বোৎসোয়ানা
Botswana
আফ্রিকা
মহাদেশের দক্ষিণাংশে অবস্থিত একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের
ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতি সোয়ানা
(Tswana
ৎসুয়ানা) জাতির নাম থেকে দেশটির নাম এসেছে।
স্বাধীনতার পর থেকে বোৎসোয়ানাতে একটি স্থিতিশীল গণতন্ত্র অবস্থায় রয়েছে। একজন
নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি দেশ শাসন করেন।
রাজধানী: গাবোরোন
ভৌগোলিক অবস্থান: ২৪°৪০' দক্ষিণ অক্ষাংশ ২৫°৫৫' পূর্ব
দ্রাঘিমাংশ। এর উত্তরে জাম্বিয়া ও
নামিবিয়া, পূর্বে
জিম্বাবুয়ে,
দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বে
দক্ষিণ আফ্রিকা
এবং পশ্চিমে
নামিবিয়া। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ১,১০০ মিটার।
আয়তন: ২২,৪০,০০০ বর্গকিলোমিটার
ভাষা: ইংরেজি সরকারি ভাষা। তবে বেশির ভাগ লোক বান্টু ভাষা গোষ্ঠীর আঞ্চলিক
ভাষায় কথা বলে।
ভূমিরূপ: বোৎসোয়ানার মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিমভাগের অধিকাংশ এলাকা জুড়ে
কালাহারি মরুভূমি অবস্থিত। এর একটি বিরাট অংশ জুড়ে অর্ধ-ঊষর মালভূমি।
এর
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওকাভাঙ্গো জেলার
সোডিলো
একটি
পার্বত্য প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল।
আবহাওয়া: এর জলবায়ু উপক্রান্তীয় এবং এটি প্রায়
বৃক্ষহীন সাভানা তৃণভূমিতে আবৃত। দেশের অধিকাংশ
এলাকা শুষ্ক এবং কৃষিকাজের অনুপযোগী। এর চারপাশ ঘিরে রয়েছে
কালাহারি মরুভুমি। কালাহারি আফ্রিকার
দক্ষিণাঞ্চলের মালভূমিতে অবস্থিত একটি অববাহিকার মত সমতল ভূমি। বৎসোয়ানার প্রায়
পুরো অঞ্চল ঘিরেই এর অবস্থান। এছাড়াও সাভানা ঘিরে আছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় লবণাক্ত
সমভূমি। এখানে বিশেষ ধরনের শৈবাল দেখা যায়।
পশুপাখি: দেশটিতে প্রাণীদের জন্য অনেকগুলি অভয়ারণ্য
বিদ্যমান। এখানে বিভিন্ন ধরনের পশু, বিশেষ করে জেব্রা এবং ফ্ল্যামিংগো বেশি
দেখা যায়।
খনিজ সম্পদ: বোৎসোয়ানা হীরার খনির জন্য বিখ্যাত। এছাড়া রয়েছে নানা ধরনের
খনিজ পদার্থের বেশকিছু খনি। হীরা উত্তোলনে রাশিয়া শীর্ষস্থানে। এরপরেই রয়েছে
বোৎসোয়ানা। জোয়ানেং ও ওরাপা খনি থেকে বৎসোয়ানার ৯২ শতাংশ হীরা আসে।
ইতিহাস
বোৎসোয়ানাকে বলা হয় আফ্রিকার প্রথম আধুনিক মানব গোষ্ঠীর সূতিকাগার। মরোক্কো,
ইথিওপিয়া অঞ্চলে আধুনিক মানবের উৎপত্তি ও বিকাশের অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এরা
১ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে এই সব অঞ্চলের কাছাকাছি এলাকায় নতুন বসতি স্থাপন
করা শুরু করে। এই সূত্রে একদল মানুষ সোদিলো পার্বত্য অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল। প্রায় ১০ বর্গকিলোমিটারের ছোট আকারের এই অঞ্চলে পাওয়া গেছে প্রায়
প্রস্তর যুগের ৪৫০০ এর বেশি প্রস্তরচিত্র। এই কারণে
অনেকে প্যারিসের ল্যুভর যাদুঘরের সাথে তুলনা করে বলে থাকেন মরুভূমির ল্যুভর
('Louvre of the Desert'')
।