হুগলী জেল
ভারতের
পশ্চিমবঙ্গ
হুগলীতে অবস্থিত জেল।
১৮১৭ খ্রিষ্টাব্দে
হুগলী নদীর
তীরে জনেক স্থানীয় বাসিন্দার বাসস্থান অধিগ্রহণ করে এই জেলখানা স্থাপন করা হয়েছিল।
ব্রিটিশ ভারতের বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ড চালানোর অপরাধে এখানে রাজবন্দীদের রাখা হতো।
কোনো কোনো বিশেষ রাজবন্দীকে নির্জন কক্ষে রাখা হতো। এই
জেলে রাজবন্দীদের উপর অকথ্য অত্যাচারের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেছিল। এসব অত্যাচরের
কথা প্রকাশিত হয়েছিল,
কাজী নজরুল ইসলামকে এই রাখার পর তাঁর অনশনের সূত্রে।
১৯২২
খ্রিষ্টাব্দে
ধূমকেতু
পত্রিকার প্রথম বর্ষ বিংশ সংখ্যা প্রকাশের পর রাজদ্রোহিতার অভিযোগে ভারতীয়
দণ্ডবিধির ১২৪ ধারায়, পত্রিকার সম্পাদক
কাজী নজরুল ইসলামের
নামে গ্রেফতারি পরো্য়ানা জারি করা হয়।
১৯২৩
খ্রিষ্টাব্দের ১৩ই এপ্রিল (শুক্রবার ৩০ চৈত্র ১৩২৯),
নজরুল ইসলামকে
আলিপুর কারাগার
থেকে
হুগলী জেলে
স্থানান্তরিত করা হয়। শুরু থেকেই এই
জেলে নজরুল-সহ সকল রাজবন্দীদের উপর অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছিল। এই অবস্থায় 'জেলের
সুপার'-কে ব্যঙ্গ করে নজরুল একটি গান রচনা করেছিলেন। গানটি ছিল মূলত রবীন্দ্রনাথে
রচিত 'তোমারি গেহে পালিছ স্নেহে তুমি ধন্য ধন্য হে' গানের প্যারোডি। এই গানটি হলো-
তোমারি জেলে পালিছ ঠেলে [তথ্য]
হুগলি জেলে
থাকাকালে জেল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থা, অপমানমূলক আচরণ ও নির্যাতনের পরিমাণ এতটাই
তীব্রতর হয়ে উঠেছিল যে, শেষ পর্যন্ত ১৫ই এপ্রিল (রবিবার, ২ রা বৈশাখ ১৩৩০) থেকে
নজরুল-সহ মোট ২১জন রাজবন্দী অনশন শুরু করেন। এর প্রায় ১০ দিন পর এই সংবাদ জনসমক্ষে
আসে ২৪শে এপ্রিল (মঙ্গলবার ১১ বৈশাখ) আনন্দবাজার পত্রিকার মাধ্যমে।
১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে ২৩শে মে (বুধবার,
৯ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩০) বিরজাসুন্দরী জেলে যান এবং নজরুলকে লেবুর সরবত পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ
করান। এরপর হুগলি জেল কর্তৃপক্ষ নজরুলের প্রতি সদয় আচরণ করেন। অনশন
ভঙ্গের পর, ২৫শে মে-তে (শুক্রবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩০) অসুস্থ নজরুলকে রোগী হিসেবে এক
মাসের জন্য হুগলি জেলের নির্জন সেলে পাঠানো হয়েছিল। ১৮ই
জুন (সোমবার ৩ আষাঢ় ১৩৩০) বহরমপুর জেলে নজরুল ইসলামকে স্থানান্তর করা হয়েছিল।