মিশরের পিরামিড

পিরামিডের জ্যামিতিক নকশা অনুসারে যে কোন স্থাপত্যকেই পিরামিড বলা হয়। পিরামিডের নকশার ভূমি হয় একটি বহুভুজাকৃতির ক্ষেত্র। এই ক্ষেত্রের প্রতিটি বাহু থেকে ত্রিভুজাকার ক্ষেত্র উপরের দিকে একটি বিন্দুতে মিলিত হয়। এর ফলে যে ত্রিমাত্রিক অবয়ব তৈরি হয়, তাকেই বলা হয় পিরামিড নকশা। 

পিরামিডের এই নকশার ধারণা গণিত শাস্ত্রে প্রবেশ করেছে প্রাচীন মিশর পিরামিডর নকশা অনুসরণে। যদিও পিরামিড বলতে প্রথমেই মনে মিশর পিরামিডকেকিন্তু মিশর ছাড়া পিরামিড পাওয়া গেছে সুদান, ইথিওপিয়া, পশ্চিম এশিয়া, গ্রীস, সাইপ্রাস, ইতালি, ভারত , থাইল্যান্ড, মেক্সিকো , দক্ষিণ আমেরিকা এবং প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু দ্বীপে। তবে এদের ভিতরে মিশর এবং মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার পিরামিড নিয়ে সর্বাধিক আলোচনা হয়ে থাকে।

প্রাচীন মিশরের ফারাও রাজাদের সমাধির উপর নির্মিত চতুর্ভুজাকার পিরামিডের স্থাপত্যকর্মই সাধারণভাবে মিশরের পিরামিড নামে পরিচিতি। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মিশরে ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ১৩৫টি পিরামিড পাওয়া গেছে। এই পিরামিডগুলোর অধিকাংশই মিশরের রাজধানী কায়রোর কাছে। একটি রাজকীয় পিরামিড কায়রো থেকে দূরে। এর অবস্থান কায়রোর দক্ষিণে। এর ভিতরের সবচেয়ে বড় পিরামিডটির গিজা'র পিরামিড বা খুফু'র পিরামিড।

মিশরবাসী মনে করতো, মানুষ মারা যাবার পর তাদের দেহ নষ্ট হলেও আত্মা বেঁচে থাকে। মৃত্যুর পর তাঁদের আত্মা যাতে সুখে থাকতে পারে, সে জন্য সুরক্ষিত বিশাল আয়তনের সমাধিক্ষেত্র তৈরি করতো। মৃত্যুর পর দেহ অক্ষুণ্ণ থাকলে, আত্মা সে দেহে ফিরে আসতে সক্ষম হবে, এমনটাই তারা বিশ্বাস করতো। তাই তারা মৃতদেহকে মমি বানিয়ে পিরামিডের ভিতরে রা
খতো। সাধারণ মানুষের জন্য এই পদ্ধতি ব্যয়বহুল হলেও সম্রাটদের জন্য তা ছিল না। তাই তারা তাদের সমাধিতে নিজেদের দেহ তো বটেই, তাঁদের দাসদাসীদের পর্যন্ত হত্যা করে, মমি বানিয়ে পিরামিডের ভিতর রেখে দিতো। সম্রাটদের মৃতদেহের সাথে, তাদের ব্যবহার্য মূল্যবান সামগ্রীও পিরামিডের ভিতরের সুনির্দিষ্ট কক্ষে রাখা হতো। এই সব মূল্যবান সামগ্রীর বেশিরভাগই অবশ্য পরবর্তী সময়ে চোরের দল সুরঙ্গ কেটে নিয়ে গিয়েছে।


সূত্র :্র :

http://www.usatoday.com/tech/science/2007-05-16-pyramid-theory_N.htm
http://www.world-mysteries.com/mpl_2.htm