সোডিয়াম বানান বিশ্লেষণ: স্+ও+ড্+ই+আ+ম্+অ উচ্চারণ:
nso.ɖi.am
(সো.ডি.আম) শব্দ-উৎস: প্রাচীন
ইংরেজি
caustic soda
(ইংরেজ রসায়নবিদ হাম্ফ্রি ডাভি
কস্টিক সোডা পৃথক করে এই পদার্থটি আবিষ্কার করেন)>
soda>
বাংলা সোডিয়াম পদ:বিশেষ্য
প্রতীক
Na
[গ্রিক
Νάτριο
থেকে এই সঙ্কেতটি গ্রহণ করা হয়েছে]
রাসায়নিক সংকেত
Na2
পারমাণবিক সংখ্যা ১১
পারমাণবিক ভর ২০.১৮৩
গলনাঙ্ক : ৯৭.৭৯৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
স্ফুটনাঙ্ক : ৮৮২.৯৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস
আপেক্ষিক গুরুত্ব ০.৯৭।
অর্থ:
এটি একটি
কঠিনমৌলিক পদার্থ।
রাসায়নিক ধরমের বিচারে
ক্ষারীয় ধাতু।
এটি কঠিন দশায় পাওয়া যায়। এটি তাপ ও বিদ্যুৎ সুপরিবাহী রূপালি সাদা বর্ণের নরম
ধাতু।
এর রাসায়নিক সঙ্কেত Na,
গ্রিক থেকে এই সঙ্কেতটি গ্রহণ করা হয়েছে।
সোডিয়াম মৌলিক অবস্থায় পাওয়া যায়। মূলত বেশকিছু সোডিয়াম ঘটিত যৌগিক পদার্থ
থেকে সোডিয়াম সংগ্রহ করা হয়। প্রকৃতি যে সকল সোডিয়াম যৌগ বেশি পাওয়া যায়, তাহলো- সোডিয়াম ক্লোরাইড
প্রকৃতিতে
(NaCl),
সোডিয়াম কার্বোনেট
(NaCO3),
সোহাগা
(Na2B4O7,10H2O),
উলকজাইট
(NaCaB5O9,
8H2O),
সোডাফেলসপার
(NaAlSi3O8),
চিলিসল্টপিটার
(NaNO3)
।
সোডিয়াম অত্যন্ত সক্রিয় ধাতু। অনার্দ্র বায়ুতে ধাতুটি নিষ্ক্রিয় থাকলেও আর্দ্র
বায়ুতে অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে প্রথমে সোডিয়াম মনোক্সাইড এবং পরে
হাইড্রোক্সাইডে পরিণত হয়। এই কারণে বিশুদ্ধ সোডিয়ামকে কেরোসিন বা পেট্রোলিয়ামে
চুবিয়ে রাখা হয়।
উত্তপ্ত সোডিয়াম বায়ুর অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম পারক্সাইড ও সোডিয়াম
মনোক্সাইড উৎপন্ন করে। বিক্রয়ার সময় সোনালি-হলুদ শিখা দেখা যায়।
হ্যালোজেনের সাথে সোডিয়াম হ্যালাইড উৎপন্ন করে। অনেকক্ষেত্রে সোডিয়াম বিজারক হিসেবে
কাজ করে। যেমন
CO2, NO, N2O,
ALCl3
-এর
সাথে বিক্রিয়া করে যথাক্রমে কার্বন, নাইট্রোজেন, এ্যালমুনিয়াম উৎপন্ন করে।
সোডিয়ামের সবচেয়ে বেশি
ব্যবহৃত হয় খাদ্যলবণ (NaCl)
হিসেবে। তবে বিশুদ্ধ সোডিয়াম ব্যবহৃত হয় সোডিয়াম পারক্সাইড, সোডিয়াম সায়ানাইড,
সোডিয়াম এ্যামালগাম, সোডিয়াম-লেড, সোডিয়াম-পাটাসিয়াম সংকর ধাতু তৈরিতে। এছাড়া
এ্যালুমুনিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, টিন প্রভৃতি ধাতু নিষ্কারণে সোডিয়াম ব্যবহৃত হয়।
সোডাইয়াম বাতি, কৃত্রিম রাবার, সুগন্ধ ও ঔষধে এর ব্যবহার রয়েছে। তাপ পরিবাহক হিসেবে
পারমাণবিক চুল্লিতে সোডিয়াম ব্যবহার করা হয়।
খাদ্যলবণের সূত্রে মানুষ আদিকাল থেকে সোডিয়াম যৌগের সাথে পরিচিত ছিল। মধ্যযুগে সোডিয়ামের কার্বোনেট এবং পটাশিয়াম কার্বোনেট-কে বিজ্ঞান আলকেমিবিদ গেবার ক্ষার হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। কিন্তু এই দুটি ক্ষারের বিশেষত্ব নিরূপণ করেন নি। ১৬৮৩ খ্রিষ্টাব্দে ডাচ বিজ্ঞানী আই বন লক্ষ্য করেন যে, এই দুটি ক্ষার কোনো বিশেষ কাজে ব্যবহার করার পর অধঃক্ষেপ পরে। কিন্তু এই অধঃক্ষেপের কেলাস একই রকম হয় না। এই থেকে তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন যে, এই দুটি ক্ষারের মৌলিক উপাদান একই নয়। ১৭০২ খ্রিষ্টাব্দে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের কেলাস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ১৭০৭ খ্রিষ্টাব্দে ডেভি অনার্দ্র পটাশ গলিয়ে তড়িৎ-বিশ্লেষণকালে দাহ্য পটাশিয়াম শনাক্ত করতে পরেছিলেন। তবে উৎপন্ন পটাশিয়াম উৎপন্ন হওয়ার সাথে সাথে উজ্জ্বল শিখা তৈরি করে জ্বলে গিয়েছিল। প্রায় একই প্রক্রিয়া তিনি সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড নিয়ে পরীক্ষা করে, প্রায় একই ফলাফল পান। পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞানীরা বিশুদ্ধ সোডিয়াম সংগ্রহ করতে সক্ষম হন।