হুরসাগর
বাংলাদেশের পাবনা -সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যবর্তী একটি নদী।

সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বাওইতারা নামক স্থানে উৎপত্তি হয়েছে। এই নদীর উৎস হিসাবে  পাবনা -সিরাজগঞ্জ জেলার একাধিক নদীর প্রবাহ রয়েছে। উত্তরের আত্রাই -বড়াল নদীর স্রোতধারা দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে বাঙালী, করতোয়া  নদীর সাথে মিলিত হয়ে আত্রাই নামে প্রবাহিত হয়েছে। এই সকল নদীর জল সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বাওইতারা নামক স্থানে হুরসাগর নামে চিহ্নিত হয়েছে। এর সাথে পরে এসে যুক্ত হয়েছে পাবনা জেলা শহর থেকে উৎপন্ন ইছামতি

এই নদীটি সিরাজগঞ্জ সদরকে স্পর্শ করে বেলকুচি, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর হয়ে বেড়া উপজেলার যমুনায় মিশেছে। এই নদীর তীরে উল্লাপাড়া পৌরসভা, শাহাজাদুর পৌরসভা ও বাঘাবাড়ি নদী বন্দর অবস্থিত। বাঘাবাড়িতে একটি সড়ক সেতু ও বাওইতারা স্লুইচ রয়েছে এই নদীর উপর। শাহজাদপুর হুরাসাগর নদী তীরে অবস্থিত একটি পুরাতন বন্দর। এখানে মুখদুম-শাহ-দৌলা নামক এক মুসলমান আউলিয়ার সমাধি আছে। কথিত আছে মুখদুম শাহ নামক জনৈক আরববাসী, ধর্মপ্রচারের জন্য শাহজাদপুরের তিন কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে পোতাজিয়ায় নামক স্থানে আসে। এই সময় তাঁর জাহাজ ডাঙ্গায় আটকে যায়। পরে মুখদুম-শাহ-দৌলা সেই চরে আবাস স্থাপন করেন। মুখদুম-শাহকে স্থানীয় লোকেরা আরব দেশের রাজপুত্র বা শাহজাদা মনে করতেন। পরে এই স্থানের নাম শাহজাদপুর হয়। শাহজাদপুর হতে ১০-১১ কিমি দক্ষিণে ইছামতি-বড়াল ও হুরাসাগর নদীর সঙ্গমস্থলের পাশে বেড়া উপজেলা শহর একসময় প্রসিদ্ধ বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল। এটি পাটের বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গঞ্জ ছিল। এই নদীটি ৬৬ কিমি প্রবাহিত হয়ে যমুনা নদীতে পতিত হয়েছে। এ নদীর গড় গভীরতা ৭ মিটার। আর নদী অববাহিকার আয়তন ৩০০ বর্গ কিমি।

নদীটি মৌসুমি প্রকৃতির। ফেব্রুয়ারি থেকে মে অব্দি পানিপ্রবাহ থাকে না, জুলাই-আগস্ট বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫০০ ঘন মিটার/সেকেন্ড।


    সূত্র :
http://www.banglapedia.org/
http://www.nodimatrik.com/index.php/2012-02-08-10-58-42/541-hurasagara-river