নাড়িশোধন প্রাণায়াম

যোগশাস্ত্রে বর্ণিত একটি প্রাণায়াম বিশেষ। বাংলায় নাড়ি শব্দের সমার্থ অনেকগুলো রয়েছে। যেমন রক্তবাহী ধমনী বা শিরা, হৃদস্পন্দন, নল ইত্যাদি। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নাড়ি বলতে বুঝায় মানবদেহের ত্রিবিধ অবস্থাজ্ঞাপক (বাত, পিত্ত, কফ) ধমনী। কিন্তু যোগশাস্ত্রে এই নাড়ি স্নায়ু অর্থে বিবেচনা করা হয়েছে। কারণ, এই প্রাণায়ামে মূলত স্নায়ুর উপকার বেশি হয়।

পদ্ধতি
১.
পদ্মাসন, সুখাসন, বজ্রাসন ইত্যাদি সহজতর আসনে উপবেশন করুন।
২. বাম হাতের হাতের তালু আকাশমুখী করে হাঁটুর উপর রাখুন।
৩. এবার ডান হাতের কনুই ভাঁজ করে হাতটা বুকের কাছে (দুই স্তনের মাঝখানে) রাখুন।
৪. এবার ডান হাত নাকের কাছে তুলে ধরুন। তারপর অনামিকা আর কনিষ্ঠা দিয়ে নাকের বাঁ দিক চেপে ধরুন। বৃদ্ধাঙ্গুল দ্বারা নাকের উপর চাপ দিয়ে নাকের ফুটো ছোট করে ফেলুন। এবার খুব আস্তে শ্বাস গ্রহণ করে ফুসফুস পরিপূর্ণ করুন। এই প্রাণায়ামে একে বলা হবে পূরক।
৫. ফুসফুস বন্ধ অবস্থায় উভয় নাকের ফুটো বন্ধ করে দিয়ে ৫ সেকেণ্ড অপেক্ষা করুন। এক্ষেত্রে একে বলা হবে অন্তর কুম্ভক।
৬. নাকের ডান ফুটো বন্ধ করে বাম ফুটো দিয়ে ধীরে ধীরে ফুসফুস থেকে সমস্ত বাতাস বন্ধ করে দিন। এই অবস্থায় ৫ সেকেণ্ড অপেক্ষা করুন। এক্ষেত্রে একে বলা হবে রেচক।

এইভাবে প্রক্রিয়াটি ৬ বার করুন এবং শবাসনে বিশ্রাম নিন। উল্লেখ্য যতটা সময় প্রাণায়াম করবেন, ততক্ষণ সময়ই
শবাসনে বিশ্রাম নিতে হবে।

উপকারিতা
১. শরীরে অতিরিক্ত অক্সিজেন প্রবেশের কারণে, স্নায়ুতন্ত্র শান্ত ও সজীব হয়।
২. মনের একাগ্রতা, মস্তিষ্কের অবসাদ দূর হয়।
৩. নাকের সাইনাস পরিষ্কার হয়।
৪. উভয় ধরনের রক্তের প্রেসার রয়েছে এমন রোগী উপকৃত হন।


সূত্র :
যোগাসনে রোগ আরোগ্য
। ডঃ রমেন মজুমদার
রোগারোগ্যে যোগব্যায়াম। কানাইলাল সাহা
যোগ সন্দর্শন। ডাঃ দিব্যসুন্দর দাস
যোগ ব্যায়াম। সবিতা মল্লিক