৪৬ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স

২৫ বৈশাখ ১৩১৪ বঙ্গাব্দ থেকে ২৪ বৈশাখ ১৩১৫ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত (৭ মে ১৯০৭- ৬ মে ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দ)

    এই বৎসরের রচিত গানের সংখ্যা ৮টি


অন্তর মম বিকশিত [পূজা-১১১] [তথ্য]
  আর ২৭শে অগ্রহায়ণ তিনি শিলাইদহে পদ্মার বোটে গানটি রচনা করেছিলেন। উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথের
RBVBMS 358 পাণ্ডুলিপিতে গানটির সাথে স্থান ও তারিখ হিসেবে উল্লেখ আছে '২৭ অগ্রহায়ণ/১৩১৪/পদ্মাবোট'। অধিকাংশ রবীন্দ্রগবেষকদের মতে- রবীন্দ্রনাথ এই গানের মধ্য দিয়ে শোককে প্রার্থনায় পরিণত করে নিম্নোক্ত গানটি রচনা করেছিলেন।

প্রেমে প্রাণে গানে গন্ধে আলোকে পুলকে [পূজা-৩১৬] [তথ্য]
১৩১৭ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত গীতাঞ্জলির প্রথম সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত গানটির সাথে, গানটির রচনাকাল উল্লেখ আছে 'অগ্রহায়ণ ১৩১৪'। মূলত রবীন্দ্রনাথ এই বছরের অগ্রহায়ণ মাসে শান্তিনিকেতন, কলকাতা এবং শিলাইদহে কাটিয়েছিলেন। তাই অগ্রহায়ণ মাসে গানটি রচিত হলেও রচনার স্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না।

তুমি নব নব রূপে এসো প্রাণ [পূজা-১৬৭] [তথ্য]
১৩০১ বঙ্গাব্দের ২৬ ভাদ্র তারিখে- পতিসরে অবস্থানকালে রবীন্দ্রনাথ এ গানটির ৪ পংক্তি রচনা করেছিলনউল্লেখ্য, ১০ সেপ্টেম্বর ১৮৯৪, (২৬ ভাদ্র ১৩০১ বঙ্গাব্দ) তারিখে পতিসর থেকে ইন্দিরাদেবীকে লেখা একটি পত্রে (ছিন্নপত্রাবলী ২৩০, পত্র ১৫২)। এই গানের প্রাথমিক খসড়ার সন্ধান পাওয়া যায়।
            ওগো তুমি নব নব রূপে এসো প্রাণে।
                            (আমার নিত্যনব!)
                    এসো গন্ধ বরন গানে!
            আমি যে দিকে নিরখি তুমি এসো হে
‌‌‌                    আমার মুগ্ধ মুদিত নয়ানে!
এই
পত্রটি লেখার সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৩৩ বৎসর ৫ মাস। কিন্তু গীতাঞ্জলির পাঠে গানটির রচনাকাল পাওয়া যায়  অগ্রহায়ণ ১৩১৪। ধারণা করা হয়, গানটি এই সময় তিনি পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়েছিলেন

চরণধ্বনি শুনি তব, নাথ [পূজা-৩৯৯] [তথ্য]
১৩১৪ বঙ্গাব্দে সঙ্গীত-প্রকাশিকা পত্রিকার পৌষ সংখ্যায় এই গানটি প্রকাশিত হয়ে। প্রকাশের বিচারে ধারণা করা যায়, এই বৎসরের অগ্রহায়ণ মাসে রবীন্দ্রনাথ গানটি রচনা করেছিলেন।        

১৩১৪ বঙ্গাব্দের  ১১ মাঘ [শনিবার, ২৫ জানুয়ারি ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দ]-এ অষ্ট‌সপ্ততিতম (৭৮) সাংবৎসরিক মাঘোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই মাঘোৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথের ১৫টি গান পরিবেশিত হয়েছিল। এর ভিতরে নতুন গান ছিল ৫টি। গানগুলি হলো-

১. বীণা বাজাও হে মম অন্তরে [পূজা-৪০৯] [তথ্য]
২. সংসারে কোনো ভয় নাহি নাহি। পূজা-৪৫৫
৩. মম অঙ্গনে স্বামী নন্দে হাসে পূজা-৫০৭
৪. বিপুল তরঙ্গ রে
, বিপুল তরঙ্গ রে [পূজা-৩২২] [তথ্য]

. প্রচণ্ড গর্জনে আসিল একি দুর্দিন [পূজা-২২৬] [তথ্য]। উল্লেখ্য, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর 'গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী' গ্রন্থে এই গানটির রচনাকাল সম্পর্কে লিখেছেন- 'কনিষ্ঠ পুত্র শমীন্দ্রের মৃত্যু হয় ১৩১৪ অগ্রহায়ণ মাসে। সম্ভবত তার পরেই গানটি রচিত। এই বিচারে- গানটি রবীন্দ্রনাথের ৪৬ বৎসর ৭ মাস বয়সের রচনা হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। স্থান-কলকাতা।

প্রশান্তকুমার পাল- তাঁর রবিজীবনী পঞ্চম খণ্ডে প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়-এর এই অনুমান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে লিখেছেন- 'শমীন্দ্রনাথের মৃত্যর পরে দিন-দশেক কলকাতা-বাসের সময়ে এরূপ গান ভাঙার সুযোগ ছিল বলে মনে হয় না।' প্রশান্তকুমার পাল এই গানটির রচনাকাল অনুমান করেছেন ১৩১৪ বঙ্গাব্দের মাঘোৎসবের প্রস্তুতিকালে অর্থাৎ আশ্বিন-কার্তিক মাসের দিকে।

 

 

রবীন্দ্রনাথের ৪৬ বৎসর বয়সের শেষে রচনা করেন,
             মোর প্রভাতের এই প্রথম খনের কুসুমখানি [পূজা-৪০] [তথ্য]

MS. NO 229 পাণ্ডুলিপিতে গানটির সাথে রচনাকাল এবং স্থানের উল্লেখ আছে- '১লা বৈশাখ ১৩১৫ শান্তিনিকেতন'। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৪৭ বৎসর ১২ মাস

এই গানটির রচনাকাল সম্পর্কে প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর 'গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচি' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন '১ বৈশাখ ১৩২১ (১৪ এপ্রিল ১৯১৪)'। প্রশান্তকুমার পাল তাঁর রবিজীবনীর সপ্তম খণ্ডে ১৩২১ বঙ্গাব্দের অংশে উল্লেখ করেছেন, 'এইদিন, সম্ভবত সকালেই, তিনি একটি গান লেখেন 'মোর প্রভাতের এই প্রথমখনের/কুসুমখানি'।' গীতিমাল্যের ৯৬ সংখ্যক গানের সাথেও গানটির রচনাকাল ও স্থান উল্লেখ আছে 'শান্তিনিকেতন ১ বৈশাখ ১৩২১'।

এই গানটির রচনাকাল যাঁরা নির্ধারণ করেছিলেন, সম্ভবত তাঁদের ভুলে গানটির সাথে ১৩১৫-এর পরিবর্তে ১৩২১ হয়ে গিয়েছিল। এবং সেই ভুলটিই অন্যেরা অন্ধের মতো বহন করে গেছেন।