সত্যভামা
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
পৌরাণিক সত্তা
|
কাল্পনিকসত্তা
|
কল্পনা
|
সৃজনশীলতা
|
দক্ষতা
|
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়
|
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত-সত্তা
|
সত্তা
|}
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে−
ইনি
কৃষ্ণের
স্ত্রী ও সত্রাজিৎ-এর কন্যা ছিলেন।
কৃষ্ণের
সাথে এঁর বিবাহের সূত্র ছিল স্যমন্তক নামক একটি মণি।
উল্লেখ্য,
সত্রাজিত্ নামক এক যাদব সূর্যকে সন্তুষ্ট করে স্যমন্তক নামক একটি
মূল্যবান মণি উপহার হিসাবে পান।
সত্রাজিত্ এই মণি কিছুদিন নিজের কাছে রেখে পরে তাঁর ভাই প্রসেনজিৎকে দান করেন।
প্রসেনজিৎ ছিলেন প্রবল অসংযমী।
ইনি এই মণি নিয়ে বনে শিকার করতে গেলে,
সিংহের হাতে প্রাণ হারান।
সেই সময় সেখানে উপস্থিত জাম্বুবান নামক অপর একজন এই মণি নিয়ে পলায়ন করেন।
এদিকে প্রসেনজিৎকে দীর্ঘসময় না দেখে সত্রাজিৎ ধারণা করেন যে,
কৃষ্ণ প্রসেনজিৎকে হত্যা করে এই মণি অধিকার করেছেন।
কৃষ্ণ
এই বিষয় অবগত হয়ে প্রসেনজিৎকে খোঁজার জন্য বনে গিয়ে− মৃত প্রসেনজিৎ ও সিংহকে
দেখতে পান।
এরপর জাম্বুবানের পদচিহ্ন অনুসরণ করে,
জাম্বুবানকে খুঁজে বের করেন।
২১ দিন যুদ্ধের পর
কৃষ্ণ
তাঁকে পরাজিত করে মণি উদ্ধার করেন এবং সত্রাজিৎকে ফিরিয়ে
দেন।
এই সময় তাঁর কন্যা জাম্বববতীকে ইনি বিবাহ করেন।
সত্রাজিৎ কৃষ্ণকে সন্দেহ করেছিলেন বলে, অত্যন্ত লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে, কৃষ্ণের সাথে তাঁর
অপর কন্যা সত্যভামারও বিবাহ দেন।
একবার নারদ
কল্পবৃক্ষের কয়েকটি ফুল নিয়ে
কৃষ্ণের
সাথে দেখা করতে আসেন।
কৃষ্ণ
এই ফুলগুলি তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে ভাগ করে দিলেও সত্যভামাকে দিতে ভুলে যান।
এরপর সত্যভামা অভিমান করলে,
কৃষ্ণের
ইন্দ্রের সাথে কলহ করে কল্পতরু এনে সত্যভামার
ঘরের সামনে রোপণ করেন।
ইনি ইন্দ্রের স্ত্রী শচী,
শিবের স্ত্রী গৌরী ও অগ্নির স্ত্রী স্বাহার মতো পুণ্যকব্রত পালন করে,
কৃষ্ণকে নারদমুনির হাতে দান করেন।
কিন্তু স্বামীর আসন্ন বিচ্ছেদ কল্পনা করে অস্থির হয়ে ইনি,
কৃষ্ণের
নামাঙ্কিত তুলসীপাতার বিনিময়ে
নারদের
কাছ থেকে আবার স্বামীকে ফিরিয়ে নেন।
অর্জুন কৃষ্ণের বোন সুভদ্রাকে অপহরণ করলে, প্রাথমিকভাবে সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি হলে, কৃষ্ণের মধ্যস্থতায় তা শান্ত হয়। পরে সত্যভামা বিপুল আয়োজন করে, অর্জুনের সাথে সুভদ্রার বিবাহ দেন।
কৃষ্ণের মৃত্যু ও যদুবংশ ধ্বংসের পর, অর্জুন অন্যান্য যাদব মহিলাদের সাথে সত্যভামাকে ইন্দ্রপ্রস্থে নিয়ে যান। পরে ইনি হিমালয় অতিক্রম করে কলাপগ্রামে গিয়ে অবশিষ্ট জীবন কৃষ্ণের আরাধনা করে কাটিয়ে দেন। এঁর গর্ভে কৃষ্ণের সাতটি পুত্র জন্মলাভ করেছিল।