মুজিবুর রহমান খাঁ
(১৯১০-১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ)
সাংবাদিক ও সাহিত্যিক।

১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই অক্টোবর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) নেত্রকোণা জেলার উলুয়াটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম ইসমাইল উদ্দিন খাঁ। মায়ের নাম নজিরুন্নেসা খাতুন।
১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে নেত্রকোণার আঞ্জুমান হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পাস করেন।
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ থেকে বি এ পাস করেন। এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজিতে এম,এ শ্রেণিত ভর্তি হন। কিছু দিন পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা ত্যাগ করে ২৪ পরগণার হারুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ দেন।
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার সাপ্তাহিক মোহাম্মদী পত্রিকাতে সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন। একই বছরের ৩১শে অক্টোবর তিনি দৈনিক আজাদে সহ-সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি যুগ্ম-সম্পাদক পদে উন্নীত হন।

১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ৩০শে আগস্ট, কলকাতার দৈনিক আজাদ পত্রিকার অফিসে, মুসলমান সাহিত্যিক ও ছাত্রদের এক ঘরোয়া বৈঠকে পূর্ব-পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সোসাইটির সভাপতি ছিলেন আবুল কালাম শামসুদ্দীন এবং আহ্বায়ক ছিলেন  মুজীবুর রহমান খাঁ। সোসাইটির আহবায়ক হিসেবে মুজিবুর রহমান খাঁ কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. এম সাদেকের সহযোগিতায় 'Eastern Pakistan: Its Population, Delimitation and Economics' (সেপ্টেম্বর, ১৯৪৪) নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। এই গ্রন্থে তাঁদের কল্পিত স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান রাষ্ট্রের সরকার, অর্থনৈতিক উৎস, জনশক্তি, ভৌগোলিক সীমানা, নিরাপত্তা ইত্যাদি সম্পর্কে বিবরণ ও মানচিত্র প্রকাশ করা হয়েছিল।

১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি
বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সম্পাদকের পদ লাভ করেন।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারতের প্রথম বঙ্গীয় গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাক-ভারত বিভাজনের পর, দৈনিক আজাদ পত্রিকার কার্যক্রম শুরু হয় ঢাকাতে। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকায় আসেন এবং দৈনিক আজাদ পত্রিকার তিনি যুগ্ম-সম্পাদক পদে যোগদান করেন। পর তিনি একই পদে তার দায়িত্ব পালন করতে থাকেন।  

১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সাংবাদিক হিসেবে মিশর ভ্রমণ করেন।
১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে থেকে মাসিক মোহাম্মদীর সম্পাদক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সাংবাদিক হিসেবে হল্যান্ড ভ্রমণ করেন। এই বছরের
পূর্ব-পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটি

২০শে অক্টোবর ঢাকায় পূর্ব পাকিস্তান প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময় তিনি এই প্রেসক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই পদে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি এর প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি নির্বাচিত হন এবং
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত আজাদ ও মোহাম্মদীতে তার দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পয়গামের সম্পাদক পদে যোগ দেন এবং ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই দৈনিকের সাথে জড়িত ছিলেন।

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পর, ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে দৈনিক আজাদ পুনঃপ্রকাশিত হলে তিনি এই পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতির পদ লাভ করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এই পদে বহাল ছিলেন।  

১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই অক্টোবর ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে ঢাকার বনানি কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।  

প্রকাশিত গ্রন্থ

সম্মাননা


সূত্র: