ভাওয়াল পরগণা
বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও ঢাকা জেলার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত মুসলমান শাসনামলে গঠিত প্রশাসনিক এলাকা।

ভাওয়াল নামটি কিভাবে এসেছে, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট দালিলিক প্রমাণ নেই। তবে এই নামটিরর বিষয়ে নানা ধরনের মতামত প্রচলিত আছে। যেমন-

প্রাচীনকালে বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীর হতে ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকা পার হয়ে সুসং পাহাড় পর্যন্ত বিস্তীর্ণ ভূভাগের মধ্যে জয়ানশাহি নামে একটি গহীন অরণ্য অঞ্চল ছিল। এর উত্তরাংশে ছিল মধুপুর-অরণ্যাঞ্চল এবং দক্ষিণাংশ ছিল ভাওয়াল-অরণ্যাঞ্চল। কোনো কোনো মতে এর উত্তর দক্ষিণের দৈর্ঘ্য ছিল পঁয়তাল্লিশ মাইল এবং পূর্ব-পশ্চিমে ছিল ছয় থেকে ষোল মাইল। খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দি তে  পাঠান ও মুঘল শাসনামলে এখানে এক প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরি করা হয় এবং এর নামকরণ করা হয় ভাওয়াল পরগণা। এই পরগণার উত্তরে আটিয়া ও আলেপসিং পরগণা, দক্ষিণে বুড়িগঙ্গা, পূর্বে লক্ষ্যানদী ও মহেশ্বরদি পরগণা এবং পশ্চিমে কাশিমপুর ও দুর্গাপুর পরগণা।

খ্রিষ্টীয় নবম শতাব্দীর দিকে যশোপাল, শিশুপাল, প্রতাপ ও মহেন্দ্র নামক শাসকদের দ্বারা ভাওয়ালের বিভিন্ন স্থানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সামন্ত রাজ্য গড়ে উঠেছিল। প্রচলিত কিংবদন্তি অনুযায়ী, এই ক্ষুদ্র রাজ্যগুলো পরিচিত ছিল চেদী রাজ্য নামে। বর্তমানের শ্রীপুর, কালিয়াকৈর (আংশিক) কাপাসিয়া, কালীগঞ্জ, টঙ্গীসহ ময়মনসিংহ জেলার গফরঁগাও ও ত্রিশাল উপজেলার অংশ বিশেষ, ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার অংশ বিশেষ, নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার উওরাংশ, টঙ্গীর পশ্চিমে হরিরামপুর ইউনিয়ন নিয়ে এই সমস্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চেদী রাজ্যগুলো বিদ্যমান ছিল।


সূত্র :