এ্যালোয়াডেই
ি Ἀλωάδαι>ইংরেজি Aloadae

গ্রিক সমুদ্র দেবতা
পোসেইডোন-এর ঔরসে ইফিমেডিয়ার গর্ভে জমজ পুত্র জন্মগ্রহণ করে। এই পুত্রদ্বয়ের নাম ছিল ওটুস এবং ইফাইলেটেস। ইফিমেডিয়ার স্বামী ছিলেন আলেয়ুস। ইফিমেডিয়ার সাথে  পোসেইডোন-এর প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠলে, ইফিমেডিয়া প্রায়ই সমুদ্রতীরে যেতেন। পরে উভয়ের দৈহিক মিলনের ফলে জমজ সন্তান ওটুস এবং ইফাইলেটেস-এর জন্ম হয়। এরপর ইফিমেডিয়া এই সন্তানদ্বয়কে সমুদ্রতীরে বিসর্জন দিতে এলে, আলেয়ুস এদের গ্রহণ করেন এবং প্রতিপালন করেন। এই পালকপিতা বা সৎপিতার নামানুসারে এদের নামকরণ করা হয় এ্যালোয়াডেই

এই দুই সন্তান প্রতি মাসে নয় আঙ্গুল করে বৃদ্ধি পেতো। মাত্র নয় বৎসর বয়সে এদের দৈর্ঘ্য হলো ৯ ফ্যাদম [১ ফ্যাদম =প্রায় ৬ ফুট]। এরা ছিল অত্যন্ত সুদর্শন। এরা পরস্পরকে হত্যা না করার প্রতিজ্ঞা করেছিল। কারণ তারা বুঝেছিল দৈহিক আকার এবং শক্তিতে অন্য কেউ তাদের পরাজিত করে হত্যা করতে পারবে না। এরা নিজেদেরকে দেবতাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর বিবেচনা করে, অলিম্পাসে দেবতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো। এরা প্রথমে যুদ্ধদেবতা এ্যারিজকে বন্দী করে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখলো। দেবতারা বল প্রয়োগে এ্যারিজ-কে মুক্ত করার পরিবর্তে হের্মেজ-কে রাতের অন্ধকারে পাঠালো। হের্মেজ রাতের অন্ধকারে এ্যারিজ-কে মুক্ত করে আনলো। এরফলে দুই ভাই অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে পেলিয়ন পর্বত নিক্ষেপ করে স্বর্গরাজ্য তছনছ করবে এমন হুমকি দিলো। ফলে এদের শাস্তি দেওয়ার জন্য, জিউস বজ্রাঘাতের প্রস্তুতি নিলেন। কিন্তু পোসেইডোন এসে জিউস -কে নিবৃত্ত করে বললেন যে, এদের কৌশলে নিবৃত্ত করা যাবে।

এই দুই ভায়ের ভিতর ওটা পছন্দ করতো হেরাকে আর ইফাইলেটেস পছন্দ করতো আর্তেমিস-কে। এই দুই দেবীর ভিতর কাকে প্রথম অধিকার করা হবে, এ নিয়ে প্রথমে দুই ভাইয়ের ভিতর তর্ক হলো। কিন্তু টসের মাধ্যমে নির্ধারিত হলো। প্রথমেই আর্তেমিস-এর নাম উঠলো। এরপর দুই ভাই আর্তেমিস-এর অন্বেষণে বেরিয়ে পরলো।

আর্তেমিস- বিষয়টি জানতে পেরে, ছলনার আশ্রয় নিলেন। আর্তেমিস এক সমুদ্র সৈকতে তাদের দেখা দিলেন। এরা যখন আর্তেমিসকে ধরার জন্য অগ্রসর হলো- তখন সমুদ্রের উপর দিয়ে আর্তেমিস উড়ে চললেন। এই দুই ভাই জলদেবতা পোসেইডোন-এর সন্তান ছিল, এই কারণে সমুদ্রের উপর দিয়ে আর্তেমিস- কে অনুসরণ করতে থাকলো। এরপর আর্তেমিস সাগর পার হয়ে নেক্সাজের জঙ্গলে প্রবেশ করে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। দুই ভাই এই জঙ্গলে প্রবেশ করার পর, তারা শুধু একটি সাদা হরিণ দেখতে পেলো। হরিণটি এতো লোভনীয় ছিল যে, তারা কিছুক্ষণের জন্য আর্তেমিস-এর কথা ভুলে গিয়ে হরিণটি শিকারের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লো। এই হরিণটি ছিল আর্তেমিস-এর সৃষ্ট মায়া হরিণ। ফলে এরা এই হরিণটিকে শিকার করতে গিয়ে এক সময় বনের ভিতরে পরস্পরকে হারিয়ে ফেললো। একসময় এই হরিণের দুই পার্শ্ব বরাবর অবস্থান নিলো। তাদের নজর ছিলো হরিণের দিকে। এরা একই সাথে দুইজন হরিণের দিকে বর্শা নিক্ষেপ করে এগিয়ে এলো। কিন্তু মায়া হরিণটি পালিয়ে গেল আর পরস্পরের নিক্ষিপ্ত বর্শা একে অপরকে গিয়ে আঘাত করলো। এবং এই আঘাতের ফলেই তাদের মৃত্যু হয়েছিল।


তথ্যসূত্র :
greek myth
/Robert Graves, cassel & comoany, fourth edition 1995
edith hamilton mythology/new american library