নিশি ভোর হলো জাগিয়া, পরান-পিয়া
কাঁদে ‘পিউ কাহাঁ’ পাপিয়া, পরান-পিয়া॥
ভুলি’ বুলবুলি-সোহাগে
কত গুল্বদনী জাগে
রাতি গুল্সনে যাপিয়া, পরান-পিয়া॥
জেগে রয়, জাগার সাথী
দূরে চাঁদ, শিয়রে বাতি
কাঁদি ফুল-শয়ন পাতিয়া, পরান-পিয়া॥
গেয়ে গান চেয়ে কাহারে
জেগে র’স কবি এপারে
দিলি দান কারে এ হিয়া, পরান-পিয়া॥
ভাবসন্ধান: প্রিয়তমার
বিরহে রাত্রি অতিবাহিত হয়েছে,
তারই বিরহ-বেদনা এবং অভিমান এই গানে ফুটে উঠেছে নানা উপমার
চিত্রকল্পে। কবি তাঁর অভিমানে ভরা বেদনার অনুষঙ্গ হিসেবে খুঁজে পেয়েছেন পাপিয়ার
'পিউ কাঁহা' শব্দানুসঙ্গে।
স্থায়ীর দুটি পঙ্ক্তিতে এই বিরহ ফুটে উঠেছে বলা-না-বলার ব্যঞ্জনায়।
কবি কল্পনায় বুলবুলির মধুর কণ্ঠের সোহাগে গোলাপ কুমারী
যেমন আবেশিত হয়, তেমনি তার অভাবে
যেন কেটে যায় বিরহীর বিরহবিধূর
রাত্রি। পরান-পিয়ার সোহাগবিহীন বিরহী কবির সাথে রাতের চাঁদ জাগে । মিলনিপিয়াসী
কবিও ফুল-শয্যা রচনা করে পরান-পিয়ার প্রতীক্ষা করেকেটে যায় নিদ্রাবিহীন রাত্রি।
কবি বিরহবিধূর গান গেয়ে মিলনের দূরপ্রান্তে জেগে রয়। কবির মনে আক্ষেপ জেগে উঠে।
অভিমানের স্বগোক্তি ফুটে তার গানে- এ কোন্ হৃদয়হীনাকে তিনি মন দিয়েছেন। এই
অভিমান,আক্ষেপের ভিতর দিয়ে এই গানের পরিসমাপ্তি ঘটে।