প্রাগৈতিহাসিক
ভাষা |
মুণ্ডারি
ইংরেজি :
Mundari।
ভারত ও বাংলাদেশে বসবাসকারী আদিবাসী বিশেষ।
প্রায় ৬৫ হাজার বৎসর আগে,
আফ্রিকা থেকে নরগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ ধীরে ধীরে অন্যান্য
মহাদেশের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল। এই দলটি
প্রোটো-অস্ট্রালয়েড নামে বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করেছেন। এই দলের একটি বড় অংশ
ভারতবর্ষের প্রবেশ করেছিল। ওরাঁও সম্প্রদায় আদি
প্রোটো-অস্ট্রালয়েড মানব গোষ্ঠীরই একটি ক্ষুদ্র অংশ। এদের গায়ের রং কালো, নাক
অনুচ্চ, চুল কালো
ও কুঞ্চিত, উচ্চতা মাঝারি।
প্রোটো-অস্ট্রালয়েড মানব হিসেবে এদের সাথে বিশেষ নৃতাত্ত্বিক ঘনিষ্ট সম্পর্ক
রয়েছে সাঁওতাল, ও মালপাহাড়ি সাথে।
অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষা পরিবার-এর
একটি অন্যতম ভাষা উপ-পরিবার হলো‒
মুণ্ডা
। এই ভাষা উপ-পরিবারে একটি শাখা হলো
উত্তর মুণ্ডা। এই
ভাষা উপ-শাখা খেওয়ারি-তে
রয়েছে মোট ১৫টি ভাষা। তার ৮টি ভাষা তৈরি হয়েছে মুণ্ডারি ভাষাগোষ্ঠী।
সাঁওতালি
সাঁওতালিমুণ্ডারি ভাষাগোষ্ঠীর
ভাষাসমূহ
প্রাগৈতিহাসিক
ভাষা |
মুণ্ডারি ভাষা
মুণ্ডারি ভাষার নামানুসারে এই ভাষাগোষ্ঠীর নামকরণ করা হয়েছে। এই
ভাষার অন্যান্য নাম কোল্হ, হোরো, মোন্ডারি, মুনারি।
এই ভাষার লোকেরা বাস করে ভারতের ঝাড়খণ্ডের দক্ষিণ এবং পশ্চিম রাঁচি, উড়িষ্যা,
মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, হিমাচল প্রদেশ, আসাম, ত্রিপুরা, আন্দামান-নিকোবর
দ্বীপপুঞ্জে। ভারতের বাইরে এদের কিছু পাওয়া যায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে এবং নেপালে।
ভারতের ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে জনগণনায় এদের সংখ্যা দেখানো হয়েছিল প্রায় ১১,২০,২৮০ লক্ষ।
নৃততাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের
বিচারে এরা
নেগ্রিটো,
প্রোটো-অস্ট্রালয়েডদের উত্তরসূরী। বাংলদেশ
এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে এরাই প্রকৃত আদিবাসী। এরপর এদের সাথে রক্তের এবং ভাষার
সংমিশ্রণ ঘটেছিল দ্রাবিড়দের সাথে। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত যে সকল শব্দকে সাধারণভাবে
দেশী বলা হয়, তার অনেকাংশ এসেছে এইও ভাষা থেকে। যেমন‒
মুণ্ডারি
চাউলি>বাংলা চাউল
মুণ্ডারি
চুলা>বাংলা চুলা
মুণ্ডারি ডেলকা>বাংলা ডেলা
মুণ্ডারি ঢাল>বাংলা ঢাল
মুণ্ডারি ডোঙ্গা>বাংলা ডোঙ্গা
মুণ্ডারি হাঁ>বাংলা হাঁ
মুণ্ডারি হুড়কা>বাংলা হুড়কা
মুণ্ডারি খচুর>বাংলা খচ্চর
মুণ্ডারি খঁটু>বাংলা খুঁটি
মুণ্ডারি মোটা>বাংলা
মোট
মুণ্ডারি মোটা>বাংলা মোটা
মুণ্ডারী লেঙ্গা>বাংলা নেঙ্গা (বাঁ)
মুণ্ডারি রাণ্ডি>বাংলা রাঁড় (বিধবা)
মুণ্ডারি লড়াই>বাংলা লড়াই
মুণ্ডারি টোঙ্গা>বাংলা ঠোঙ্গা
মুণ্ডারি তোটড়া>বাংলা তোতলা
মুণ্ডারি কুড়ি>বাংলা কুড়ি
সূত্র :
বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত। ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। মাওলা ব্রাদার্স। জুলাই
১৯৯৮
http://en.wikipedia.org/wiki/Austroasiatic_languages
http://www.ethnologue.com/subgroups/north-munda