গৌড়
মল্লার
উত্তর ভারতীয়
সঙ্গীত পদ্ধতিতে রাগ বিশেষ।
এই রাগের চলনের পার্থক্যের
বিচারে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। এই বিচারে এই ভাগ দুটিকে ৩টি ঠাটের অন্তর্ভুক্ত করা
হয়ে থাকে। ঠাটের বিচারে ভাগ ৩টিকে বলা হয়–
খাম্বাজ
ঠাটের গৌড় মল্লার
কাফি
ঠাটের গৌড় মল্লার
বিলাবল ঠাটের গৌড় মল্লার
এর ভিতরে খেয়ালাঙ্গের গানে
খাম্বাজ
ঠাটের গৌড় মল্লার বেশি গাওয়া হয়। পক্ষান্তরে ধ্রুপদাঙ্গের গানে
কাফি ঠাটের গৌড় মল্লার ব্যবহৃত হয়।
বিলাবল
ঠাটের গৌড় মল্লার অপ্রচলিত।
খাম্বাজ ঠাটের গৌড় মল্লার প্রকৃতি শান্ত।
আরোহণ ও অবরোহণের বিচারে এই রাগ দুই প্রকারের হতে পারে। যেমন–
- প্রথম প্রকার
আরোহণ: স
র গ ম, প ধ ন র্স
অবরোহণ
: র্স ধ ণ প,
ম, গ র গ, র স
ঠাট
খাম্বাজ
জাতি: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ।
বাদীস্বর
: মধ্যম
সমবাদী স্বর: ষড়্জ
অঙ্গ:
পূর্বাঙ্গ
সময়:
রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর।
- দ্বিতীয় প্রকার
আরোহণ:
র গ র গ র
স, র প, ম প, ধ ন র্স
অবরোহণ: র্স ধ ণ প,
ম গ ম, র স
ঠাট
খাম্বাজ
জাতি: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ।
বাদীস্বর: মধ্যম
সমবাদী স্বর
: ষড়্জ
অঙ্গ
: পূর্বাঙ্গ
সময়:রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর।
পকড় : র গ র ম গ র
স, প ম প ধ র্স, ধ প ম এই রাগে নিষাদের ব্যবহার খুব অল্প, কিন্তু
গান্ধারের প্রচুর ব্যবহার করা হয়। এর গতি বক্র। গৌড় এবং মল্লার রাগের সংমিশ্রণে এই রাগের সৃষ্টি হয়েছে। এই রাগের পূর্বাঙ্গের গৌড় রাগের র গ র ম প এবং মল্লার অঙ্গের র প ম প ধ র্স ধ প ম সুরশৈলী পাওয়া যায়। উত্তরাঙ্গে মল্লারের র প ম প ধ র্স ধ প ম- ব্যবহৃত হয়। মূলত গৌড় রাগের সাথে মরপ যুক্ত হয়ে গৌড় রাগ হয়ে যায়, গৌড় মল্লার। উভয় রাগের বাদী মধ্যম হওয়ায়, কোনো বিবাদ ঘটে না। এই রাগের ঋষভের অল্প এবং বক্রভাবে ব্যবৃত হয়।
কাফি ঠাটের গৌড় মল্লার
প্রকৃতি শান্ত। আরোহণ
ও অবরোহণের বিচারে এই রাগ দুই প্রকারের হতে পারে। যেমন-
- প্রথম প্রকার
আরোহণ
: স
র জ্ঞ ম, প ধ ন র্স
অবরোহণ
: র্স ধ ণ প,
ম, জ্ঞ র গ, র স
ঠাট
কাফি
জাতি
: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ।
বাদীস্বর
: মধ্যম
সমবাদী স্বর
: ষড়্জ
অঙ্গ
: পূর্বাঙ্গ
সময়
:
রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর, বর্ষাকালে সকল সময়ে গাওয়া হয়
- দ্বিতীয়
প্রকার
আরোহণ:
র জ্ঞ ম, প ধ ন র্স
অবরোহণ
: র্স ধ ণ প,
ম জ্ঞ, ম র স
ঠাট
কাফি
জাতি: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ
বাদীস্বর
: মধ্যম
সমবাদী স্বর
: ষড়্জ
অঙ্গ
:
পূর্বাঙ্গ
সময়
:
রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর,
বর্ষাকালে সকল সময়ে গাওয়া হয়।
পকড় : ণ প ম প জ্ঞ ম
র স
এই রাগে নিষাদের ব্যবহার খুব অল্প, কিন্তু কোমল গান্ধারের প্রচুর ব্যবহার করা
হয়। এর গতি বক্র। অনেক সময় এই রাগে অনেকে শুদ্ধ গান্ধার
ব্যবহার করে থাকেন। সেনী ঘরানায় এই রাগের শুদ্ধ গান্ধার ব্যবহার করা হয় না।
বিলাবল ঠাটের গৌড় মল্লার
এই রাগেটি অপ্রচলিত। বলা হয়ে থাকে, গৌড়, মল্লার ও বিলাবল রাগের মিশ্রণে এই
রাগটি সৃষ্টি হয়েছে। পণ্ডিত ভাতখণ্ডের ক্রমিক পুস্তকমালিকা
গ্রন্থের চতুর্থ খণ্ডে এই রাগের বন্দিশ পাওয়া যায়।
তথ্যসূত্র:
- মগনগীত ও তানমঞ্জরী।
তৃতীয় খণ্ড।
চিন্ময় লাহিড়ী। চণ্ডীতলা লেন। কলকাতা। ২২ মে ১৯৯৭।২৬-৩৩
- মারিফুন্নাগমাত। রাজা নওয়াব আলী খান। অনুবাদ: মকসুদুর রহমান হিলালী। বাংলা
একাডেমী, ঢাকা। জুলাই ১৯৬৭। পৃষ্ঠা: ১৩৪-১৩৫।
- বাংলা খেয়াল। আজাদ রহমান। বাংলা একাডেমী, ঢাকা।
ফেব্রুয়ারি। ১৯৯৯। পৃষ্ঠা: ৭১-৭২।
- রাগ-নির্ণয়। রবীন্দ্রলাল রায়। ডিএম লাইব্রেরী। কলকাতা।
পৃষ্ঠা: ৭৬-৭৯।
- রাগ মঞ্জুষা। সুরেন্দ্র নারায়ণ সদাস। অলকা দাস / মানস কুমার দাস। সঙ্গীত শিক্ষার্থী সম্মেলন,৭০৫ তালপুকুর পাড় (পশ্চিম) কুমিল্লা,১১ মাঘ ১৪২৯ ,২৬ জানুয়ারি ২০২৩। পৃষ্ঠা: ৩১১
-
সঙ্গীত পরিচিতি (উত্তরভাগ)। শ্রীনীলরতন বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫ই ভাদ্র' '৮০। ২১
আগষ্ট '৭৩। পৃষ্ঠা: ৯০-৯৩
-
সঙ্গীত শাস্ত্র। তৃতীয় খণ্ড। শ্রীইন্দু ভূষণ রায়।
পৃষ্ঠা: ১৬০
-
হিন্দুস্থানী সংগীত পদ্ধতি (নবম খণ্ড)। বঙ্গানুবাদ: সঙ্গীতা
মিত্র। দীপায়ন। কলকাতা। অক্টোবর ২০০৫। পৃষ্ঠা: ২-৩৮