ফুলঝুরী
খান, ওস্তাদ
সেনীয়া-মাইহার ঘরানার বিশিষ্ট
তবলা,
পাখোয়াজ,
সেতার
ও
এস্রাজ শিল্পী। তবে
তবলা এবং
এস্রাজ শিল্পী হিসেবে খ্যাতি ছিল সর্বাধিক।
১৩২৭ বঙ্গাব্দের (১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ)
চৈত্রমাসে ফুলঝুরী খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার বীটঘর গ্রামের প্রখ্যাত
সঙ্গীত-পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম লতিফ রসুল খান, মাতার নাম কামেনুল নেছা।
শৈশবে সঙ্গীতে হাতে খড়ি হয়−
ওস্তাদ
আলাউদ্দিন খান-এর বড় ভাই এবং তাঁর প্রথম সঙ্গীতগুরু
ফকির আফতাব উদ্দিন খানের কাছে। সম্পর্কে ফকির আফতাব উদ্দিন খান ছিলেন তাঁর মাতামহ।
তিনি এই সময় এই গুরুর কাছে তবলা শেখেন।
এরপর তিনি মাইহার
যান। সেখানে প্রায় দশ বৎসর
ওস্তাদ
আলাউদ্দিন খান
-এর কাছে সেতার ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের পাঠ নেন।
তাঁর প্রকৃত নাম ছিল ইয়ার রসুল খান। মাইহার রাজ দরবারে একটি আসরে, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান -এর সাথে তবলার সঙ্গত করার সময়, তবলাবাদন শুনে মাইহারের রাজা মুগ্ধ হয়ে তাঁকে 'ফুলঝুরী' উপাধিতে ভূষিত করেন। এরপর থেকে তিনি ফুলঝুরী খান নামেই পরিচিত হয়ে উঠেন।
তিনি
ওস্তাদ
আলাউদ্দিন খান
-এর ছোটো ভাই
ওস্তাদ আয়াত আলী খানের কাছে
এস্রাজ শেখেন। উদয় শঙ্করের নৃত্যদলের দলের সাথে তিনি
বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। এই দলে তিনি
তবলা,
পাখোয়াজ
এবং
এস্রাজ
বাজান। এরপর তিনি কিছুদিন শান্তিনিকেতনে সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে কাটান।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে চলে আসেন। ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা
বেতারকেন্দ্রের যুক্ত হন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই বেতারকেন্দ্রের সাথে যুক্ত
ছিলেন।
তিনি বেশকিছু চলচ্চিত্রের আবহসঙ্গীতে যন্ত্র বাজিয়েছেন। এদের ভিতর উল্লেখযোগ্য
চলচ্চিত্র ছিল আকাশ আর মাটি, মুখ ও মুখোশ, মাটির পাহাড়, যে
নদী মরু পথে, রাজধানীর বুকে, নতুন সুর, সূর্যস্নান
ইত্যাদি।
১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে
তিনি স্বাধীনতা পদক লাভ করেন।
১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দের (১৩৮৯ বঙ্গাব্দ) ৫ই মে, তিনি রামপুরাস্থ বাসভবনে মৃত্যুবরণ
করেন।
২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর স্মারক দাক টিকিট প্রকাশিত হয়।
সন্তানাদি : মোহম্মদ ইউনুস খান, মোহ জাফর খান, মোহম্মদ ইউসুফ খান, মোহম্মদ ইলিয়াস
খান এবং মোহম্মদ খায়রুল খান।