে ॥
১ ॥
মীন বসে জীবনে জীবন,তার জীবন জীবন,
বিহনে তার বফচেঁ কি জীবন?
যার সেবা বিধি,দেয় সে নুথি তার গগণে ॥ ২ ॥
১১৯
মালকোষ-বসন্ত ॥
জলদ তেতালা ॥
ঋতুরাজ ! নাহি রাজ,একি রাজনীত?
পরিবার যত,হয় এক মত,কামিনীর চিত,দহিতে উচিত?
বল দেখিব কোন রাজা,
বধ করে নারী প্রজা?
তবে রাজা জানি,যদি পতি আনি,বাচাঁও কামিনী,
মদনের হাত ॥ ১ ॥
আপনার বিরহেতে,
আপনি জ্বলিছে তাতে।
শুনরে কোকিল,বধ কেন বল,কর কোলাহল,
যধা প্রাণকান্ত ॥ ২ ॥
১২০
মালকোষ-বসন্ত ॥
জলদ তেতালা ॥
কি চিত্র বিচিত্র কুসুম ঋতুর
চরিত্রগুণ।
রতি পতি সেনাপতি,অনঙ্গ যাহার ক্ষ্যতি,জ্বালাতনে করে
জ্বালাতন ॥
দেখ,এমন পবন,জগত জনজীবন,
ঋতুগুণে বিপরীত,হয়েউতাশন বত,
দহে সদা বিরহিনী জনে ॥ ১ ॥
কোকিল মধুর স্বরে,অন্তর উল্লাস করে।
পথিকজনরমণী,ওই স্বর কর্ণে শুনি,বলে-
বিষ শর নাশে পরাণ ॥ ২ ॥
১২১
মালকোষ-বাহার ॥
জলদ তেতালা ॥
এই ত মধু ঋতু বসন্ত।
ঋতু রাজনের রীত,কহিবারে অদভুত,খেদ যথোচিত ॥
অলি করে মধুপান,মত্ত কোকিলগণ,তরুগণ ঘুর্ণিত।
পথিক পতিত তলে,যুবতি মুচর্ছা সকলে,বিরহী রোদিত ॥ ১
॥
১২২
মালকোষ-বাহার ॥
তাল হরি ॥
অতিসুখময় দেখ উপনীত
ঋতুরাজন।
কুসুম কানন,আর বন উপবন,সকলের হলো সুদিন ॥
ভ্রমর গুঞ্জন করে,কোকিল মধুর গান
।
রতিপতি উনমর্ত্ত,মর্ত্ত
করে মনঃ,বহিছে মলয় পবন ॥ ১ ॥
১২৩
শোহিনী মালকোষ ॥
জলদ তেতালা ॥
কমলিনীর প্রাণ তুমি বুঝি মধুকর।
নহিলে হে কেনে,বিনে দরশনে,জ্বালাও অন্তর ॥
মানেতে মনেতে করি,তব মুখ নাহি হেরি।
হেরিলে হে পুণঃ,উপজে তখন আনন্দ অপার
॥ ১ ॥
১২৪
শোহিনী মালকোষ ॥
জলদ তেতালা ॥
ভ্রমরার প্রাণ তুমি শুন কমলিনী।
যথা তথা ফিরি,তব ধ্যান করি,অন্য নাহি জানি ॥
পিরীতে আমি যেমন,তোমারে ভাবি লো প্রাণ,
তার নিদর্শন,কর দরশন,ভুজঙ্গের মণি
॥ ১ ॥
১২৫
টোড়ী॥
জলদ তেতালা ॥
ধীরে ধীরে যায় দেখ,চায় ফিরে ফিরে।
কেমনে আমারে বল যাইতে ঘরে ॥
যে ছিল অন্তরে
মোর বাহ্যে দেখি তারে।
নয়ন অন্তর হলে পুনঃ সে অন্তরে ॥১॥
১২৬
টোড়ী॥
জলদ তেতালা ॥
যা তুমি চাহ তো তোমার।
মন চঞ্চল হলে তুমি বা কাহার ॥
চিরসুখে থাকো যাতে,চলা ভাল সেই পথে।
ইথে চঞ্চল হলে সুখ কি কাহার ॥ ১ ॥
১২৭
টোড়ী॥
জলদ তেতালা ॥
এমন চুরি,চন্দ্রাননি!শিখিলে কোথায়
হানিয়ে নয়ণ বাণ,হরিয়ে লইয়ে প্রাণ,কথায় কথায়