প্রাগৈতিহাসিক ভাষা
প্রাগ্ ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবার
ভাষা পরিবার : ইন্দো-ইউরোপিয়ান
ভাষা উপ-পরিবার :   ইন্দো-ইরানিয়া ভাষা
শাখা : ভারতীয় আর্য ভাষা

পূর্ব-মধ্যাঞ্চলীয় ভারতীয় আর্য ভাষা
ইংরেজি :
Eastern Indo-Aryan languages

মানুষের কথিত ভাষার ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষা পরিবারের অন্তর্গত
ইন্দো-ইরানিয়া ভাষার পূর্বাঞ্চলীয় উপ-শাখা বিশেষ। ভারতবর্ষের পূর্বাঞ্চলের ভাষাসমূহ এই উপ-শাখার অন্তর্ভুক্ত।

 খ্রিষ্ট-পূর্ব ১৫০০ অব্দের দিকে লোকেরা ইরান থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল। এদেরভ ভাষাকে বলা হয়ে থাকে  ইন্দো-ইরানিয়া ভাষা হিসেবে। খ্রিষ্ট-পূর্ব ১০০০ বৎসরের ভিতরে  ইন্দো-ইরানিয়া ভাষার পরিবর্তন ঘটে। এই সময়ের ভিতরে এই পরিবর্তিত ভাষার নমুনা পাওয়া যায় ঋগ্বেদ। ধারণা করা হয়- ঋগ্বেদের শ্লোকগুলো রচিত হয়েছিল খ্রিষ্ট-পূর্ব ১২০০-১০০০ বৎসরের ভিতরে। বিভিন্ন ঋষিদের রচিত বিভিন্ন শ্লোকগুলো একত্রিত করে যে সংকলিত গ্রন্থ প্রস্তুত করা হয়, তাই ঋগ্বেদ নামে পরিচিতি লাভ করে। এরপর লেখা হয় অন্য তিনটি বেদ এবং এর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য গ্রন্থ। গোড়ার দিকে সকল বেদ সংকলিত হয়ে একটি বেদ-আকারে ছিল। বেদের এই ভাষাকে বলা হয় বৈদিক ভাষা। মূলত এই ভাষার ভিতর দিয়েই সূত্রপাত ঘটে ভারতীয় আর্য ভাষা'র।

মূলত বৈদিক এবং সংস্কৃত সংস্কৃত উভয়ই হলো সাহিত্যের ভাষা। ভারতীয় আর্য ভাষার এই রূপ ছিল কৃত্রিম। সাহিত্যের দ্বারা চর্চিত এবং ব্যাকরণের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত প্রমিত সংস্কৃত ভাষার ভারতের আর্য অধ্যুষিত মধ্যদেশের ভাষা। যার সাথে স্থানীয় লোকের কথ্য ভাষার প্রভেদ ছিল। এই দূরত্ব ব্যাপক ছিল মধ্যদেশ থেকে দূরবর্তী অঞ্চলগুলোতে। প্রমিত ভাষা ব্যাকরণের সুশৃঙখল বিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। শিক্ষিত মহলে তার কদর ছিল বটে, কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে অনেকটাই ভীতিপ্রদ ছিল। ফলে কাল-পরিক্রময়া  সংস্কৃত প্রমিত ভাষা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। ভাষা বিজ্ঞানীরা লোকমুখে প্রচলিত ভাষার নামকরণ করেছেন প্রাকৃত ভাষা। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাকৃত ভাষাগুলো নানাভাবে বিকশিত হয়ে নানা ভাষার জন্ম দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত প্রমিত সংস্কৃত ভাষা লোকমুখে অপ্রচলিত হওয়ার কারণে এক সময় প্রায় মৃতভাষায় পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে এবং নেপালে কিছু অংশে সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে এমন লোক পাওয়া যায়। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের জনগণনা অনুসারে এই ভাষায় কথা বলে এমন লোকের সংখ্যা প্রায় ১৪০০০। তবে এরা যে ভাষায় কথা বলে, তা আধুনিক কথ্য সংস্কৃতের একটি বিশেষ রূপে।

পাণিনির পূর্বে বা সমসাময়িককালে সংস্কৃত ভাষার তিনটি কথ্য রূপ গড়ে উঠিছল। এই তিনটি রূপ হলো

সুনীতি চট্টোপাধ্যায়ের মতে ভারতের মহারাষ্ট্র অঞ্চলে সংস্কৃত ভাষার অপর একটি রূপ ছিল বলে অনুমান করেছেন। তিনি এর নাম করেছেন দাক্ষিণ্যাত্য। ভারতের আঞ্চলিকতার বিচারে বর্তমানে ভারতীয় আর্য ভাষাকে ৪টি ভাগে ভাগ করা হয়। এই চারটি ভাগ হলো

আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানে ইন্দো-ইরানিয়ান ভাষা উপ-পরিবারের ভাষা সংখ্যা নির্ধারণ করেছেন মোট ২২৫টি। আঞ্চলিকতার বিচারে এই ২২৫টি ভাষাকে ৯টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এই ভাগগুলো হলো

বর্তমানে পূর্ব-মধ্যাঞ্চলীয় প্রাকৃত ভাষার অধীনে রয়েছে ৫টি ভাষা। এর ভিতরে রয়েছে আওধি, ছত্রিশগড়ি, হিন্দি, কামার ও সুরগুজ্জি। কোনো কোনো মতে বাংলাকেও এই অঞ্চলের ভাষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু


সূত্র :
ভাষা প্রকাশ বাঙ্গালা ব্যাকরণ। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত।  ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
সাধারণ ভাষা বিজ্ঞান ও বাংলা ভাষা। ডঃ রামেশ্বর শ।
http://en.wikipedia.org/wiki/Indo-Aryan_languages
http://www.ethnologue.com/subgroups/eastern-zone