বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
শিরোনাম:
হেলাফেলা সারা বেলা একি খেলা আপন-মনে
পাঠ
ও পাঠভেদ:
- গীতবিতান (বিশ্বভারতী,
কার্তিক ১৪১২)-এর
পাঠ:
প্রেম : ৩০১
হেলাফেলা সারা বেলা একি খেলা
আপন-মনে।
এই বাতাসে ফুলের বাসে
মুখখানি কার পড়ে মনে॥
আঁখির কাছে বেড়ায় ভাসি কে
জানে গো কাহার হাসি,
দুটি ফোঁটা নয়নসলিল রেখে
যায় এই নয়নকোণে॥
কোন্ ছায়াতে কোন্ উদাসী দূরে
বাজায় অলস বাঁশি,
মনে হয় কার মনের বেদন কেঁদে বেড়ায় বাঁশির গানে।
সারা দিন গাঁথি গান কারে
চাহে গাহে প্রাণ-
তরুতলের ছায়ার মতন বসে আছি
ফুলবনে॥
-
পাণ্ডুলিপির
পাঠ:
-
পাঠভেদ:
-
তথ্যানুসন্ধান
-
ক. রচনাকাল ও স্থান: ১২৯৩ বঙ্গাব্দ।
গানটি
রবীন্দ্রনাথের
২৫ বৎসর বয়সের
রচনা।
উল্লেখ্য, এই গানটির রচনার সময়
ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ছেলেবেলা'
(ভাদ্র ১৩৪৭
বঙ্গাব্দ)
গ্রন্থে, " জ্যোতিদাদার আসর ছিল তেতালার ঘরে,আর বড়দাদার ছিল আমাদের দক্ষিণের
বারান্দায়। একসময় তিনি ডুবে ছিলেন আপন-মনে ভারী ভারী তত্ত্বকথা নিয়ে,সে ছিল আমাদের
নাগালের বাইরে।...তার পরে কাব্য লিখতে লাগলেন; যত লিখে রাখতেন তার চেয়ে ফেলে
দিতেন অনেক বেশি। যা লিখতেন তা সহযে পছন্দ হত না। তাঁর সেই-সব ফেলাছেঁড়া লাইনগুলো
কুড়িয়ে রাখবার মত বুদ্ধি আমাদের ছিল না। যেমন যেমন লিখতেন শুনিয়ে যেতেন, শোনবার লোক
জমত তাঁর চার দিকে। আমরা বাড়িসুদ্ধ সবাই মেতে গিয়েছিলুম এই কাব্যের
রসে।...জোড়াসাঁকোর বাড়ির প্রাণের একটি ঝরনাতলা ছিল এই দক্ষিণের
বারান্দা,শুকিয়ে গেল এর স্রোত, বড়দাদা চলে গেলেন শান্তিনিকেতন আশ্রমে। আমার কেবল
মাঝে মাঝে মনে পড়ে, ঐ বারান্দার সামনেকার বাগানে মন-কেমন-করা শরতের রোদ্দুর ছড়িয়ে
পড়েছে, আমি নতুন গান তৈরি করে গাচ্ছি
'আজি শরততপনে প্রভাতস্বপনে কী জানি পরান কী যে চায়'।
আর মনে আসে একটি ত্প্ত দিনের ঝাঁ ঝাঁ দুই প্রহরের গান 'হেলাফেলা সারাবেলা এ কী খেলা
আপন-মনে।"
এছাড়া 'জীবনস্মৃতি'তেও (১৩১৯ বঙ্গাব্দ) এই গানের উল্লেখ রয়েছে, "কিন্তু আমি যে
সময়কার কথা বলিতেছি সে সময়ের দিকে তাকাইলে দেখিতে পাই,তখন শরৎঋতু সিংহাসন অধিকার
করিয়া বসিয়াছে। তখনকার জীবনটা আশ্বিনের একটা বিস্তীর্ণ স্বচ্ছ অবকাশের মাঝখানে দেখা
যায়—
সেই শিশিরে ঝলমল-করা সরস সবুজের উপর সোনা-গলানো রৌদ্রের
মধ্যে মনে পড়িতেছে, দক্ষিণের বারান্দায় গান বাঁধিয়া তাহাতে যোগিয়া সুর লাগাইয়া গুন
গুন করিয়া গাহিয়া বেড়াতেছি- সেই শরতের সকালবেলায়।
আজি শরততপনে প্রভাতস্বপনে
কী জানি পরান কী যে চায়।
বেলা বাড়িয়া চলিতেছে-
বাড়ির ঘন্টায় দুপুর বাজিয়া গেল-
একটা মধ্যাহ্ণের গানের আবেশে সমস্ত মনটা মাতিয়া আছে, কাজকর্মের কোনো দাবিতে
কিছুমাত্র কান দিতেছি না; সেও শরতের দিনে-
হেলাফেলা সারা বেলা একি খেলা
আপন-মনে।
-
খ.
প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
- গ্রন্থ:
-
কড়ি ও কোমল
- প্রথম সংস্করণ [আদি ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র, ১২৯৩ বঙ্গাব্দ]। শিরোনাম:
সারাবেলা। পৃষ্ঠা: ১৮১
- রবীন্দ্র-রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড [বিশ্বভারতী শ্রাবণ ১৩৯১]
শিরোনাম: সারাবেলা। পৃষ্ঠা: ৭১-৭২
-
কাব্যগ্রন্থ
-
অষ্টম খণ্ড [মজুমদার লাইব্রেরি, ১৩১০ বঙ্গাব্দ] বিবিধ। মিশ্র
পিলু-আড়খেম্টা।
পৃষ্ঠা: ১২-১৩
[নমুনা
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
-
দ্বিতীয় খণ্ড
[ইন্ডিয়ান প্রেস এলাহাবাদ। ১৯১৫ বঙ্গাব্দ] কড়ি ও কোমল।
শিরোনাম: সারাবেলা। পৃষ্ঠা: ১০৫।
[নমুনা]
কাব্যগ্রন্থাবলী [আদি ব্রাহ্মসমাজ প্রেস, ১৩০৩।
কড়ি ও
কোমল। শিরোনাম সারাবেলা। মিশ্র পিলু। পৃষ্ঠা: ১২৬]
[নমুনা]
- গান
-
প্রথম সংস্করণ (১৩১৫ বঙ্গাব্দ, ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দ)
[সিটি বুক সোসাইটি, ১৩১৫ বঙ্গাব্দ। গান। মিশ্রপিলু-আড়খেম্টা।
পৃষ্ঠা: ১০-১১। [নমুনা:
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
-
দ্বিতীয় সংস্করণ [ইন্ডিয়ান প্রেস (১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ,
১৩১৬ বঙ্গাব্দ)] মিশ্র পিলু-আড়খেম্টা। পৃষ্ঠা ১৪৪।
[নমুনা]
-
তৃতীয় সংস্করণ (১৩২১ বঙ্গাব্দ, ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ) পৃষ্ঠা: ৭৪।
[নমুনা]
-
গানের বহি ও বাল্মীকি প্রতিভা (আদি ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র ১৩০০)।
মিশ্র ভৈরবী-আড়াখেমটা। গান সংখ্যা ৪৭। পৃষ্ঠা: ৪৭-৪৮। [নমুনা:
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
-
গীতবিতান
-
প্রথম খণ্ড, প্রথম সংস্করণ।&n
[বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৩৮,
[কড়ি ও কোমল
(১২৯৩ বঙ্গাব্দ) থেকে গৃহীত হয়েছিল। পৃষ্ঠা: ৪৫-৪৬]
[নমুনা:
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
-
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী,মাঘ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)
প্রেম (প্রেম বৈচিত্র্য-২৭৪) পর্যায়ের ৩০১ সংখ্যক গান।
-
অখণ্ড সংস্করণ, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী ১৩৮০)) প্রেম (প্রেম
বৈচিত্র্য-২৭৪) পর্যায়ের ৩০১ সংখ্যক গান।
- বাঙালীর গান ( ১৩১২ বঙ্গাব্দ)। দুর্গাদাস লাহিড়ি সম্পাদিত। মিশ্রভৈরবী-
আঢ়খেমটা। পৃষ্ঠা: ৬২০-৬২১
-
রবীন্দ্রগ্রন্থাবলী (হিতবাদী ১৩১১) যোগিয়া বিভাস-একতালা। ৪৭ সংখ্যক গান,
মিশ্রভৈরবী- আঢ়খেমটা। পৃষ্ঠা: ৯৭৮
[নমুনা]
-
স্বরবিতান পঞ্চাশত্তম
(৫০, শেফালি) খণ্ডের
(চৈত্র ১৪১৩ বঙ্গাব্দ) ১৭ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা : ৫৫-৫৮।<
[নমুনা]
-
স্বরলিপি-গীতিমালা
- প্রথম সংস্করণ ১৩০৩ বঙ্গাব্দ
-
চতুর্থ খণ্ড।
ডোয়ার্কিন এণ্ড সন্স লিমিটেড। ১৩৪৯ বঙ্গাব্দ। যোগিয়া বিভাস-একাতাল। পৃষ্ঠা ২১-২৫।
[নমুনা]
স্বরলিপি-গীতিমালা
(১৩০৪
বঙ্গাব্দ)। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর
-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত।
পত্রিকা:
- সাধনা (বৈশাখ ১৩০১ বঙ্গাব্দ)।
ইন্দিরা দেবী
-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত।
গ. সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলি:
- স্বরলিপি:
[স্বরলিপি]
- স্বরলিপিকার:
- প্রথম স্বরলিপি: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
[স্বরবিতান পঞ্চাশত্তম
(৫০, শেফালি) খণ্ডে (চৈত্র
১৪১৩ বঙ্গাব্দ)]
- সুরান্তর:
ইন্দিরা দেবী। [উল্লেখ্য এই
স্বরলিপিটি ১৩৩৫ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত 'শেফালী'তে ছিল না]
- জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর।
[স্বরলিপি-গীতিমালা (১৩০৪ বঙ্গাব্দ)]।
স্বরবিতান পঞ্চাশত্তম
(৫০, শেফালি)
খণ্ডের (চৈত্র
১৪১৩ বঙ্গাব্দ)
সুরভেদ/ছন্দভেদ অংশে এর সুরভেদ দেখানো হয়েছে।
- সুর ও তাল:
-
স্বরবিতান পঞ্চাশত্তম
(৫০, শেফালি) খণ্ডে (চৈত্র ১৪১৩ বঙ্গাব্দ)গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই।
উক্ত স্বরলিপিটি ।৩
মাত্রা ছন্দে দাদরা
তালে নিবদ্ধ।
- রাগ:
ভৈরবী (ষড়জ পরিবর্তিত)।
তাল: দাদরা।
[রবীন্দ্রসংগীত:
রাগ-সুর নির্দেশিকা, সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬],
পৃষ্ঠা: ৮৫।
- রাগ:
ঝিঁঝিট, খাম্বাজ।
তাল:
দাদরা।
[রাগরাগিণীর
এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য
সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১],
পৃষ্ঠা: ১৪৮।
- বিষয়াঙ্গ:
- গ্রহস্বর:
গা।
- লয়: মধ্য।