ভারত
প্রজাতন্ত্রের উত্তরাঞ্চলের একটি প্রদেশ।
ভৌগোলিক
স্থানাঙ্ক :
- অক্ষাংশ: ২৩°৪৮´ উত্তর থেকে ৩০°১৫´ উত্তর
- দ্রাঘিমাংশ: ৭৭°০৫´ পূর্ব থেকে ৮৪°৩৯´ পূর্ব
মোট আয়তন: ২,৪০,৯২৮ বর্গকিলোমিটার বর্গকিলোমিটার। আয়তনের দিক থেকে এটি
ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম রাজ্য।
রাজধানী: লখনউ।
ভৌগোলিক অবস্থান: এর উত্তরে
নেপাল ও উত্তরাখণ্ড,
দক্ষিণে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়, পূর্বে বিহার ও ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমে রাজস্থান, হরিয়ানা, দিল্লি ও হিমাচল প্রদেশ।
জনসংখ্যা: উত্তরপ্রদেশ ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য। ২০১১
খ্রিষ্টাব্দে জনগণনা অনুসারে, এর জনসংখ্যা ১৯৯,৮১২,৩৪১।
ভাষা: হিন্দি (সব উপভাষা মিলিয়ে): প্রায় ৯০.১%, উর্দু: ১০.৩%, ভোজপুরি (যদিও হিন্দির অধীনে গননা হয়): প্রায় ১০-১২% (পূর্বাঞ্চলে)
অন্যান্য: পাঞ্জাবি, বাংলা, নেপালি (তরাই অঞ্চলে)।
ধর্ম: ২০১১ সেন্সাস অনুসারে ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যা।
- হিন্দু: ১৫.৯৩ কোটি। শতকরা৭৯.৭৩
- মুসলিম: ৩.৮৫ কোটি। শতকরা ১৯.২৬
- শিখ: ০.০৬৪ কোটি। শতকরা ০.৩২
- খ্রিস্টান: ০.০৩৬ কোটি। শতকরা ০.১৮
- জৈন: ০.০২২ কোটি। শতকরা ০.১১
- বৌদ্ধ: ০.০২১ কোটি। শতকরা ০.১০
- অন্যান্য ধর্ম: ০.০০২ কোটি। শতকরা ০.০১
- ধর্ম উল্লেখ করেনি: ০.০৫৮ কোটি। শতকরা ০.২৯
উত্তর প্রদেশের প্রাকৃতিক অঞ্চল
উত্তর প্রদেশকে মূলত তিনটি প্রাকৃতিক অঞ্চলে ভাগ করা যায় ।
অঞ্চল তিনটি হলো-
- তরাই ও ভাবর অঞ্চল (উত্তরাঞ্চল)
- হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত অঞ্চল। এই অঞ্চল জুড়ে রয়েছে- ঘন জঙ্গল, উর্বর জমি। এই
অঞ্চলে রয়েছে ডুডওয়া জাতীয় উদ্যান ও বাল্মীকি টাইগার রিজার্ভ।
গাঙ্গেয় সমভূমি (মধ্য ও পশ্চিমাংশ)।
- ভারতের সবচেয়ে উর্বর কৃষিভূমি রয়েছে
এই অঞ্চলে। গঙ্গা, যমুনা, ঘাঘরা, রাপ্তি, গোমতী প্রভৃতি নদী এই অঞ্চল দিয়ে
প্রবাহিত হয়েছে।
বুন্দেলখণ্ড ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল (বিন্ধ্য অঞ্চল)
পাহাড়ি ও শুষ্ক এলাকা
- বিন্ধ্য পর্বতমালার অংশ এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। এখানে কয়লা, চুনাপাথর
পাওয়া যায়।
উত্তর প্রদেশের নদী: গঙ্গা, যমুনা, ঘাঘরা, গোমতী, রামগঙ্গা, শারদা, রাপ্তি ইত্যাদি।
উত্তর প্রদেশের ইতিহাস:
- খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০-৫০০ অব্দের ভিতরে আর্যরা গাঙ্গেয় উপত্যকায় বসতি স্থাপন করে।
এই সময় মহাজনপদ ছিল- কুরু, পঞ্চাল, কোশল (অযোধ্যা), কাশী (বারাণসী), রামায়ণের কোশল রাজ্য (অযোধ্যা)।
- খ্রিষ্টপূর্ব ৬ষ্ঠ-৪র্থ শতাব্দীতে গৌতম বুদ্ধের জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটান কুশীনগর, শ্রাবস্তী, সাঁকাস্য, কৌশাম্বীতে।
জৈন ধর্মের প্রবক্তা মহাবীর স্বামীর জন্ম ও মৃত্যু উত্তর প্রদেশের বাইরে হলেও এখানে জৈনধর্ম বিস্তার লাভ করেমৌর্য-
- খ্রিষ্টপূর্বাব্দ ৩২২ থেকে ৩২০ খ্রিষ্টাব্দে অব্দে স্থাপিত হয়েছিল- সম্রাট অশোকের স্তম্ভ ও শিলালিপি কুষাণ সম্রাট কনিষ্কের রাজধানী মথুরায়
প্রতিষ্ঠিত হয়
- ৩২০-৫৫০ খ্রিষ্টাব্দ (গুপ্ত সাম্রাজ্য)। সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত দ্বিতীয় (বিক্রমাদিত্য), সমুদ্রগুপ্ত, কালিদাস, আর্যভট্ট
অঞ্চলেরর সাথে যুক্ত ছিল।
- ৬৪৭-১২০৬ খ্রিষ্টাব্দ। হর্ষবর্ধনের রাজধানী কনৌজ স্থাপিত হয়। গুর্জর-প্রতিহার, রাষ্ট্রকূট, পালদের মধ্যে ত্রিশক্তি যুদ্ধ
হয় এই সময় কনৌজ ছিল উত্তর ভারতের রাজনৈতিক কেন্দ্রদিল্লি
- ১২০৬-১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দ (সালতানাত)। জৌনপুর শরকী সালতানাত (১৩৯৪-১৪৭৯)। এইস
সময় আতালা মসজিদ, জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। লোদী বংশের শাসনাধীন ছিল।
- ১৫২৬-১৭৬১ খ্রিষ্টাব্দ। শাসনমুঘল যুগ। সম্রাট আকবরের রাজধানী আগ্রা ও ফতেহপুর সিক্রি।
- ১৬৩২-৫৩ খ্রিষ্টাব্দ। সম্রাট শাহজাহান তাজমহল নির্মাণ করেন। আওয়াধ (লখনউ) মুঘল-পরবর্তী স্বাধীন নবাব রাজ্যে পরিণত হয়।
- (১৭২২-১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দ। আওয়াধ নবাবি রাজত্ব সাদাত খান বুরহানুল মুলক প্রতিষ্ঠা করেন। শুজাউদ্দৌলা, আসফউদ্দৌলা, ওয়াজিদ আলী শাহ
রাজাত্ব করেন। এই সময় লখনউ হয়ে ওঠে শিয়া সংস্কৃতি, ইমামবাড়া, চিকনকাড়ি, কথক নৃত্যের কেন্দ্র
- ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামঢেএর সূত্রপাত হয়েছিল। প্রাথমিক
পর্যায়ে মঙ্গল পাণ্ডে ব্যারাকপুরে এই সংগ্রামের সূচনা ঘটিয়েছিল। পরে মিরাটে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। লখনউ অবরোধের
বিশেসষভাবে জড়িত ছিলেন- বেগম হজরত মহল, কানপুর (নানা সাহেব, তাঁত্যা টোপে), ঝাঁসি (রানী লক্ষ্মীবাঈ), প্রয়াগরাজ
- ব্রিটিশ শাসন (১৮৫৮-১৯৪৭)।
- ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে নর্থ-ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সেস ও আওয়াধ নিয়ে তৈরি হয় যুক্ত প্রদেশ।
- ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে নাম হয় '