 শাহজাহান সিরাজ
শাহজাহান সিরাজ |  | 
| বাম দিক থেকে- শাহাজাহান সিরাজ, নূরে আলম সিদ্দিকী, আসম রব. আন্দুল কুদ্দুস মাখন | 
১৯৭০-৭২ মেয়াদে অবিভক্ত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১ মার্চ থেকে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা 
পালন করেন। 
২ মার্চ সকাল ১১ টায় 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের বটতলায় ডাকসু ও ছাত্রলীগের 
যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ছাত্র-জনতার এক বিশাল সমাবেশে। এই সমাবেশে শিল্পী
শিবনারায়ণ দাশের পরিকল্পনা ও অঙ্কনে সবুজ পটভূমিকার ওপর লাল বৃত্তের মাঝখানে 
বাংলার সোনালি মানচিত্র-সংবলিত স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উত্তোলন করেন 
ডাকসুর তৎকালীন সভাপতি 
			আ.স.ম আব্দুর রব। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন- ছাত্রলীগের তৎকালীন 
সভাপতি নূরে-আলম-সিদ্দিকী, ছাত্রলীগ সম্পাদক
শাজাহান সিরাজ, ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক 
আব্দুল কুদ্দুস মাখন ও পূর্বতন ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমদ প্রমুখ ।  
এই দিন বিকালে, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ, পল্টনে একটি জনসভার আয়োজন করে। এই সভায় একটি 
		প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে 'স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ঘোষণা ও কর্মসূচী 
		দেওয়া হয়। এই ইশতেহার পাঠ করেছিলেন ছাত্রলীগের 
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে
শাহজাহান সিরাজ।
 
৮ মার্চ (সোমবার, ২৩ ফাল্গুন 
	১৩৭৭ বঙ্গাব্দ) ছাত্রলীগের সভাপতি 
নূরে-আলম-সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ এবং ডাকসুর সহ-সভাপতি 
			আ.স.ম আব্দুর রব ও 
	সাধারণ সম্পাদক  
আব্দুল কুদ্দুস মাখন এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, বাংলার বর্তমান 
	মুক্তি আন্দোলনকে ‘স্বাধীনতার আন্দোলন’ ঘোষণা করে স্বাধীন বাংলার জাতির পিতা 
	বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক 
 
 
  জনসভায় যে প্রত্যক্ষ 
	কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আমরা তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে 
	ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য বাংলার সংগ্রামী জনতার প্রতি আহবান জানাচ্ছি।'
১০ই মার্চ (বুধবার ২৫ 
	ফাল্গুন ১৩৭৭ বঙ্গাব্দ), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক ছাত্রাবাসের প্রাঙ্গনে কেন্দ্রীয় 
	ছাত্রলীগের উদ্যোগে একটি জনসভা হয়। এই সভার সভাপতিত্ব করেছিলেন 
নূরে-আলম-সিদ্দিকী। 
২৩ মার্চ আউটার স্টেডিয়ামে
জয়বাংলা স্বেচ্ছাসেবকদের প্যারেডে তিনি-সহ অপর চারনেতা অভিবাদন 
গ্রহণ করেন। অপর তিন নেতা ছিলেন 
নূরে-আলম-সিদ্দিকী, শাহজান সিরাজ ও
আ.স.ম আব্দুর রব
। 
পরে তিনি ও অন্যান্য নেতাকর্মী জয়বাংলা স্বেচ্ছাসেবকদের 
সাথে 
বঙ্গবন্ধু'র
 বাড়িতে গিয়ে তাঁকে সামরিক কায়দায় 
অভিবাদন জানান।
২৫শে মার্চের পর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন এবং সেখানে 
মুজিব বাহিনী গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। এ ছাড়া এই বাহিনী কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন শাহজাহান 
সিরাজ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে ৩১শে অক্টোবর সাত সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে জাসদ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল)
নামক রাজনৈতিক দল গঠিত হয়। এই দলের সভাপতি হন আবদুল জলিল এবং যুগ্ম আহহবায়ক হন
 
		
			
			আ.স.ম আব্দুর রব। 
একই বছরে ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত অতিরিক্ত কাউন্সিলে ১০৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। 
এই দলের শুরুতে সহকারী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তী 
সময়ে জাসদে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। 
|  | 
| সস্ত্রীক শাহজাহান সিরাজ | 
জাসদের মনোনয়নে ৩ বার তিনি জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শাহজাহান সিরাজ ১৯৯৫ সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপিতে যোগ দেন। তিনি বিএনপির মনোনয়নেও একবার একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বেগম খালেদা জিয়া সরকারের শেষ পর্যায়ের দিকে নৌপরিবহন মন্ত্রি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যক্তিগত জীবন
এক সময়ের রাজনৈতিক সহকর্মী, সাবেক ছাত্রনেত্রী রাবেয়া সিরাজের সঙ্গে ১৯৭২ 
খ্রিষ্টাব্দে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শাহজাহান সিরাজ। তাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। তার স্ত্রী রাবেয়া সিরাজ একজন শিক্ষিকা এবং রাজনীতিবিদ।
শাহজাহান সিরাজ ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুলাই ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।