প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক কোষ
Prokaryotic
cell
জীবদেহের এক প্রকার কোষ। গ্রিক শব্দ Pro
(আদি বা পূর্ব) ও karyotic
(নিউক্লিয়াস বা প্রাণকেন্দ্র) -এর সমন্বয়ে এই শব্দটির সৃষ্টি হয়েছে—
Prokaryotic cell
। এই জাতীয় কোষে
কোনো সুষ্পষ্ট প্রাণকেন্দ্র নেই। প্রাণকেন্দ্র যুক্ত জীবকোষের আগে এই জাতীয়
জীবকোষের উদ্ভব হয়েছিল। অধিকাংশ প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক কোষযুক্ত জীবদেহ একটি মাত্র
কোষ দ্বারা গঠিত।
এই জাতীয় কোষের
বাইরের আবরণে থাকে
পলিস্যাকারাইড
কার্বোহাইড্রেড এবং
প্রোটিনের
সমন্বয়ে সৃষ্ট কোষীয় পর্দা
(Plasma membren)।
আর এর ভিতরে অর্ধ-তরল সজীব সক্রিয় উপাদানগুলোকে বলা হয়
প্রোটোপ্লাজম।
মেসোআর্কিয়ান যুগের
৩০০ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের জীবাশ্মের সূত্রে জানা যায়-
অবাতজীবী প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক কোষযুক্ত
(Anaeorbic
prokaryotes)
জীবের আবির্ভাব ঘটেছিল। এরাই ছিল
এই
অবাতজীবী
ব্যাক্টেরিয়ার
এবং
ভাইরাসের
পূর্বপুরুষ।
অবাতজীবী
ব্যাক্টেরিয়ার
আদি পৃথিবীর কর্দমাক্ত পরিবেশে এরা সবুজ এবং
লোহিতনীল বর্ণের গন্ধক অঞ্চলে বসবাস করতো এবং
সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া হাইড্রোজেন সালফাইড ব্যবহার করতো। ফলে অক্সিজেনের পরিবর্তে এরা বাতাসে গন্ধক পরিত্যাগ করতো। এই কারণে এদের শরীরের
চিনি তৈরি হতো না। কালক্রমে ব্যাক্টেরিয়া ক্রমবিবর্তনের
ধারায় জটিলতর হয়ে পড়েছিল। কিন্তু
ভাইরাস দৈহিক বিন্যাসেই সরল দশায় রয়ে গেছে।
এই কোষে সুসংগঠিত ডিএনএ, মাইটোকণ্ড্রিয়া, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, লাইসোজোম, গলজি বস্তু অনুপস্থিত। সাধারণত এই কোষের আকার এক থেকে দশ মাইক্রোমিটার (µm) এর মধ্যে হয়ে থাকে। সাধারণত আকৃতির বিচারে এই কোষকে ৩টি ভাগে ভাগ করা হয়।
কোন কোন প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক কোষ সালোকসংশ্লেষণের উপযোগী ক্লোরোফিল বহন করে। যেমন সায়ানোব্যাক্টেরিয়া। এছাড়াও অনেক কোষে বহিঃদেহাবরণে সংযুক্ত অবস্থায় চলনের জন্য চাবুকের ন্যায় ফ্লাজেলা (flagella) দেখতে পাওয়া যায়। আবার কোন কোন কোষে বহিঃদেহাবরণে লোমের ন্যায় পিলি (pili) দেখতে পাওয়া যায়। এর সাহায্যে এই কোষযুক্ত জীব কোন কিছুর সাথে আবদ্ধ নিজেকে আটকে রাখতে পারে।