বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: জাগো অমৃত-পিয়াসি চিত
রাগ: হেমকল্যাণ, তাল: ঝাঁপতাল
জাগো অমৃত-পিয়াসি চিত
আত্মা অনিরুদ্ধ
কল্যাণ প্রবুদ্ধ।
জাগো শুভ্র জ্ঞান পরম
নব প্রভাত পুষ্প সম
আলোক-স্নান-শুদ্ধ॥
সকল পাপ কলুষ তাপ দুঃখ গ্লানি ভোলো
পুণ্য প্রাণ-দীপ-শিখা স্বর্গ পানে তোলো।
বাহিরে আলো ডাকিছে জাগো তিমির কারারুদ্ধ॥
ফুলের সম আলোর সম
ফুটিয়া ওঠ হৃদয় মম
রূপ রস গন্ধে অনায়াস আনন্দে জাগো মায়া-বিমুগ্ধ॥
- ভাবার্থ: যে জ্ঞানালোক চিত্তের অজ্ঞানতার কালিমা থেকে মুক্তি দেয় এবং
কল্যাণের পথে সঞ্চালিত করে, কবি সেই অমৃতরূপী জ্ঞান আহরণে উদ্বুদ্ধ হওয়ার
আহবান উপস্থাপন করেছেন এই গানে। শুভ্র তথা সত্য ও সুন্দরের জ্ঞানই পরমজ্ঞান
ধারণ করেন পরম স্রষ্টা। কবির কাছে এই পরম জ্ঞান নির্মল ও সৌন্দর্যময় পুষ্পের মতো।
কবি প্রত্যাশা করেন- যেমন করে আলোকধারায় স্নাত হয়ে আবির্ভূত হয় মহিমান্বিত নব
প্রভাত, তেমনি জ্ঞানালোকের ধারায় স্নাত হয়ে অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে মুক্ত
হয়ে জেগে উঠুক মানবাত্মা।
অতীতের জীবনের সকল পাপ-কলুষতার দুঃখ-গ্লানি ভুলে, জ্ঞানের পূণ্য-প্রাণ-প্রদীপের
শিখা প্রজ্জ্বলিত করে- পরম সত্য-রূপী স্বর্গলোকে আত্ম-নিবেদন রাখা হয়েছে
এই গানে। অজ্ঞানতার অবরুদ্ধ কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য, মুক্ত ভাবনার
জ্ঞানলোক মানবাত্মাকে ডাকছে। তাই সে ডাকে সাড়া দিয়ে জ্ঞানালোকে সবাই মুক্ত
জীবনের স্বাদ পাক, কবি শুধু তাই প্রত্যাশা করেন।
কবি এই জ্ঞানালোকের সন্ধান পেয়েছেন। তাই শুভ্র-সুন্দর পুষ্প মতো, বিকশিত
জ্ঞানালোকের মতো- কবির হৃদয় প্রস্ফুটিত হয়েছে সত্য-সুন্দরের আনন্দধারায়। সে
আনন্দধারার রূপ-রস-গন্ধে কবি বিভোর। তাঁরই মতো সবাই এই মায়া-মুগ্ধ জ্ঞানলোকে
জেগে উঠুক, কবি তেমনটাই প্রত্যাশা রেখেছেন এই গানে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে ১৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার, ১ আশ্বিন ১৩৪১ বঙ্গাব্দ), এইচএমভি
রেকর্ড কোম্পানির সাথে কয়েকটি গান প্রকাশের জন্য নজরুলের একটি চুক্তি হয়। এই
চুক্তিপত্রে এই গানটির উল্লেখ ছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ৪ মাস।
- রেকর্ড:
- এইচএমভি র
সাথে চুক্তিপত্র। [১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৫ (বুধবার,
১ আশ্বিন ১৩৪২
- এইচএমভি [ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬ (মাঘ-ফাল্গুন
১৩৪২)। এন ৭৪৮৫। শিল্পী: কমল দাশগুপ্ত।]
[শ্রবণ
নমুনা]
এর জুড়ি গান: প্রভাত বীণা তব বাজে হে [তথ্য]
- পত্রিকা: চতুরঙ্গ [পৌষ ১৩৪৫ (শিসেম্বর
১৯৩৮-জানুয়ারি ১৯৩৯)। কবিতা। নজরুল ইসলাম। পৃষ্ঠা: ১৩৩]
-
স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
সুধীন দাশ।
[নজরুল-সঙ্গীত
স্বরলিপি, সপ্তদশ খণ্ড। প্রথম সংস্করণ। নজরুল ইন্সটিটিউট আষাঢ়, ১৪০৩/ জুন, ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দ।
১২ সংখ্যক গান।]
[নমুনা]
-
সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম
- পর্যায়: