ইসলামী ঐক্যজোট
সূত্র: বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন
http://www.ecs.gov.bd/Bangla

নিবন্ধন নম্বর

০৩২

নিবন্ধন তারিখ

১৭/১১/২০০৮

প্রতীক

মিনার

প্রতীক নমুনা

চেয়ারম্যান

মাওলানা মোঃ আবদুল লতিফ নেজামী

মহাসচিব

মুফতী ফয়জুল্লাহ

কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা

৫৭, কাজী রিয়াজউদ্দীন রোড, লালবাগ, ঢাকা-১২১১

ফোন

৮৬৩১৪৯০

ফ্যাক্স

৮৬৩১৪৯০

মোবাইল

০১৭১৫৩৪৭৮৩৭ (চেয়ারম্যান), ০১৫৫২৩৭৬৬০৫ (মহাসচিব)

ইমেইল

islamioikyajote@gmail.com

ইসলাম ঐক্যজোট
বাংলাদেশের একটি ইসলামিক রাজনৈতিক দল। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর এই দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে, ছয়টি ইসলামি দল নিয়ে এই ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল। এই দলগুলো ছিল-বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন , নেজামে ইসলামী পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও ফরায়েজী আন্দোলন। এই জোট গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক, চরমোনাইর পীর মাওলানা ফজলুল করিম, মাওলানা আবদুল করিম শায়খে কৌড়িয়া, মাওলানা আশরাফ আলী ধর্মান্ডুলি, মাওলানা মুহিউদ্দিন খান ও মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ।

১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই দলটি ১টি আসন লাভ করেছিল।

১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন-এ
এই দলটি ১টি আসন লাভ করেছিল। এই আসনটি লাভ করেছিলেন- খেলাফত মজলিসের মাওলানা ওবায়দুল হক। এই পদ থেকে পদত্যাগ করার প্রস্তাব দেয় জোটের শরিক দল। কিন্তু খেলাফত মজলিস এই প্রস্তাব মেনে না নিয়ে জোট থেকে বেরিয়ে যায়। কিছুদিন পরে আবারও যোগ দেয় জোটে। উল্লেখ্য, খেলাফত মজলিস বের হয়ে যাওয়ার পর ওই সময় ঐক্যজোটের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন চরমোনাইয়ের প্রয়াত পীর মাওলানা সৈয়দ ফজলুল করিম। তখন মহাসচিব ছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী।

১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ঐক্যজোটে ইসলামী মোর্চা নিয়ে যোগ দেন মুফতি ফজলুল হক আমিনী এবং ঐক্যজোটের মহাসচিবের দায়িত্ব নেন। এই সময় জোট প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন শায়খুল হাদিস আজিজুল হক। সে সময়ে ফতোয়া বিরোধী আন্দোলনসহ কয়েকটি বড় বড় সমাবেশ ও আন্দোলন করে রাজপথে সরব ছিলো এ জোট।

১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিএনপি চারদলীয় জোট গঠন করেছিল। শায়খুল হাদিস আজিজুল হক ও মুফতি আমিনীর নেতৃত্বে ইসলামী ঐক্যজোট আট দফা দাবি নিয়ে চারদলীয় জোটে নাম লেখায়। এ ঘটনায় জোট থেকে বেরিয়ে জোটের অন্যতম অন্যতম দল ইসলামী শাসনতন্ত্র।

২০০১ খ্রিষ্টাব্দের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন-এ এই দলটি ২টি আসন লাভ করেছিল। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে বিএনপি। চারদলীয় জোটের শরিক হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে ঐক্যজোটও ২টি আসন লাভ করে। সে বছর উপ-নির্বাচনে আরও দুটি আসন লাভ করে ঐক্যজোট। এই নির্বাচনে জোট মহাসচিব মুফতি আমিনী ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া থেকে এমপি নির্বাচিত হন।

এই নির্বাচনের পর জোটের আধিপত্য নিয়ে বিরোধ ঘটে জোটের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস ও মহাসচিব মুফতি আমিনী'র মধ্যে। প্রথমেই শায়খুল হাদিসকে বাদ দিয়ে মুফতি আমিনী নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করে নতুন ঐক্যজোট গঠন করেন। এই সময় মহাসচিব হিসেবে তিনি নেন নেজামী ইসলামী পার্টির নির্বাহী সভাপতি মুফতি ইজহারকে। অপরদিকে শায়খুল হাদিস আমিনীকে জোট থেকে বহিষ্কার করে নিজে চেয়ারম্যান পদে থেকে যান এবং এ আর এম আব্দুল মতিকে মহাসচিব বানান। এরপর শায়খুল হাদিসের জোটের কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে মুফতি আমিনী, ঐক্যজোট ও সরকারের একটি দল পাকিস্তান সফরে যায়। এই সফরে জোটের মহাসচিব মুফতি ইজহার বাদ পড়েন। তিনি জোট চেয়ারম্যানকে অবহিত না করেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠানো শুরু করেন। এ নিয়েই মুফতি আমিনীর সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরে এসে জোটের বৈঠক ডাকেন মুফতি আমিনী। কিন্তু সে বৈঠকে উপস্থিত হননি মুফতি ইজহার। তবে তার দল নেজামে ইসলামী পার্টির অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনার পরপরই নতুন ঐক্যজোটের ঘোষণা দেন মুফতি ইজহার। নিজে চেয়ারম্যান থেকে মিসবাহুর রহমান চৌধুরী নামে একজনকে মহাসচিব বানিয়ে তিনি এ জোট গঠন করেন। সেইসঙ্গে নেজামী ইসলামী পার্টি থেকে সরে গিয়ে নতুন নেজামে ইসলামী পার্টি গঠন করেন।

মুফতি ইজহার তার নতুনে ইসলামী ঐক্যজোটকে শক্তিশালী করতে ব্যর্থ হন। তাঁর সাথে প্রথম বিরোধ ঘটে দলের মহাসচিব মিসবাহুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে। ফলে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মিসবাহুর রহমান চৌধুরী নতুন জোটের ঘোষণা দেন। সে জোটে মাওলানা মুহিউদ্দিন খানের জামাতা মাওলানা নুরুল ইসলাম খানকে মহাসচিব বানানো হয়। কিছুদিন পরে মিসবাহুর রহমান চৌধুরী'র  মনোনীত মহাসচিব নুরুল ইসলাম খান ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টি নামে নতুন একটি দল ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে মুফতি ইজহার হাফেজ জাকারিয়াকে নতুন মহাসচিব মনোনয়ন দেন। তবে এই দুই জোটই ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।

২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর মুফতি আমিনী'র ঐক্যজোট নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয়। এই বছরই জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নিজ নামে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয়ে, ঐক্যজোট থেকে বেরিয়ে যায়।

২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে মুফতি আমিনী মৃত্যবরণ করেন। এরপর তাঁর ঐক্যজোটে পরিবর্তন ঘটে। এই জোটের মহাসচিব আব্দুল লতিফ নেজামীকে চেয়ার‌ম্যান করে মুফতি ফয়জুল্লাহকে মহাসচিব হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়। তাদের নেতৃত্বেই ২০১৫ সাল পর্যন্ত চলে জোটের কার্যক্রম।
 
২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই জানুয়ারি এই জোট দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।