ধর্ম
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে এই নামে একাধিক চরিত্র রয়েছে। এঁরা হলেন –
১. যযাতির তৃতীয় পুত্র দ্রুহার বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন- এমন এক পুত্রের নাম ধর্ম। এর পুত্রসন্তানের নাম ছিল ধৃতি। [বিষ্ণুপুরাণ: ৪.১৭.২. বায়ুপুরাণ: ৯৯.১০, মৎস্যপুরাণ ৪৮.৮]
২. হৈহয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা হৈহয়ের পুত্রের নাম- ধর্ম। ধর্মের এক পুত্রে নাম ছিল নেত্র।
[ভাগবত পুরাণ: ৯.২৩]
৩. যদুর পুত্র ক্রৌষ্টুর বংশে পৃথুশ্রবার পুত্রের নাম -ধর্ম। এর পুত্রের নাম উশনা। [ভাগবত পুরাণ: ৯.২৩.৩৪]
৪. কলিযুগে জরাসন্ধবংশীয় যে সকল রাজা রাজত্ব করেছিলেন, ধর্ম ছিলেন তাঁদের একজন। এঁর পিতার নাম সুব্রত। পুত্রের নাম সুশ্রম  [বিষ্ণুপুরাণ, ৪.২৩.৩]
৫, ভবিষ্যতের ত্রয়োদশ মন্বন্তরে রৌচ্য মনুর একজন পুত্রের নাম হবে ধর্ম। [ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ: ৩.১.১০৪]
৬. সাবর্ণি মন্বন্তরে দেবতার কয়েকটি গণে বিভক্ত হবেন। এই গণের ভিতরে ধর্ম নামক একজন দেবতা থাকবেন।

২. হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে- ব্রহ্মার দক্ষিণ অঙ্গ হতে ইনি উৎপন্ন হন। বরাহ পুরাণের মতে- ব্রহ্মা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গভীর ধ্যানমগ্ন থাকা অবস্থায় তাঁর দক্ষিণ অঙ্গ হতে ধর্ম আবির্ভূত হন। ব্রহ্মা এই পুরুষকে বলেন- তুমি চতুষ্পদ ও বৃষভাকৃতিরূপে বৃদ্ধি পাও এবং প্রজাপালন কর। এরপর ধর্ম সত্যযুগে চতুষ্পদ, ত্রেতায় ত্রিপদ ও দ্বাপরে দ্বিপদ ধারণ করে প্রজাপালন করেন। কলিতে ইনি একপদী হয়ে প্রজাপালন করবেন। ব্রাহ্মণদের জন্য ইনি তাঁর সম্পূর্ণ অংশ, ক্ষত্রিয়দের জন্য তিনভাগ, বৈশ্যদের জন্য দুইভাগ ও শুদ্রদের জন্য একভাগ দিয়ে এই রক্ষা ও পালন করেন। ধর্মের চারটি পাদ- এগুলি হলো- গুণ, দ্রব্য, ক্রিয়া ও জাতি। বেদে ইনি তৃশৃঙ্গ নামে পরিচিত। এঁর মাথা দুটি, হাত সাতটি। বামন পুরাণের মতে- ধর্মের স্ত্রীর নাম অহিংসা। এঁর গর্ভে ধর্মের চারটি পুত্র জন্মে। এঁরা হলেন- সন্যকার, সনাতন, সনক ও সনন্দ। মহাভারতের মতে- ইনি কুন্তীর মন্ত্রে আবিষ্ট হয়ে, কুন্তীর সাথে মিলিত হন। ফলে যুধিষ্ঠিরের জন্ম হয়।