দুন্দুভি
বানান
বিশ্লেষণ :
দ্+উ+ন্+দ্+উ+ভ্+ঈ।
উচ্চারণ :
d̪un.d̪u.bʰi
শব্দ-উৎস :সংস্কৃত दुन्दुभि (দুন্দুভি)>বাংলা দুন্দুভি।দুন্দু=দুন্.দু (দুন্ এবং দু দুটি অক্ষর সৃষ্টি করেছে)
ভি =ভি। (ভ্+ই। ভি- একাক্ষর তৈরি করে)।
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে এই নামে দুটি চরিত্র পাওয়া যায়।
১. কালিকা পুরাণ মতে– দৈত্যদের রাজা ছিলেন। ব্রহ্মার বরে, যুদ্ধে ইনি দেবতাদের পরাজিত করেছিলেন। এরপর ইনি কৈলাসে এসে মহাদেব ও পার্বতীকে একত্রে ভ্রমণ করতে দেখেন। ইনি পার্বতীকে দেখে মোহিত হয়ে, তাঁকে অধিকার করার চেষ্টা করলে, মহাদেব অগ্নিদৃষ্টিতে একে ভস্মীভূত করেন।
২. মহিষাকৃতির দানব বিশেষ। ইনি ছিলেন ময়দানবের পুত্র এবং রাবণে স্ত্রী মন্দোদরীর সহোদর। রামায়ণের কিষ্কিন্ধাকাণ্ড মতে– এর শরীরে ছিল হাজার হাতির শক্তি। এই দানব আত্ম-অহঙ্কারে সমুদ্রকে যুদ্ধে আহ্বান করেন। এই দানবের অচিরেই মৃত্যু হবে জেনে, সমুদ্র সবিনয়ে এই যুদ্ধ প্রত্যাখান করেন এবং যথার্থ বীরের সন্ধানের জন্য হিমালয়ে যেতে বলেন। এরপর দুন্দুভি হিমালয়ে গিয়ে, সেখানকার পাথর তুলে বিভিন্ন দিকে নিক্ষেপ করে গাছপালা ধ্বংস করা শুরু করেন। এই সময় হিমালয় তাঁকে এই কাজ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিলে, দুন্দুভি প্রথমে হিমালয়কে যুদ্ধে আহ্বান করেন এবং এরপর বলেন যে, সে (হিমালয়) যদি যুদ্ধে অসমর্থ হয়, তা হলে একজন সত্যিকারের বীরের সন্ধান দেয়। এরপর হিমালায় কিষ্কিন্ধার বালীর কাছে যুদ্ধের জন্য যেতে বলেন। এর ইনি যুদ্ধের জন্য কিষ্কিন্ধায় বালীর কাছে এসে আস্ফালন করেতে থাকেন। বালীর দুন্দুভিকে হত্যা করে সজোরে তার দেহ নিক্ষেপ করেন। এই সময় অসুরের মুখ থেকে নির্গত রক্তের অংশ বিশেষ বায়ুতাড়িত হয়ে মাতণ্ডমুনির আশ্রমে পতিত হয়। এই কারণে, মাতণ্ডমুনি অভিশাপ দেন- আশ্রমদুষিতকারী তাঁর আশ্রমের এক যোজনের মধ্যে উপস্থিত হলে তাঁর মৃত্যু হবে। [একাদশ সর্গ, কিষ্কিন্ধাকাণ্ড, রামায়ণ]