বসন্ত
উত্তর ভারতীয় সঙ্গীতশাস্ত্রে বর্ণিত পূরবী ঠাটের অন্তর্গত একটি রাগ। এটি একটি গম্ভীর প্রকৃতির রাগ। মধ্য ও তার সপ্তকে এই রাগের বিস্তার ঘটে। তবে মধ্য সপ্তকে ষড়্‌জ সামান্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু তার সপ্তকে র্স বেশি ব্যবহৃত হয়। আরোহে ঋষভ কম ব্যবহৃত হয়। বসন্ত ঋতুর রাগ হিসাবে, এই রাগ বসন্তকালের (ফাল্গুন-চৈত্র) যে কোনো সময় গাওয়া হয়ে থাকে। অন্য ঋতুতে এই রাগ রাত্রি শেষ প্রহরে পরিবেশনের নির্দেশ রয়েছে। অনেকে একে প্রাতঃকালীন সন্ধিপ্রকাশ রাগ হিসেবে গেয়ে থাকেন। এই রাগের মুখ্য বিষয় বসন্ত ঋতু, রসের বিচারে শৃঙ্গার। অনেক সময় বীর রসের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

এই রাগে শ্রী'র প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে শ্রী রাগের ন্ ঋ স এর র্ঋ ন দ প  সুরশৈলী এই রাগে প্রয়োগ করা হয়। তবে এই রাগ ঋষভের ব্যবহার শ্রী'র রাগের মতো দীর্ঘ নয়। প্রাচীন রাগ শ্রেণিকরণে ভরত মতে- বসন্ত ছিল শ্রী রাগের রাগিণী। তখন এর নাম ছিল বাসন্তী। এই সূত্রে ধারণা করা হয়, শ্রী'র লাস্যময়ী রূপ থেকে বাসন্তী রাগিণীর উৎপত্তি হয়েছিল। বর্তমানের ঠাট পদ্ধতিতে বসন্ত রাগ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

প্রাচীনকালে রাগের শ্রেণিকরণে বসন্তকে পুরুষবাচক রাগ ধরা হতো। ব্রহ্ম ও কল্পিনাথ মতে বসন্তের যে শ্রেণিকাঠামো পাওয়া যায়, তা হলো-

বর্তমানে এই রাগকে কেউ কেউ মারবা ঠাটের অন্তর্গত রাগ হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। পূর্বী ঠাটের বসন্তে কেউ কেউ উভয় মধ্যম ব্যবহার করে থাকেন। ভাতখণ্ডে উভয় মধ্যমের ব্যবহার দেখিয়েছেন। তাঁর মতে এতে কোমল গান্ধারও ব্যবহার করা যায়।

আরোহণ: স গ, হ্ম দ র্ঋ র্স
অবরোহণ
: 
র্ঋ ন দ প, হ্ম গ, হ্ম দ হ্ম গ ঋ স

ঠাট: পূরবী
জাতি:  ঔড়ব-সম্পূর্ণ।
বাদীস্বর: র্স
সমবাদী স্বর
:
সময়: রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর। বসন্ত ঋতুর যে কোনো সময়।

পকড়: হ্ম দ র্ঋ র্স, র্স র্ঋ দ প, হ্ম দ ন হ্ম গ


তথ্যসূত্র: