আয়ারল্যান্ড
উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এর রাজধানী ডাবলিন। রাষ্ট্রভাষা আইরিশ
এবং ইংরেজি। এর আয়তন ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। দ্বীপটি জুড়ে রয়েছে পাহাড়-পর্বত, বেশ
কিছু নদী ও হ্রদ।
সিলুরিয়ান অধিযুগের
৪১ কোটি ৮০ লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে
লাউরেশিয়া,
বাল্টিক ঢাল-ভূখণ্ড
এবং এ্যাভোলিনিয়া ক্রেটনের ভিতরে সংঘর্ষ হয়েছিল
এবং এর মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছিল
ইউরোমেরিকা
মহামহাদেশ।
এই সংঘর্ষের ফলে উৎপন্ন হয়েছিল আয়ারল্যান্ডের পর্বতমালা। উল্লেখ্য এই পর্বতমালাকে
বলা হয়
ক্যালিডোনীয়
গিরিজনি।
এর দক্ষিণ-পশ্চিমে আটলান্টিক
মহাসাগর। এই দিকে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরে
আমেরিকা মহাদেশ। এর মাঝে কোনো দেশ নেই। এর পূর্ব দিকে আইরিশ সাগর, উত্তরে
উত্তর সাগর। এই দ্বীপ-ভূমির এক-ষষ্ঠাংশ ইংল্যান্ডের অধীনে রয়েছে। এই অংশটি উত্তর
আয়ারল্যান্ড নামে পরিচিত।
১১৯৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ড একক
রাজতন্ত্রের অধীনে ছিল। এই রাজবংশকে বলা হয় হাই কিং অব আয়ারল্যান্ড। এরপর এই
দ্বীপাঞ্চলে ছোটো ছোটো রাজত্বে ভাগ হওয়া শুরু হয়। ১৫৪১ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে পুরো
আয়ারল্যান্ড ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। তৎসত্ত্বেও সে সময়ে আয়ারল্যান্ডে
সংসদীয় ব্যবস্থা ছিল। ১৫৪২ খ্রিষ্টাব্দে এই পার্লামেন্ট ক্রাউন অব আয়ারল্যান্ড
এ্যাক্ট পাশ করে। এর ভিতর দিয়ে কিংডম অব আয়ারল্যান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। এই আইনে
বলা হয় আয়ারল্যান্ডের রাজা বা রানী হবেন ইংল্যান্ডের রাজা বা রানী। এই নতুন আইনে
ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরী আয়ারল্যান্ডের প্রথম রাজা।
১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে রাজা তৃতীয় জর্জ-এর সময় গ্রেট ব্রিটেন এবং
আয়ারল্যান্ডের পার্লামেন্টে এ্যাক্ট অব ইউনিয়ন একটি বিল পাশ করে। এই বিলের
সূত্রে ১৮০১ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড মিলে তৈরি হয় ইউনাইটেড কিংডম অব
গ্রেট বৃটেন এন্ড আয়ারল্যান্ড। ১৮০১ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারি এই নতুন রাষ্ট্রের
রাজা হন তৃতীয় জর্জ।
১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৪শে এপ্রিল যুক্তরাজ্য থেকে আয়ারল্যাণ্ড স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে দেশটি ফ্রি স্টেট রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে রিপাবলিক অফ আয়ারল্যান্ড নামে নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দে সর্বোচ্চ জনসংখ্যা ছিল
প্রায় ৮২ লাখ। এই পর এই দেশের প্রধান খাদ্য আলুর ফলনে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় চরম
দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হয়। এর ফলে প্রায় ১০ লক্ষ লোক মৃত্যুবরণ করে। একই কারণে বহু লোক
দেশান্তরী হয়। ফলে ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে দেশটির জনসংখ্যা কমে ২৮ লাখে নেমে আসে। ২০১৩
খ্রিষ্টাব্দের পরিসংখ্যান অনুসারে দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ লাখ।