মানসী
বাংলা মাসিক সাহিত্য পত্রিকা।
এই পত্রিকার জন্ম হয়েছিল একটি সাহিত্য-আড্ডায়। কলকাতার চৌরঙ্গীর ফটোগ্রাফির
দোকান 'হপসিং কোম্পানি'তে এই আড্ডা বসতো। এই আড্ডায় হপসিং কোম্পানির ম্যানেজার
সুবোধচন্দ্র দত্ত এবং কেলনার কোম্পানির কর্মী ফকিরচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একটি
পত্রিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এবং পত্রিকা প্রকাশের জন্য চাঁদা ধরা হয়
মাসিক ২ টাকা। অবশেষে পত্রিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে গৃহীত হলে- এর নাম
রাখা হয় 'মানসী'।
প্রথমাবস্থায় পত্রিকাটির লেখা সংগ্রহের জন্য ফকিরচাঁদ ও সুবোধচন্দ্র-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে গেলে, তিনি অর্থ এবং লেখকের অভাব দেখিয়ে তাঁদেরকে
নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এঁদের উৎসাহের জোর দেখে
রবীন্দ্রনাথ তাঁদের সাহায্য করতে সম্মত হন।
প্রথমাবস্থায় এই পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হয়ে হয়েছিলেন- ফকিরচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,
সুবোধচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও শিবরতন মিত্র। পরে এই সম্পাদকমণ্ডলীতে ইন্দুপ্রকাশ
বন্দোপাধ্যায়কে নেওয়া হয়-
রবীন্দ্রনাথের পরামর্শে। উল্লেখ্য এই পত্রিকার কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন-সুবোধচন্দ্র
দত্ত।
১৩১৫ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাসে এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়। কিছুদিন পর
শিবরতন মিত্র কলকাতা থেকে অন্যত্র চলে গেলে, সম্পাদকমণ্ডলীতে আসেন
যতীন্দ্রমোহন
বাগচী। ১৯০৩-১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
যতীন্দ্রমোহন
বাগচী
এই পত্রিকার সম্পাদনা করেছিলেন।
এই পত্রিকারটির প্রকাশ-স্থানের কোনো
স্থিরতা ছিল না। যেমন পত্রিকাটির প্রথম বর্ষের প্রথম ও দ্বিতীয় সংখ্যা হাওড়া
কর্ম্মযোগ প্রিন্টিং ওয়ার্কস থেকে ছাপা হতো। তৃতীয় সংখ্যা প্রকাশিত হয় কলকাতার
৭৭নং পটলডাঙ্গা স্ত্রীট জয়ন্তী প্রেস থেকে। এর প্রিন্টার ছিলেন কে.পি. চক্রবর্তী।
৪র্থ সংখ্যা কলকাতার ১১/৫ করায়াবাজার রোড, সান্টো প্রেসে ছাপা হয়েছিল। প্রিন্টার
ছিলেন এস. এল. সাহা।
সম্পাদকমণ্ডলীর কর্মকর্তাদের শৈথিল্যের কারণে, পত্রিকাটি তাঁর মান হারাতে বসলে,
১৩২০ খ্রিষ্টাব্দে নাটোরের মহারাজা জগদ্রিনাথ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
পত্রিকাটির ৮ম বর্ষ ১ম সংখ্যা (১৩২২-২৩ বঙ্গাব্দ) থেকে এই পত্রিকাটি সাপ্তাহিক
'মর্ম্মবাণী'র সাথে যুক্ত হয়ে 'মানসী ও মর্ম্মবাণী
' নামে প্রকাশিত হতে শুরু করে।
১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে মানসী'র মুদ্রিত কপির সংখ্যা ছিল ১২০০।
১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে মুদ্রিত কপির সংখ্যা ছিল ৫০০০।
১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে মুদ্রিত কপির সংখ্যা ছিল ৭০০০।
১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুদ্রিত কপির সংখ্যা ছিল ৭৫০০।