বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম:
আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ওই
পাঠ ও পাঠভেদ:
আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ওই।
ওই পাহাড়ের ঝর্না আমি, ঘরে নাহি রই গো
উধাও হ'য়ে বই॥
চিতা বাঘ মিতা আমার গোখ্রো খেলার সাথী
সাপের ঝাঁপি বুকে ধ'রে সুখে কাটাই রাতি
ঘূর্ণি হাওয়ার উড়্নি ধ'রে
নাচি তাথৈ থৈ গো 'আমি' নাচি তাথৈ থৈ॥
-
ভাবসন্ধান: এটি চলচ্চিত্রের গান। চলচ্চিত্রের সাপুড়ে কন্যা এই গানের
মধ্য দিয়ে তার আত্মপরিচয় তুলে ধরেছে। গানের শুরুতে সাপুড়ে কন্যা আকাশের
প্রেক্ষাপটে দূর-পাহাড়কে কল্প-চিত্রের কল্পলোকে দেখেছে। তার মনে হয়েছে,
অচঞ্চল দূর পাহাড় যেন আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। সাপুড়ে কন্যা ওই
পাহাড়ের চঞ্চল ঝর্নার সাথে নিজেকে তুলনা করেছে। পাহাড়ের কন্যা ঝরনা,
পাহাড়-মাতার কোল ছেড়ে নিরুদ্দেশের পথে হারিয়ে যায়। সাপুড়ের কন্যাও নিজেকে তেমনি
মাতৃ-ক্রোড় বিচ্যূত চলচঞ্চল ঘরছাড়া বিবাগিনী হিসেবে কল্পনা করেছে।
সাপুড়ের দলের পোষা চিতাবাঘ এই কন্যার সঙ্গী এবং বিষাক্ত গোখরো সাপ তাঁর খেলার
সাথি। এবং সাপের ঝাঁপি বুকে করেই সে পরম সুখে রাত্রি যাপন করে। আবার কখনো ঘূর্ণি
হাওয়ার সাথে সে মাঠ জুড়ে তা থৈ থৈ নাচের ছন্দে নেচে বেড়ায়। এসব উপমার মধ্য দিয়ে
সাপুড়ে কন্যা নিজেকে তুলে ধরেছে- বন্ধনহীন মুক্তানন্দে বেড়ে ওঠা প্রকৃতির কন্যা
হিসেবে। এই গানের আকাশ, পাহাড়, ঝর্না, চিতরাবাঘ, গোখরো সাপ, ঘূর্ণি বায়ু- এই
সবই প্রকৃতি অংশ। আর এসবের মতই সাপুড়ে কন্যাও প্রকৃতির সন্তান।
-
রচনাকাল ও স্থান: গানটির
রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৭
মে খ্রিষ্টাব্দে ১৯৩৯ (শনিবার ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৬)
সাপুড়ে
ছায়াছবিতে গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪০ বৎসর ১
মাস।
-
রেকর্ড। মেগাফোন। জুলাই ১৯৩৯ (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪৬)। জেএনজি
৫৩৮০। শিল্পী:
কানন
দেবী। [শ্রবণ
নমুনা]
-
চলচ্চিত্র: সাপুড়ে।
২৭ মে খ্রিষ্টাব্দে ১৯৩৯ (শনিবার ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৬)।
নিউ থিয়েটার্সের নিবেদন। প্রেক্ষাগৃহ: পূর্ণ থিয়েটার্স। চরিত্র: চন্দ্ন।
শিল্পী:
কানন
দেবী। [দেখুন:
প্রচার পুস্তিকা]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
সুধীন
দাশ ।
নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি তৃতীয় খণ্ড। [প্রথম প্রকাশ, দ্বিতীয় মুদ্রণ [কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। বৈশাখ
১৪০২। এপ্রিল ১৯৯৬। ১৭ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ৮৩-৮৫] [নমুনা]
-
পর্যায়
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি (জাগতিক, অনির্দেশিত)। চলচ্চিত্র সাপুড়ে।
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
- তাল:
দাদরা
- গ্রহস্বর: সা