পাললিক
শিলা
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{|
শিলা
|
স্পর্শনীয়
বস্তু
|
বস্তু
|
দৈহিক
সত্তা
|
সত্তা
|}
ইংরেজি: Sedimentary Rock।
ভূ-পৃষ্ঠে বিভিন্ন ধরনের
যান্ত্রিক ও রাসায়নিক বিচূর্ণীভবন প্রক্রিয়া কাজ করে। এসব প্রক্রিয়ায় কার্যকরণের
ফলে ভূ-পৃষ্ঠে বহিরাবরণ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এ ক্ষয়িত পদার্থসমূহ-ই পলি নামে পরিচিত। আর
এই
পলি সঞ্চিত হয়ে যে
শিলা গঠিত হয়,
তাকে পাললিক শিলা বলা হয়। এই শিলা ভূ-ত্বকের মোট আয়তনের শতকরা ৫ ভাগ দখল করে আছে।
তবে মহাদেশীয় ভূত্বকের উন্মুক্ত অংশের প্রায় ৭৫ ভাগই পাললিক শিলায় গঠিত।
পাললিক শিলা তিনটি প্রক্রিয়া গঠিত হয়। এই প্রক্রিয়া তিনটি হলো−
যান্ত্রিক প্রক্রিয়া: এই প্রক্রিয়া প্রাকৃতিক কারণে পাথরে বিচূর্ণীভবন পাথরের চূর্ণ সৃষ্ট করে। এই চূর্ণ জমে শিলা তৈরি করে। এদেরকে বলা হয় পাথুরে শিলা (clastic sedimentary rocks)। এক্ষেত্রে পাথরের চূর্ণ অধঃক্ষেপিত হয়ে জলাশয়ের তলদেশে জমা হয়। পাথুরে চূর্ণ বালি হিসেবে নদী বা সাগরের তীরে পাওয়া যায়। যেমন কর্দম বেলে পাথর, নুড়ি পাথর ইত্যাদি।
রাসায়নিক প্রক্রিয়া: ভূস্তরের চাপ, তাপের কারণে ভূ-উপকরণ প্রাকৃতিকভাবে রাসায়নিক প্রক্রিয়া নতুন পদার্থ সৃষ্টি করে। এই জাতীয় পাললিক শিলাকে রাসায়নিক পাললিক শিলা ( Chemical sedimentary rocks ) বলা হয়। এই জাতীয় পাললিকক শিলার ভিতরে রয়েছে জিপসাম, চুনাপাথর।
জৈবিক প্রক্রিয়া: উদ্ভিদ ও পানিতে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রাণীর দেহাবশেষ জৈবিক পলি সঞ্চিত হয়ে এবং জমাটবদ্ধ হয়ে গঠন করে জৈবিক পাললিক শিলার। যেমন কয়লা, চুনাপাথর ইত্যাদি।
সামগ্রিকভাবে দেখা যায় নুড়ি পাথর, বেলে পাথর, কর্দম প্রভৃতি পাললিক শিলার পাশাপাশি সমুদ্র নদী বা হ্রদের তলদেশে সঞ্চিত পলি দীর্ঘকাল ধরে জমাট বেঁধেও পাললিক শিলা গঠন করে। জলাশয়ের তলদেশে পলি সাধারণত স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে, তলদেশের ভূমিতলকে উন্নীত করে। এর ফলে নদী, সাগর বা কোনো জলাশয়ের ভিতরে বালু, কাদামটি জমে চরা জেগে উঠে। স্তরে স্তরে সঞ্চিত হওয়ার কারণে এই শিলা বিশ্লেষণ করে ভূমি তৈরির কাল নিরূপণ করা সম্ভব হয়। অনেক শিলার নিজে চাপা পড়া জীবদেহ জীবাশ্মে পরিণত হয়।