(সাংখ্যকারিকা–৭০) কপিল মুনি দয়াপরবশ হয়ে এই পবিত্র ও সর্বোৎকৃষ্ট (জ্ঞান) আসুরিকে প্রদান করেন, আসুরিও পঞ্চশিখকে (এই জ্ঞান দান করেন) এবং তার (অর্থাৎ পঞ্চশিখ) দ্বারা সাংখ্যশাস্ত্র বহুভাবে শিষ্য মধ্যে প্রচার হয়েছিলো।এতৎ পবিত্রমগ্র্যাং মুনিরাসুরয়েহনুম্পয়া প্রদদৌ।
আসুরিরপি পঞ্চশিখায় তে চ বহুধা কৃতং তন্ত্রম্ ।।
সাংখ্যদর্শনের রচনাকাল নিয়ে মতভেদ আছে। তবে এই দর্শনের উল্লেখ পাওয়া যায় শ্রুতি,
স্মৃতি, পুরাণ,
মহাভারত ইত্যাদিতে।
মহাভারতের শান্তিপর্বের ৩০২ অধ্যায়ে
'সাঙ্খ্যমতের সারসঙ্কলন' পাওয়া যায়। মহাভারতের রচনা কাল ধরা হয় প্রায় ৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
এই হিসেবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায় সাংখ্যদর্শন রচিত হতে পারে খ্রিষ্ট-পূর্ব ৫০০-৪০০ অব্দের ভিতরে। অনেকে মনে করেন,
সাংখ্য–সম্প্রদায়ের প্রবর্তক কপিলের নাম থেকেই বুদ্ধের জন্মস্থান কপিলাবস্তুর নামকরণ হয়েছিলো। গৌতম বুদ্ধের জন্মকাল ধরা হয় ৫৬৭-৫৬৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
মৃত্যু ৪৮৭-৪৮৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। এই বিচারে ধারণা করা যেতে পারে, এই দর্শনের রচনাকাল প্রায় ৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে।
তবে ঈশ্বরকৃষ্ণ 'সাংখ্যকারিকা' রচনা করেছিলেন আরও পরে, হয়তো খ্রিষ্টীয় তৃতীয় থেকে পঞ্চম শতাব্দির মধ্যবর্তী সময়ে।
প্রাচীন নানা গ্রন্থে সাংখ্যদর্শনের বিষয়ে উল্লেখ থাকলেও আদি সাংখ্যদর্শনের নমুনা
পাওয়া যায় নি। বর্তমানে সর্বপ্রাচীন সংখ্যা নমুনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়-ঈশ্বরকৃষ্ণ
'সাংখ্যকারিকা'
সাংখ্যের নামকরণ
সাংখ্য মতাদর্শীদের মতে, তত্ত্বের সংখ্যা পঞ্চবিংশতি বা পঁচিশ। এই পঁচিশটি তত্ত্বের যথার্থ জ্ঞানের মাধ্যমে জীবের মুক্তি বা মোক্ষলাভ হয়।
সংখ্যাভিত্তিক এই দর্শন বলে এই দর্শনের নামকরণ করা হয়েছে সাংখ্যদর্শন। সাংখ্যদর্শনে প্রতিপাদ্য বিষয়কে ‘তত্ত্ব’ নামে অভিহিত করা হয়।
এর মূলে রয়েছে নিত্য প্রকৃতি ও নিত্য পুরুষ নামক দুটি তত্ত্ব। পুরুষতত্ত্ব নির্গুণ, চেতন, বহু ও বিভু। অর্থে পুরুষ সর্বব্যাপী বিদ্যামান।
প্রকৃতি অচেতন এবং পরিণাম-স্বভাবধর্মী। পুরুষ ও প্রকৃতির সম্মেলনে সৃষ্টি হয়। 'সত্ত্ব, রজঃ ও তম' এই তিনটি গুণের অধিকারিণী হলো প্রকৃতি।
সত্ত্বের ধর্ম জ্ঞান ও সুখাদি, আর রজের ধর্ম দুঃখ ও প্রবৃত্তি। এবং তমের ধর্ম হলো মোহ ও আবরণ।
এই প্রকৃতি ও পুরুষের সংযোগে
সৃষ্টি হয় তেইশ
প্রকার তত্ত্ব। এগুলো হলো-
সাংখ্যকারিকার তত্ত্বসমূহের সূচি
সূত্র: