সত্যবান
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
পৌরাণিক সত্তা
|
কাল্পনিকসত্তা
|
কল্পনা
|
সৃজনশীলতা
|
দক্ষতা
|
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়
|
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত-সত্তা
|
সত্তা
|}
হিন্দু
পৌরাণিক কাহিনি মতে―
শাল্বদেশের রাজা দ্যুমৎসেনের ঔরসে ও তাঁর স্ত্রী শৈব্যার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন।
ঘটনাক্রমে দ্যুমৎসেন অন্ধ হয়ে গেলে তাঁর শত্রুরা তাঁকে রাজ্যচ্যুত করেন।
ফলে ইনি সপরিবারে বনবাসী হন।
এই সময় সত্যবান সস্ত্রীক তপস্যা করতে থাকেন।
সত্যবানও মাতাপিতার সেবা করে তাপসের জীবনযাপন করতেন।
বাল্যকালে সত্যবান ঘোড়া ভালোবাসতেন এবং মাটি দিয়ে অশ্বমূর্তি নির্মাণ করতেন।
সে জন্য তার নাম হয় চিত্রাশ্ব।
অশ্বপতি নামক রাজার কন্যা সাবিত্রী তাঁকে পছন্দ করে বিবাহ করেন। নারদ সত্যবানের স্বল্পায়ুর কথা জানালেও সাবিত্রী এই বিবাহে অনড় থাকেন। বিবাহের এক বৎসর পরই সত্যবানের মৃত্যুর দিন উপস্থিত হয়। এই দিন সত্যবান বনে ফল ও কাঠ আনার জন্য উদ্যোগ নিলে, সাবিত্রী শ্বশুরের অনুমতি নিয়ে সত্যবানের সাথে বনে যান। ফল ও কাঠ সংগ্রহ করতে করতে সত্যবান হঠাৎ শিরঃপীড়া অনুভব করে অবসন্ন হয়ে পড়ে যান। পরে সাবিত্রী সত্যবানের মাথা কোলে তুলে নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন। কিছুক্ষণ পর সাবিত্রী রক্তবস্ত্র পরিহিত বিরাটকায় এক ভয়ঙ্কর পুরুষকে সত্যবানের পাশে দেখতে পেলেন। সাবিত্রী জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন যে― তিনিই যম। সত্যবান পুণ্যবান এবং সাবিত্রী পতিব্রতা বলে, যমদূতের পরিবর্তে যম নিজেই এসেছেন। এরপর সত্যবানকে পাশবদ্ধ করে যমকে দক্ষিণ দিকে যেতে দেখে, সাবিত্রী যমের অনুসরণ করে অগ্রসর হন। যম তাঁকে অনুসরণ না করে ফিরে যেতে বলেন। কিন্তু সাবিত্রী স্তব দ্বারা যমকে সন্তুষ্ট করলে, যম তাঁকে স্বামীর জীবন ছাড়া অন্য যে কোন বর প্রার্থনা করতে বলেন। সাবিত্রী যমের কাছ থেকে প্রথম বর প্রার্থনা করে পান কিন্তু সাবিত্রী তারপরেও যমকে অনুসরণ করা থেকে বিরত হলেন না। যম সাবিত্রীকে থামানোর জন্য পাঁচবার বর দেন। চতুর্থ বর দানের পর, যম সত্যবানের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন এবং পঞ্চম বরে সত্যবানের প্রাণ ফিরিয়ে দিলে, সাবিত্রী যমের অনুসরণ করা থেকে বিরত হন। যমের দেওয়া এই পাঁচটি বর ছিল―
প্রথম বর : তাঁর শ্বশুরের অন্ধত্ব দূর হওয়ার বর প্রার্থনা।
দ্বিতীয় বর : তাঁর শ্বশুরের রাজ্যলাভ প্রার্থনা করেন।
তৃতীয় বর : সাবিত্রীর পিতার শতপুত্র লাভ প্রার্থনা।
চতুর্থ বর : সত্যবানের ঔরসে সাবিত্রীর শতপুত্র প্রার্থনা।
পঞ্চম বর : সত্যবান জীবিত হওয়ার প্রার্থনা।
এরপর যম সত্যবানকে মুক্ত করে দেন এবং সাবিত্রীকে আশীর্বাদ করে বিদায় নেন। এরপর সাবিত্রী সত্যবানের অচেতন শরীরের কাছে এসে, তাঁর মাথা কোলে তুলে নিয়ে বসেন। পরে সত্যবানের সংজ্ঞা ফিরে এলে, উভয়েই আশ্রমে ফিরে যান। যমের আশীর্বাদে দ্যুমৎসেনের চক্ষু ও রাজ্যলাভ এবং অশ্বপতির শতপুত্র লাভ হয়।