অপেরা
ল্যাটিন
opera>ইতালি
Opera>ইংরেজি
Opera>
বাংলা অপেরা।
পাশ্চাত্য সঙ্গীতের একটি বিশেষ অধ্যায়।
সঙ্গীত ও নাট্যকলার সমন্বয়ে অপেরা রচিত হয়।
গীতনাট্যে প্রধান ভূমিকা থাকে কণ্ঠশিল্পী ও যন্ত্রশিল্পীদের। অপেরাতে উভয় দল মিলে
সুর ও বাণীর মধ্য দিয়ে নাট্যরূপকে প্রস্ফুটিত করে তোলে। ফলে কণ্ঠসঙ্গীতের
শিল্পীদেরকে নাট্যকলায় পারদর্শী হতে হয়। ইউরোপে অপেরাকে চিরায়ত সঙ্গীতের পর্যায়
বিবেচনা করা হয়।
গ্রিসে এর সূচনা হলেও আধুনিক অপেরার উদ্ভব হয়েছিল ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে। ফ্লোরেন্সের কাউন্ট বার্ডি নামক একজন শিল্পরসিক, গ্রিকনাটক পুনরুজ্জীবিত করার উদ্দেশ্যে, শহরের গণ্যমান্য সঙ্গীতশিল্পী, গীতিকার, নাট্যকার ও কবিদেরকে তাঁর গৃহে আমন্ত্রণ করেন। এই সভায় আগত- সঙ্গীতসংঘ 'ক্যামেরেটা'-র সদস্যরা এই সভার আলোচনা থেকে উৎসাহ লাভ করে- আধুনিক অপেরার সৃষ্টি করেন।
১৫৯৭ এই সংঘের
অন্যতম সদস্য- Jacopo Peri
‘ডাফনে
(Dafne
)’ নামক অপেরা রচনা করেন।
কিন্তু এটি সফল অপেরা ছিল না।
প্রথম সফল অপেরাটি হলো- ‘ইউরিডাইস’।
‘ইউরিডাইস’ কাব্যে পেরী সুরারোপ করে অপেরায় রূপ দিয়েছিলেন।
১৬০০ খ্রিষ্টাব্দে এটি প্রথম মঞ্চস্থ হয়েছিল।
১৬০৭ খ্রিষ্টাব্দে ক্লডিও মণ্টিভারডে তাঁর ‘অরফিউস’ মঞ্চস্থ করেন।
১৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম ইটালির ভেনিস শহরে অপেরা হাউজ স্থাপিত হয়।
সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিকে- স্কারলাট্টি নামক জনৈক অপেরা প্রেমিক- ইটালির নেপলস্-এ
একটি অপেরার স্কুল প্রতিষ্ঠিত করেন।
স্কুলটির নাম ছিল-‘স্কুল অব অপেরা’।
এই স্কুলের মাধ্যমে- ইনি অপেরা আন্দোলেন সক্রিয় করে তুলেছিলেন।
এই ভাবে ইটালিতে অপেরা একটি বিশিষ্ট অবস্থায় পৌঁছেছিল এবং পরবর্তী সময় তা ধীরে ধীরে
সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।
তৎকালীন অপেরাকে দুইভাগে ভাগ করা হতো।
ভাগগুলি হলো-রেসিটেটিভ ও আরিয়া।
রসিটেটিভ : অপেরার কাহিনীর বর্ণনাত্মক অংশকে রসিটেটিভ বলা হয়।
রিয়া : অপেরার গীতিময় অংশকে রিয়া বলা হয়।
উল্লেখ্য অপেরার মূল পাঠকে বলা হয়-লিব্রেটো। এতে অপেরার গান, সংলাপ ও নির্দেশনা সহ মুদ্রিত বা লিখিত কারে থাকে। এ ছাড়া অপেরার প্রায়েগিক দিক বিবেচনা করে-এর বিভিন্ন অবস্থাকে বিভিন্ন নামে চিহ্নিত করা হয়। যেমন−
গ্রাণ্ড অপেরা : এই জাতীয় অপেরার সম্পূর্ণ অংশই গীত হয়ে থাকে।
কমিক অপেরা : গ্রাণ্ড অপেরায় সংলাপ সংযোজিত করে কমিক অপেরা তৈরি করা হয়। ইটালিতে এই অপেরাকে বুফা বলা হয়।
অপেরাট্টা : এটি একপ্রকার কমিক অপেরা। তবে ক্ষুদ্র অপেরা বা লঘু রসের অপেরাকে অপেরাট্টা বলা যতে পারে।
১৭ শতকে ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে অপেরার ছড়িয়ে পড়েছিলে। তবে ইতালিতে অপেরা সবচেয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। ফলে এর উৎকর্ষ ঘটেছিল নানাভাবে। ১৮ শতকের সবচেয়ে জনপ্রিয় অপেরা শিল্পী, মোৎজার্ট, ইতালীয়ান কমিক অপেরার জন্য বিশেষ খ্যাতি লাভ করেন।
ব্রিটিশভারতে কলকাতায় বাংলা প্রথম অপেরা রচিত হয়। স্বর্ণকুমারী দেবী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাল্মীকি প্রতিভা কালমৃগয়া মায়ার খেলায়ুরোপীয় ভাষায় যাহাকে অপেরা বলে, বাল্মীকিপ্রতিভা তাহা নহে-- ইহা সুরে নাটিকা; অর্থাৎ সংগীতই ইহার মধ্যে প্রাধান্য লাভ করে নাই, ইহার নাট্যবিষয়টাকে সুর করিয়া অভিনয় করা হয় মাত্র-- স্বতন্ত্র সংগীতের মাধুর্য ইহার ... বাল্মীকিপ্রতিভার গান সম্বন্ধে এই নূতন পন্থায় উৎসাহ বোধ করিয়া এই শ্রেণীর আরো একটা গীতিনাট্য লিখিয়াছিলাম।'