বিষয়: নজরুলসঙ্গীত
শিরোনাম: তোমারি জেলে পালিছ ঠেলে, তুমি ধন্য ধন্য হে
তোমারি জেলে পালিছ ঠেলে, তুমি ধন্য ধন্য হে!
আমার এ গান তোমারই ধ্যন, তুমি ধন্য ধন্য হে॥
রেখেছ সান্ত্রী পাহারা দোরে,
আঁধার কক্ষে জামাই-আদরে,
বেঁধেছ শিকল-প্রণয়-ডোরে, তুমি ধন্য ধন্য হে॥
আ-কাঁড়া চালের অন্ন-লবণ,
করেছ আমার রসনা-লোভন,
বুড়ো ডাঁটা-ঘাঁটা লাপসী শোভন, তুমি ধন্য ধন্য হে ॥
ধর ধর খুড়ো চপেটা মুষ্টি,
খেয়ে গয়া পাবে সোজা স-গোষ্ঠি,
ওল ছোলা দেহ ধবল-কুষ্ঠি, তুমি ধন্য ধন্য হে॥
-
রচনাকাল
ও স্থান: ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে (১৩২৯ বঙ্গাব্দ) নজরুল '
ধূমকেতু' পত্রিকার মাধ্যমে ব্রিটিশ বিরোধী
রচনা প্রচার করেন। এই কারণে
২৩শে নভেম্বর
কুমিল্লা থেকে তাঁকে
গ্রেফতার করে,
কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে রাখা হয়। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই
জানুয়ারি নজরলকে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১৭ই জানুয়ারি নজরুলকে
প্রেসিডেন্সি জেল থেকে
আলিপুর কারাগারে রাখা হয়। এরপর ১৪ই এপ্রিল তাঁকে
পাঠানো হয়েছিল
হুগলী জেল এই জেলে নজরুল-সহ সকল রাজবন্দীদের
উপর অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছিল।
এই অবস্থায় 'জেলের
সুপার'-কে ব্যঙ্গ করে নজরুল এই গানটি রচনা করেছিলেন। গানটি ছিল মূলত
রবীন্দ্রনাথে রচিত 'তোমারি গেহে পালিছ স্নেহে তুমি ধন্য ধন্য হে' গানের প্যারোডি।
ভাঙার গান।
প্রথম সংস্করণে
[শ্রাবণ মাসে (আগষ্ট ১৯২৪)] 'সুপার (জেলের) বন্দনা' শিরোনামে গানটি অন্তর্ভুক্ত
হয়েছিল। গানটির পাদটীকায় উল্লেখ ছিল- 'হুগলি জেলে থাকাকালীন জেলের
সকল প্রকার জুলুম আমাদের ওপর দিয়ে পরখ ক'রে নেওয়া হয়েছিল। সেই সময় জেলের মূর্ত্তিমান 'জুলুম' বড়-কর্তাকে দেখে এই
গান গেয়ে আমরা অভিনন্দন জানাতাম'] লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো-
অনশনের কারণে নজরুল ২৫ এপ্রিলের (১২ বৈশাখ ১৩২৯) দিকে খুব অসুস্থ হয়ে
পড়েন। তাই ধারণা করা যায় গানটি তিনি রচনা করেছিলেন ১৪-২৫শে এপ্রিলের (১-১২
বৈশাখ ১৩২৯) ভিতরে। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ২৩ বৎসর ১১ মাস।
উল্লেখ্য
হুগলী জেলে থাকাকালে
জেল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থা, অপমানমূলক আচরণ ও নির্যাতনের পরিমাণ এতটাই তীব্রতর হয়ে উঠেছিল যে,
শেষ পর্যন্ত ১৫ই এপ্রিল থেকে নজরুল-সহ মোট ২১জন রাজবন্দী অনশন শুরু করেন। পরে
১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে মে বিরজাসুন্দরী দেবী এসে নজরুলের অনশন ভঙ্গ করিয়েছিলেন। ১৮ই জুন
তাঁকে বহরমপুর জেলে স্থানান্তর করা হয়।
-
গ্রন্থ: ভাঙার গান।
- প্রথম সংস্করণে
[শ্রাবণ মাসে (আগষ্ট ১৯২৪)] শিরোনাম:
সুপার
(জেলের) বন্দনা। গানটির পাদটীকায় উল্লেখ ছিল- 'হুগলি জেলে থাকাকালীন জেলের
সকল প্রকার জুলুম আমাদের ওপর দিয়ে পরখ ক'রে নেওয়া হয়েছিল। সেই সময় জেলের মূর্ত্তিমান 'জুলুম' বড়-কর্তাকে দেখে এই
গান গেয়ে আমরা অভিনন্দন জানাতাম'
- দ্বিতীয় মুদ্রণ [ন্যাশনাল বুক এজেন্সী লিমিটেড।
১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দ। শিরোনাম:
সুপার
(জেলের) বন্দনা। পৃষ্ঠা: ২৬-২৮। পাদটীকা: প্রথম সংস্করণের
অনুরূপ।
- নজরুল-রচনাবলী। জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। প্রথম খণ্ড। বাংলা একাডেমী। ১১ জ্যৈষ্ঠ
১৪১৩/মে ২০০৬। পৃষ্ঠা: ১৭৩।
পর্যায়: ব্যঙ্গাত্মক গান (প্যারোডি)।
সুরাঙ্গ: ভাঙা গান।তোমারি গেহে পালিছ স্নেহে [রবীন্দ্রসঙ্গীত]।
গীতবিতান: পূজা-৫০০