সতীশচন্দ্র বসু
১৮৭৬-১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দ
ব্রিটিশ ভারতে বাঙালি বিপ্লবী।

১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'আনন্দমঠ উপন্যাসের সূত্রে তৎকালীন বাঙালি তরুণ সমাজ বিপ্লবের মন্ত্রে উজ্জীবীত হয়ে উঠেছিলেন। সতীশচন্দ্র এঁদের একজন ছিলেন। বিশেষ করে দেশের সেবা করার জন্য শারীরিক, মানসিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক চর্চার ভিতর গড়ে ওঠ তরুণ প্রকৃত যোদ্ধা হয়ে উঠতে পারেন। এই আদর্শকে সামনে রেখে তৎকালিন জেনারেল এ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশানের (পরবর্তী সময়ের স্কটিশচার্চ কলেজ) ব্যায়ামাগারে সতীশচন্দ্র প্রথম একটি 'কাশীনাথ সাহিত্য সমিতি' গড়ে তুলেছিলেন। এটি ছিল মূলতঅনুশীলন' প্রবন্ধের আদর্শে এইগড়ে ওঠা একটি সংগঠন। তাঁরই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এখানে শরীর চর্চার পাশাপশি মানসিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক চর্চাকেন্দ্র হিসেব গড়ে উঠেছিল।

১৯০১ খ্রিষ্টাব্দেইংল্যান্ড থেকে সদ্য প্রত্যাগত প্রমথনাথ মিত্রের সাথে তাঁর পরিচয় ঘটে। উল্লেখ্য প্রমথনাথ মিত্র আয়ারল্যান্ড এবং রাশিয়ার বিপ্লবীদের কথা জানতে পারেন এবং এ সব আন্দোলোনের মতো করে- ভারতকে পরাধীনতা থেকে মুক্ত করার জন্য তিনি বিপ্লবী দল গঠনের সংকল্প করেন। ভারতে ফিরে আসার পর তিনি দেখলেন স্বাধীনতার জন্য ইতিমধ্যে ছোটো ছোটো গুপ্ত সংগঠন তৈরি হয়েছে। প্রথম দিকে তিনি এসকল গুপ্ত সমিতিগুলোর ভিতরে সমন্বয় করার উদ্যোগ নেন। এ সকল দলের সার্বিক কর্মকাণ্ডে তিনি সন্তুষ্ট হতে না পেরে নিজেই ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে  নিখিল বঙ্গ বৈপ্লবিক সমিতি গঠন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। প্রায় একই সময়ে সতীশচন্দ্রের  কাশীনাথ 'কাশীনাথ সাহিত্য সমিতি' এবং 'নিখিল বঙ্গ বৈপ্লবিক সমিতি'র সমন্বয়ে একটি গুপ্ত বিপ্লবী দল গঠন করার উদ্যোগ নেন। ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ মার্চ (সোমবার ১০ চৈত্র ১৩০৮) উভয়ের প্রচষ্টায় গড়ে উঠেছিল অনুশীলন সমিতি'। এর সভাপতি ছিলেন ব্যারিষ্টার প্রমথনাথ মিত্র, সহ-সভাপতি ছিলেন চিত্তরঞ্জন দাশঅরবিন্দ ঘোষ আর কোষাধ্যক্ষ ছিলেন সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই সময় সুরেশচন্দ্র নেপথ্যে থেকে সমিতির কাজে সক্রিয় সহায়তা করেন।

১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ৯ অক্টোবর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।