ঈশ্বর আদি মানব-মানবী তৈরি করেছিলেন পৃথকভাবে। বাইবেলের আদি পুস্তকের ১:২৭ থেকে জানা যায় প্রথম নরনারী সৃষ্টির কথা। এখানে বলা হয়েছে- 'ঈশ্বর আপনার প্রতিমূর্তিতে মনুষ্য নির্মাণ করলেন। তাঁকে সৃষ্টি করলেন ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে, নারী ও পুরুষ হিসেবে'। এই নরনারী তৈরি হয়েছিল মাটি থেকে। এই নরনারীকে উদ্যানে স্থান দিয়েছিলেন। তবে প্রথম নারী আদমকে ছেড়ে গিয়েছিলেন, কিম্বা ঈশ্বর তাঁকে বিতারিত করেছিলেন। এ বিষয়ে আদি পুস্তকের রাব্বাহতে এ বিষয়ে একটি উপাখ্যান আছে। খ্রিষ্টীয় ৯ম-১০ম শতাব্দীর দিকে ‘এলফাবেট অফ বেন সিরা’-তে এ বিষয়ে বিস্তারিত পাওয়া যায়।
এই কাহিনি মতে- ঈশ্বর
প্রথম নরনারী সৃষ্টি করেছিলেন মাটি থেকে। ফলে উভয়ই পরিপূর্ণ স্বাধীন ছিলেন। এই
প্রথম নরের নাম আদম এবং প্রথম নারীর নাম
লিলিথ।
লিলিথ ছিলেন
বুদ্ধিদীপ্ত, আত্মসম্মানবোধে পরিপূর্ণ এক নারী। তাই আদমের আধিপত্য মেনে নিতে পারেন
নি লিলিথ। সকল ক্ষেত্রে তিনি নিজেকে আদমের সমকক্ষ হিসেবে বিবেচনা করতেন। উভয়ের ভিতরে
সকল ধরনের সমকক্ষতার উল্লেখ এই গ্রন্থে নেই। গ্রন্থটিতে উদাহরণ হিসেবে পাওয়া
সঙ্গমের অধিকারের বিষয়ে। সঙ্গমের সময় আদম লিলিথের উপরে উঠে অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে,
এটা লিলিথ মেনে নিলেন না। তিনি বললনে, আদমের দেহের উপরে উঠে তিনি ভোগ করবেন। এই
দ্বন্দ্বের সুরাহা না হওয়ায়
লিলিথ স্বরগ
ত্যাগ করে আদমকে ছেড়ে মর্তে নেমে আসে। লিলিথ আদমকে ছেড়ে যাওয়ার পর, ঈশ্বর নিঃসঙ্গ
আদমের পাঁজর থেকে একটি নারী তৈরি করলেন, এই নারীর নাম ইভ'।
ঈশ্বর এদেন উদ্যানের কেন্দ্রে একটি জ্ঞানবৃক্ষ তৈরি করেছিলেন। ঈশ্বর এই উদ্যানের এই
জ্ঞানবৃক্ষের ফল ব্যতীত সকল বৃক্ষের ফল ভক্ষণের অনুমতি দিয়েছিলেন। পরে শয়তানরূপী
একটি সাপ ইভকে ওই গাছের ফল ভক্ষণে প্ররোচিত করে। পরে ইভ নিজে ওই ফল আহার করে এবং
আদমকেও খাওয়ায়। বিষয়টি ঈশ্বর জানার পর, উভয়কে এদেন উদ্যান থেকে বহিষ্কার করে দেয়।
সূত্র: