বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত।
গান সংখ্যা : ৫২৫
শিরোনাম:
এ আঁখি জল মোছ প্রিয়া ভোলো
ভোলো আমারে।
পাঠ ও পাঠভেদ:
রাগ : ভৈরবী, তাল : কাহারবা
এ আঁখি জল মোছ প্রিয়া ভোলো ভোলো আমারে।
মনে কে গো রাখে তারে (ওগো) ঝরে যে ফুল আঁধারে॥
ফোটা ফুলে ভরি' ডালা গাঁথ বালা মালিকা,
দলিত এ ফুল লয়ে, (ওগো) দেবে গো বল কারে॥
স্বপনের স্মৃতি প্রিয় জাগরণে ভুলিও,
ভুলে যেয়ো দিবালোকে রাতের আলোয়ারে।
ঘুমায়েছ সুখে তুমি সে কেঁদেছে জাগিয়া,
তুমি জাগিলে গো যবে সে ঘুমায়ে ওপারে॥
ভাবার্থ: গানটির ভিতরে অভিমানী প্রেমিকে গভীর বিরহের বাণী ফুটে উঠেছে করুণ রসে।
পরম অভিমানে সকরুণ সুরে প্রেমিক তাঁর প্রেমিকা বলছে, চোখের জল মুছে ফেলো এবং আমাকে ভুলে যাও। রাতের অন্ধকারে ফোটা ফুল, রাতের অন্ধকারেই যদি ঝরে পড়ে, তাকে কেউ কি মনে রাখে, এ জিজ্ঞাসা প্রিয়ার কাছে। সকলে অগোচরে তাদের প্রণয়ের ফুল ফুটেছিল সকলের অগোচরে, তা ব্যর্থ হয়ে গেছে সংগোপনে। তাকে মনে করে কষ্ট না পেয়ে ভুলে যাওয়ার মিনতি জানাচ্ছেন প্রেমিক-বন্ধু।
অন্তরাতে প্রেমিক তাঁর প্রিয়ার কাছে সকতারে জানতে চাইছেন যে,, প্রেম-কুসুম নিয়ে যে প্রেমহার তৈরি সে করছে এ মালা কাকে দেবে সে। কারণ, তাদের ব্যর্থ প্রেমের ফুলগুলো আজ বিবর্ণ, দলিত। এই বিধ্বস্ত ফুলের মালা তো উপহারের অযোগ্য হয়ে গেছে।
সঞ্চারীতে প্রেমিক তার
প্রিয়াকে বলছে, স্বপনে বা কল্পনায় দেখা স্মৃতি আলেয়ার মতো। যার ঔজ্জ্বল্য আছে,
কাছে টানার আকর্ষণ আছে। কিন্তু দিনের আলোতে যেমন রাতের আলেয়া মিলিয়া যায়। তেমনি
স্বপ্ন জাগরণে মিলিয়ে যায় বাস্তবের ছোঁয়ায়। প্রেমিক তাঁর প্রিয়াকে মনে করিয়ে
দেয়, দুজনের জগৎ আলাদা হয়ে গেছে। প্রেমিক আভোগীতে একটি বাস্তবতা,
তুমি যখন ঘুমের স্বপ্ন-জগতে সুখানন্দে বিভোর, তোমার প্রিয় তখন বিরহব্যথায়
ব্যর্থ রাতি জেগে কাটিয়েছে। আর স্বপ্নের মধুর আবেশ ছেড়ে তুমি জেগে উঠলে, হয়তো
তোমার প্রিয় জাগরিত রাত্রি শেষে রাত্রি শেষে ঘুমিয়ে গেছে।
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান:
গানটির
রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না।
১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের
জুলাই
মাসে
এইচ. এম. ভি.
রেকর্ড
কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করে।
এই বিচারে ধারণা করা যায় যে, গানটি নজরুল ইসলামের ৩২ বৎসর বয়সে রচিত হয়েছিল।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
রাগ ও তাল: