আটকুঠুরি
বানান্ বিশ্লেষণ : আ+ট+অ-ক্+উ+ঠ্+উ+র্+ই
উচ্চারণ:
aʈ.ku.ʈʰu.ri (আট্)
শব্দ-উৎস: আট {সংস্কৃত অষ্ট> প্রাকৃত অট্ট> বাংলা আট।} + কুঠুরি { সংস্কৃত কোষ্ঠ> প্রাকৃত কোট্‌ঠ>কুঠ বাংলা কোঠরি>কুঠুরি}

পদ: বিশেষ্য
অর্থ: আট কক্ষবিশিষ্ঠ ঘর বিশেষ বাউল গানে দেহকে আটকক্ষবিশিষ্ঠ ঘর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাউল গানে আঠকুঠুরি শব্দটি প্রচুর দেখা যায়। দেহতত্ত্বে এই শব্দটি বিশেষ বাউল পারিভাষিক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।  শব্দের আক্ষরিক অর্থে দেহঘরের আটি বিশেষ ধরনের কক্ষ। এই কক্ষগুলোর সাথে যুক্ত রয়েছে ৯টি দরজা বা প্রবেশ-নির্গমনের পথ। এই কক্ষগুলো হলো-

১. দর্শনেন্দ্রিয়: চক্ষু নামক দুই দরজা হলো এর পথ। এই পথে আসা আলোর সাহায্যে মানুষ দৃশ্য অনুভব করে।
২. শ্রবণেন্দ্রিয়: কর্ণ নামক অঙ্গের ছিদ্র হলো- এর পথ। এই পথে আসা ধ্বনির সাহায্যে মানুষ শ্রবণ করে থাকে।
৩. ঘ্রাণেন্দ্রিয়: নাসিকা নামক অঙ্গের দুই ছিদ্র হলো এর পথ। এই পথে আসা অণু-কণার মাধ্যমে মানুষ ঘ্রাণের অনুভব লাভ করে।
৪. পরিপাকতন্ত্র: এর পথ হলো তিনটি। মুখগহ্বর হলো এই তন্ত্রের খাদ্য প্রবেশের পথ। এর নির্গমন পথ হলো- পায়ু ও মুত্রদ্বার।
৫. প্রজননতন্ত্র: এর প্রজনন অঙ্গের জন্য নির্ধারিত একটি পথ। পুরুষ প্রজনন তন্ত্রে এই পথটি দিয়ে শুক্রের নির্গমন ঘটে। স্ত্রী প্রজনন পথের মধ্য দিয়ে শুক্রের প্রবেশ হয়। এছাড়া রজশ্রাব নির্গত হয় এবং সন্তান প্রসব হয়।
৬. শ্বাস তন্ত্র: এই কক্ষে বায়ুর প্রবেশ-নির্গমনের জন্য রয়েছে নাসিকার ২টি ছিদ্র এবং ১টি মুখগহ্বর।
মুখগহ্বর হলো এই তন্ত্রের খাদ্য প্রবেশের পথ। এর নির্গমণ পথ হলো- পায়ু ও মুত্রদ্বার।
৭. বাকতন্ত্র: এই কক্ষে ধ্বনি, দৃশ্য যা কিছু প্রবেশ করে, তা বাক্যরূপে নির্গত হয় মুখগহ্ববর দিয়ে।
৮. স্নায়ু তন্ত্র: এই কক্ষের নিয়ন্ত্রক জীবাত্মার মন। এই কক্ষের প্রত্যক্ষ কোনো দরজা নেই। কিন্তু গোপন একটি দরজা আছে। এই দরজা দিয়ে জীবাত্মার সাথে পরমাত্রা মিলন ঘটে।

সমার্থক শব্দাবলি: আটকুটুরি


সূত্র :