রুবিডিয়াম
Rubidium

রুবিডিয়াম একটি ক্ষারধর্মী ধাতু। নরম এবং রুপালী-সাদা বর্ণের। এর প্রতীক
Rb, পারমাণবিক সংখ্যা ৩৭, পারমাণবিক ভর ৮৫.৪৬৭৮। বাতাসে খুব দ্রুত এটি জারণ হয়। প্রকৃতিতে এর দুইটি আইসোটোপ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো-85Rb এর পরিমাণ প্রায় ৭২% এবং এটি স্থায়ী। বাকী আইসোটোপটি,হলো- 87Rb, কিঞ্চিৎ তেজস্ক্রিয় যার অর্ধ-জীবন ৪৯০০ কোটি বছর।

১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে জার্মানির রসায়নবিদ রবার্ট বুনসেন ও গুস্তাভ কির্চকভ রুবিডিয়াম আবিষ্কার করেন। ধাতব রুবিডিয়ামকে সহজে বাষ্পে পরিণত করা যায়।

অতেজস্ক্রিয় ক্ষারধাতুর মধ্যে রুবিডিয়ামের তড়িৎ-ধনাত্মকতায় দ্বিতীয় এবং ৩৯.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস (১০২.৭ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় গলে যায়। অন্যান্য ক্ষার ধাতুর মত রুবিডিয়াম পানির সঙ্গে তীব্রভাবে বিক্রিয়া করে। রুবিডিয়াম পারদের সঙ্গে পারদ-সংকর তৈরি হয়। এছাড়া সোনা, লৌহ, সিজিয়াম, সোডিয়ামপটাশিয়াম সঙ্গে সংকর-ধাতু সৃষ্টি করে ।

পানির মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় পটাশিয়ামসিজিয়ামের সঙ্গে রুবিডিয়ামের বিক্রিয়ায় প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়। বাতাসে এই পদার্টি স্বাভাবিকভাবে জ্বলে উঠে এবং বেগুনি রঙের শিখা সৃষ্টি করে ।  

রুবিডিয়ামের যৌগের মধ্যে সম্ভবত রুবিডিয়াম ক্লোরাইডের
(RbCl) ব্যবহারই সবচেয়ে বেশি। জৈব রসায়নে কোন কোষে  ডিএনএ প্রবৃষ্ট করানো বা জৈব-নির্দেশক হিসাবে এর ব্যবহার দেখা যায়। জীবিত কোষে পটাশিয়ামকে প্রতিস্থাপিত করার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য রুবিডিয়াম যৌগের মধ্যে ক্ষয়কারক রুবিডিয়াম হাইড্র-অক্সাইড (RbOH) বেশিরভাগ রুবিডিয়াম ভিত্তিক রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। রুবিডিয়াম কার্বনেট (Rb2CO3) অপটিক্যাল কাচে, এবং রুবিডিয়াম কপার সালফেট (Rb2SO4-CuSO4-6H2O. ব্যবহৃত হয়। এর আয়নিক কেলাসসমূহের মধ্যে রুবিডিয়াম সিলভার আয়োডাইডের তাপগ্রহীতা কক্ষ তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ।  রুবিডিয়ামের বেশ কয়েকটি অক্সাইড রয়েছে। বাতাসে রেখে দিলে এটি রুবিডয়াম মনোক্সাইডে (Rb2O), Rb6O ও Rb9O2 পরিণত হয়। বাড়তি অক্সিজেন সহযোগে রুবিডিয়ামের সুপার অক্সাইড RbO2 তৈরি হয়। হ্যালোজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে রুবিডিয়াম হ্যালাইড লবণ যথাক্রমে রুবিডিয়াম ফ্লোরাইড, রুবিডিয়াম ক্লোরাইড, রুবিডিয়াম ব্রোমাইড ও রুবিডিয়াম আয়োডাইড সৃষ্টি করে।