তুরস্কের
আনাতোলিয়া'র
দক্ষিণাঞ্চলের প্রাচীন বসতি । প্রায়
৮৪০০ থেকে ৮১ ০০ খ্রিষ্টাপূর্বাব্দের ভিতরে
এই বসতি গড়ে উঠেছিল। এই অঞ্চলটি
বর্তমান তুরস্কের সানলিউর্ফা প্রদেশে অবস্থিত। ১৯৮৩-১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হারাল্ড হাউপটম্যানের নেতৃত্বে খননকার্য
পরিচালিত হয়। এই সূত্রে এই প্রাচীন বসতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বর্তমানে আতাতুর্ক বাঁধের কারণে ইউফ্রেটিস নদীতে
এর অধিকাংশ অঞ্চল নিমজ্জিত হয়ে গেছে।
এই বসতিকে বৃহত্তর প্রাচীন
মেসোপটেমিয়া 'র
অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে এই অঞ্চলটি কিছু প্রাচীন মন্দির ও ভাস্কর্যের
জন্য বিশেষভাবে আলোচিত হয়ে থাকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪৯০ মিটার উঁচুতে টাউরুস
পর্বতমালার পাদদেশে
ইউফ্রেটিস
(ফোরাত) নদীর উপনদী কান্তারা'র তীরে এই বসতি গড়ে উঠেছিল।
বাসস্থান:
ধারণা করা হয়, ৮৪০০ থেকে ৮১ ০০
খ্রিষ্টাপূর্বাব্দের ভিতর ে এই অঞ্চলে ইউরেশিয়া অঞ্চলের মানুষ কাদামটি দিয়ে ইট তৈরি করা শিখেছিল। এই ইট এরা বাড়ির
দেয়াল তৈরির কাজে ব্যবহার করতো। তবে মাটির পাত্র তৈরি করার কৌশল তখনও এরা আয়ত্ত করতে
পারে নি। বাড়িগুলির মেঝের নিচে প্রাণলী ছিল। এই প্রণালী জল নিষ্কাশনের জন্য বা
গৃহস্থালী কাজের জন্য ব্যবহৃত হতো। এখানে একটি বড় পাথুরে বাড়ি পাওয়া গেছে। এই
বাড়ির মেঝে চুনের মর্টার দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এর দেয়ালগুলি পাথরের।
নেভাল চোরির ভাস্কর্যসমূহ
নেভাল চোরির ভাস্কর্যের নমুনা তুরস্কের শানলিউরফা জাদুঘে
রক্ষিত আছে। নিচে এর একটি তালিকা দেওয়া হলো।
- জীবন্ত-আকৃতির
মানুষ। প্রায় ২.৫ মিটারখাড়া মানুষের শরীর, মাথায় একটি পাখি বসে আছে, হাতে সাপ (?) ধরা, লিঙ্গ দেখা যায়
না। তাই কেউ কেউ মনে করেন এটা মহিলা।
- টি- আকৃতির স্তম্ভ। প্রায় ২ মিটার
উচ্চ। এতে দুটো মানুষ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, হাত-পা খোদাই করা, কোমরে বেল্ট, চুল বা সাপের ঝুঁটি:
- মাথায় সাপ-বিনুনি যুক্ত মানুষের মূর্তি।
উচ্চতা প্রায় প্রায় ১.২ মিটার। মাথার পিছনে সাপের মতো বিনুনি বা চুলের ঝুঁটি, খালি শরীর, হাত বুকের ওপর
- শকুন ও মানুষের সম্মিলিত ভাস্কর্য।
উচ্চতা প্রায় ৮০–৯০ সেমি। একজন মানুষের কাঁধে শকুন বসে আছে, লিঙ্গ দেখা যায় মৃত্যু-আত্মা-যাত্রার প্রতীক
- টোটেম স্তম্ভ:
উচ্চরা প্রায় ২ মিটার। একই স্তম্ভে একের ওপর এক মানুষ-পাখি-সাপ-শিয়ালের মুখ খোদাই করা। বিশ্বের প্রাচীনতম টোটেম
স্তম্ভ।
- ছোট ছোট মানুষ ও প্রাণীর মূর্তি।
উচ্চতা ২০–৫০ সেমি। অনেকগুলো ছোট মানুষ, পাখি, সাপ, শিয়ালের মূর্তি। কাল্ট বিল্ডিংয়ের ভিতর পাওয়া গেছে
- প্লাস্টারে তৈরি মানুষের খুলি। জীবন্ত আকারমৃত মানুষের খুলির ওপর চুনের প্লাস্টার দিয়ে মুখ তৈরি করা হয়েছে। পূর্বপুরুষ-পূজার প্রমাণ
জীবিকা: এরা নিম্ন পর্যায়ের কৃষিকাজ শুরু করেছিল। কৃষির পাশাপাশি এরা বন্য প্রাণী
শিকার করতো। এরা মৃতব্যক্তিদের কবর দিত। এর জন্য তাদের কোনো পৃথক কবরস্থান ছিল না।
এরা সাধারণ বাসগৃহের ভূমির গভীরে মৃতদেহ কবর দিত। এদের জীবিকার প্রধান অংশ ছিল
কৃষিকাজ। এদের জীবিকার দ্বিতীয় প্রধান অংশ ছিল শিকার ।
শিকারের তালিকায় ছিল- বন্য শুয়োর, হরিণ, গেজেল ইত্যাদি।
কৃষির চেয়ে কম।
ধর্ম:
শামানিক ধর্ম
সূত্র: